মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তেহরান থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে দিল্লীকে চাপ দিচ্ছে ওয়াশিংটন। ভারতের এমন দ্বিধাগ্রস্ত পরিস্থিতিতে ইরান জানাল, ভারতকে আগের মতোই তেল দিয়ে যেতে তারা তৈরি রয়েছে এবং সেই তেল পাওয়ার জন্য খুব ঘাম ঝরাতে হবে না, তেল মিলবে চটজলদিই। যতটা প্রয়োজন, ততটাই, দাম নিয়েও ভাবতে হবে না ভারতকে।
ভারতে ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি চেগানি মঙ্গলবার দিল্লিতে বলেন, ‘ভারত আমাদের বরাবরের বন্ধু দেশ। ভারতের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কটা ইতিহাসের নিরিখেই অনেক পুরানো। তাই আমাদের বিশ্বাস, অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার ফলে তাতে চিড় ধরবে না। আর তার জন্য ইরানও ভারতকে চটজলদি তেল জুগিয়ে যেতে তৈরি রয়েছে, স্বাভাবিক দর-দামেই। যতটা প্রয়োজন, ততটাই। সেই তেল জোগানোর জন্য দিল্লির সঙ্গে কোনও বিনিময় প্রথাতেও যাবে না তেহরান।’
তেহরানের তেল বন্ধ করানোর জন্য ভারতকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতারও লোভনীয় টোপ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যে সুবিধা ‘ন্যাটো’ জোটের সদস্য দেশগুলি পায়, যে সুবিধা পায় ইসরায়েল ও দক্ষিণ কোরিয়া, ভারতকেও তা দেয়ার জন্য গত সপ্তাহেই একটি বিল পাশ হয়েছে মার্কিন সিনেটে। তবে, ভারত এখনও দ্বিধাগ্রস্ত। গত সপ্তাহে দিল্লিতে পম্পেওর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে জয়শঙ্কর বলেন, ‘ভারত এ ব্যাপারে তার জাতীয় স্বার্থটাকেই সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেবে।’
সেই ‘স্বার্থ’-এর দু'টি দিক থাকতে পারে। জাতীয় নিরাপত্তা হলে মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা যতটা প্রয়োজন দিল্লির, তেলের জোগান ও দর-দামের দাঁড়িপাল্লায় তেহরানের প্রাসঙ্গিকতা ততটাই ভারতের কাছে।
মঙ্গলবার ভারতকে সম্ভবত সেটাই মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন ইরানি রাষ্ট্রদূত। চেগানির কথায়, ‘জয়শঙ্কর যা বলেছেন, তাতে ইঙ্গিত, তেলের জোগান, দর-দামের কথাই ভাবছে ভারত। সেক্ষেত্রে ইরানের তরফে বলব, জোগানে ঘাটতি থাকবে না। দর-দাম নিয়েও ভাবতে হবে না। তা মিলবেও চটজলদি। যখন যতটা প্রয়োজন। ভারত ও ইরান একে অন্যের বন্ধু। একে অন্যের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে চলি।’
চেগানির আরও আশঙ্কা, সরাসরি না হলেও চাবাহার বন্দর নির্মাণের কাজও আগামী দিনে থমকে যেতে পারে আমেরিকার হস্তক্ষেপে।
ভারতসহ যে দেশগুলি তাদের প্রয়োজনের অপরিশোধিত তেলের একটি বড় অংশ আমদানি করে তেহরান থেকে, আমেরিকা চাইছে অবিলম্বেই এবার সেই দেশগুলি তা বন্ধ করুক। কারণ, ওয়াশিংটনের দাবি, ওই তেল বিক্রির অর্থে সন্ত্রাসবাদীদের মদত জুগিয়ে যাচ্ছে ইরান। তেহরান থেকে তেল আমদানি বন্ধের জন্য একটা সময়সীমা ভারতকে আগেই দিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু দিল্লি জানিয়েছিল, তেহরানের ওপর ভারতের যে পরিমাণে তেল-নির্ভরতা, তাতে সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার পথে যেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। ওয়াশিংটন সময় দিয়েছিল আরও ৬ মাস। যা গত মে মাসে শেষ হয়েছে।
তারপরেই, জুনের শেষাশেষি দিল্লিতে আসেন মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব মাইক পম্পেও। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব এস জয়শঙ্করকে তিনি আশ্বাস দিয়ে যান, তেহরান থেকে তেল আমদানি বন্ধ করলে কোনও অসুবিধায় পড়তে হবে না ভারতকে। আমেরিকা ভারতের তেল জোগাবে। সউদী আরবও যাতে তেল জুগিয়ে যায়, সেটাও দেখবে ওয়াশিংটন।
এমন পরিস্থিতিতে ভারত যে বেশ চাপে, দ্রুতই তা বুঝেছেন ইরানি রাষ্ট্রদূত। তাই বলেছেন, ‘বন্ধু দেশ ভারত মনে হচ্ছে, বেশ চাপে রয়েছে। কিন্তু আমাদের সম্পর্কটা ইতিহাস জানে। তাই অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার জন্য ভারত ও ইরানের সম্পর্কে চিড় ধরবে না। ভারতের সঙ্গে ইরানের বাণিজ্যিক সম্পর্কও আগের চেয়ে বেড়েছে অনেকটাই। আর এও জানি, আমেরিকা মুখে যা বলে, তা কাজে করে না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।