পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিয়ে হয়েছে মাত্র ২ মাস আগে। হাতের মেহেদীর দাগ এখনো উঠেনি। বুঝে উঠতে পারেননি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঘর-সংসার। এর মধ্যেই দিবালোকে স্ত্রীর সামনেই মধ্যযুগীয় কায়দায় রাম দা দিয়ে স্বামীকে কুপিয়ে খুন করছে একদল দুর্বৃত্তরা। সন্ত্রাসীর হাতে নিহত স্বামী শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফের সঙ্গে কয়েকদিনের স্মৃতিই স্ত্রীর আয়শা আক্তার মিন্নির সম্ভল! গত বুধবার সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে লোমহর্ষক বর্বরোচিত এই ঘটনা ঘটে। রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। সর্বস্তরের মানুষ এই পৈচাশিক হত্যকান্ডের বিচারের দাবিতে সোচ্চার। সাধারণ মানুষ তো বটেই বিশ্বকাপ খেলতে ইংলান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম স্ট্যাটাস দিয়ে রিফাত হত্যার বিচার দাবি করেছেন।
সর্বত্রই প্রতিবাদের ঝড় ওঠেছে; খুনিদের গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। রিফাত হত্যকাÐে কি অ্যাকশন নেয়া হয়েছে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে খুনিরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সে জন্য সীমান্তে এলার্ট জারি করতে পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এধরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, দেশের মানুষ তো এমন ছিল না। দেশের শিল্পী সমাজের বরেণ্যরা বলেছেন, বিচারহীনতা ও সুশাসনের অভাবে দেশে এমন ঘটছে। বিশ্বজিতের খুনিরা মুক্তি পেয়েছে। তাদের ফাঁসি হলে হিংস্র ঘটনা ঘটার আগে হাজারবার অপরাধীরা চিন্তা করতেন।
‘প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংস হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ এ তথ্য জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এ ঘটনাটি নৃশংস। এ ঘটনায় অলরেডি একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে আছে; গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, পুলিশ বসে নেই। জোর গলায় বলতে পারি আমাদের পুলিশ অনেক সক্ষম, অনেক দক্ষ এবং অনেক ইনফরমেটিভ। দু’জনকে পুলিশ ধরে ফেলছেন। এই নৃশংস হত্যাকাÐের সাথে জড়িত সবাইকে আমরা ধরব। সবাইকে আইনের সামনে আমরা হাজির করে দেব। পুলিশ সদর দফতরের এ আইজি (মিডিয়া) জানান, রিফাত হত্যাকারীদের গ্রেফতারে সারাদেশে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত রিফাতের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবনগোলা গ্রামে। আয়েশা আক্তার মিন্নির সঙ্গে দুই মাস আগে রিফাত শরীফের বিয়ে হয়। মিন্নি এখনো কজেলে পড়ছেন।
এর আগে ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর রাজধানী পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশে দিবালোকে শত শত মানুষ ও পুলিশের সামনেই রড দিয়ে নিষ্ঠুর ও পৈচাশিক কায়দায় পিটিয়ে দর্জি বিশ্বজিৎ দাসকে হত্যা করা হয়েছিল। রাজধানী ঢাকা শহরে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় সেই হত্যাকাÐ ঘটিয়েছিল ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ-সংগঠন ছাত্রলীগের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীরা।
বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে দিবালোকে রিফাত শরীকে হত্যাকাÐের চিত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও›র ফুটেজে দেখা যায় বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় ওঁৎপেতে থাকা কয়েকজন সন্ত্রাসী রাম দা নিয়ে রিফাতের ওপর চড়াও হয়েছে। এ সময় মিন্নি তাদের বাধা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কিন্তু তার বাধা সত্তে¡ও সন্ত্রাসীরা রিফাতকে এলোপাতাড়ি কোপাচ্ছে। হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে বারবার আত্মরক্ষার চেষ্টা চালান রিফাত। সন্ত্রাসীরা তার হাত-পা, বুক, পিঠসহ সারা শরীর কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। পাশে দাঁড়িয়ে কয়েকজন সে দৃশ্য দেখছেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আরো দেখা যায় দুর্বৃত্তের কবলে পড়া রিফাতের স্ত্রী মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। একবার সন্ত্রাসী নয়নকে, আরেকবার নয়নের সহযোগী দুর্বৃত্ত ফরাজীকে আটকানোর চেষ্টা করেন এবং ‘বাঁচাও, বাঁচাও’, ‘না, না’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। কিন্তু ততক্ষণে রাম দা’র কোপে মারাত্মক আহত রিফাত লুটিয়ে পড়েন।
দুই মাসের স্বামী রক্তাক্ত রিফাত শরীফকে এরপর উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেন স্ত্রী কলেজ ছাত্রী মিন্নি। সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে বিকালে রিফাত শরীফ ইন্তেকাল করেন। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পর্যন্ত চন্দন নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্র দু’জনকে গ্রেফতারের তথ্য দিয়েছেন।
রিফাত হত্যাকাÐে পলিশ বাহিনী কি অ্যাকশন নিয়েছেন তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছেন, এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সচেতন থাকা উচিত ছিল। ভিকটিমের স্ত্রী ও স্বজনদের যেন কোনও রকম হয়রানি বা হুমকি না দেয়া হয়, সেজন্য তাদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশনা দিয়ে আদালত বলেছেন, ৪ জুলাই আবার এ বিষয়ে শুনানির জন্য রাখছি। ওই দিন মামলার অগ্রগতির বিষয়ে আমরা শুনানি করব।
রিফাতের স্ত্রী মিন্নির লোমহর্ষক বর্ণনা
বরগুনায় প্রকাশ্য দিবালোকে উপর্যুপরি কুপিয়ে শাহ নেওয়াজ রিফাত শরীফকে হত্যার মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিয়েছেন তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি। তিনি বলেন, চিৎকার করে অন্যদের সাহায্য চেয়েছি খুনিদের দুই হাতে জাপটে ধরে ও ধাক্কা দিয়ে সরিয়েও স্বামীকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরিনি। মিন্নি বলেন, রিফাতের সঙ্গে দুই মাস আগে আমার (তার) বিয়ে হয়। তবে এর আগে থেকেই এলাকার বখাটে সাব্বির হোসেন নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড আমাকে উত্ত্যক্ত করতো। বিয়ের আগে থেকেই প্রায়ই রাস্তাঘাটে নয়ন আমাকে বিরক্ত করতো। নির্দেশ দিতো তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে হবে, কথা না বললে মেরে ফেলবে হুমকি দিত। রাস্তাঘাটে আমার রিকশায় জোর করে উঠবে, এসব কথা কাউকে বললে মেরে ফেলবে বলে বিভিন্ন সময় হুমকি দেয়। এরপর বিষয়টি পরিবারকে জানালে রিফাতের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে বিয়ের আগ থেকেই রিফাতের সঙ্গে আমার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। সন্ত্রাসীরা আঘাতের পর আঘাত করছে রিফাতকে। সন্ত্রাসী নয়ন ও তার সহযোগীর হামলার হাত থেকে বাঁচাতে রামদা’র সামনে দাঁড়ায়েছি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মিন্নি বলেন, বিয়ের পরও নয়ন বন্ড আমাকে বিরক্ত করে আসছিল। বিষয়টি আমি আমার স্বামীকেও জানিয়েছিলাম। ২৬ জুন বুধবার সকালে আমি কলেজে যাই (বরগুনা সরকারি কলেজ)। রিফাত আমাকে কলেজ থেকে আনতে যায়। আমরা দু’জন কলেজ থেকে বের হই। কলেজের গেটে ওঁৎপেতে থাকা কিছু সন্ত্রাসী এ সময় রিফাতকে কলেজ গেট থেকে টেনে নিয়ে নয়ন বন্ড ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের কাছে নিয়ে যায়। তারা রিফাতকে একসঙ্গে আক্রমণ করে। মারার চেষ্টা করে। আমি অনেক চেষ্টা করেও ফেরাতে পারিনি। রাম দা নিয়ে আক্রমণ করে, কোপাতে থাকে। আমি অনেক চেষ্টা করছি, অস্ত্র ধরছি, তাদের ধরছি, চিৎকার করছি। কেউ আগায়া আসেনি রিফাতকে বাঁচাতে। কেউ আমারে একটু হেল্প করেনি। আমি একাই রক্তাক্ত রিফাততে হাসপাতালে নিয়া গেছি।
মিন্নি জানান, দিবালোকে প্রকাশ্যে রিফাতকে যখন দুই তিনজন রাম দা নিয়ে কোপাচ্ছিল, তখন আশপাশে এদের সহকারীরা দাঁড়িয়ে ছিল। ওই ছেলেগুলোই প্রথমে রিফাতকে মারধর করে। রিফাত হত্যার বিচার ও খুনিদের সাজার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে মিন্নি বলেন, দোষীদের যাতে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়, এজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামরা করি। নয়ন, রিফাত ফরাজি ও রিশান ফরাজির ফাঁসি দাবি করছি।
রিফাতের বাবার যা বলেন
রিফাতকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে অভিযোগ করে বরগুনায় ঘাতকের হাতে নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ বলেছেন, আমার ছেলেকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ছেলে রিফাতকে তো আর ফিরে পাবো না, প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, যাতে করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। আমার কিছু চাওয়ার নেই, আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ আরো বলেন, সকালে আমি একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠি। সকাল ৯টায় আমার ফোনে তিনবার রিং বাজলেও আমি টের পাইনি। সকাল ১০টার পরে আমি ঘুম থেকে উঠছি। রিফাতের চাচা শ্বশুরের ফোন পেয়ে হতবিহŸল হয়ে যাই। তড়িঘড়ি করে একটা মোটরসাইকেল নিয়ে হাসপাতালে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি অ্যাম্বুলেন্স রিফাত নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে। আমি দরজা খোলার পর বাবার (রিফাত) রক্তাক্ত চেহারা দেখার পর মনে করছি আল্লাহ জানি কী...।’
কান্নাজনিত কণ্ঠে নৃশংস হত্যার শিকার রিফাতের বাবা বলেন, বলি আমি ছেলের সঙ্গে যেতে পারবো না। আমার হার্টের সমস্যা, ডাক্তার আমাকে নিষেধ করেছেন জানাজায় পর্যন্ত না যেতে। মৃত্যুর সংবাদও যেন আমাকে কেউ না বলে। তাই আমি রয়ে গেছি। ওই অবস্থায় রিফাতকে হাসপাতালে (বরিশালে) নিয়ে যায়। এর পরের ঘটনা তো সবাই জানেন। তিনি বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর লোকমুখে শুনেছি ওরা (হামলাকারীরা) ওখানে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে ওঁৎপেতে ছিল। তা না হলে তাদের হাতে রামদা কেন থাকবে? আমি মনে করি, তারা জানতো সে কলেজে যাবে।
ছেলের খুনিদের বিচারের দাবি জানিয়ে দুলাল শরীফ বলেন, আমার একটাই আশা, এ ধরনের সন্ত্রাসী যারা আছে, তাদের বিচার হওয়া উচিত। হত্যাকাÐে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার কিছু চাওয়ার নেই। হত্যাকাÐে জড়িতদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, বিকেবি রোডের নয়ন নামে একটা ছেলে জড়িত। এলাকায় সে একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। এছাড়া রিফাত ফরাজিসহ আরও দুই-তিনজন জড়িত আছে। নয়ন একবার হেরোইন, একবার ফেনসিডিল নিয়ে ধরা পড়েছে। জেল খেটেছে। এসপি সাহেবের কাছে নালিশ করার পর তিনি একবার ধরে চালান দিছেন। কিন্তু পরে বের হয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা কখনও জেলে আটকা থাকে না। তাদের নেটওয়ার্ক খুব বড় থাকে। ওপরে তাদের অবশ্যই বড় ধরনের লিংক আছে, যারা তাদের জেল থেকে বের করে আনেন। বরগুনাতে মাদক ব্যবসায়ী যারা আছে তারা যায় আর বের হয়ে অসে।
দুলাল শরীফ বলেন, রিফাত সকালে বাসা থেকে ৫০০ টাকা নিয়ে বের হয়। সে বলেছিল স্ত্রীকে নিয়ে কলেজে যাবে। কিন্তু কখনও বুঝতে পারিনি এই যাওয়াই ওর শেষ যাওয়া হবে।
জানাজায় মানুষের ঢল
রিফাত শরীফের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। রিফাত শরীফের জানাজায় নানা শ্রেণি পেশার মানুষের ঢল নামে।
এর আগে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রিফাতের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় বরগুনার নিজ বাড়িতে। অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে পরিবেশ। জানাজায় ইমামতি করেন বরগুনা কামিল (মডেল) মাদরাসা জামে মসজিদের ইমাম ক্বারী মো. সোলায়মান। জেলার প্রায় সব দলের নেতা, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে রিফাত হত্যকাÐে বøগ, ফেসবুক, টুইটারে প্রতিবাদের ঝড় বইছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে রিফাতের নৃশংস হত্যাকাÐের প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুখর হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনয়শিল্পী, নাট্যকার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। প্রবীণ অভিনেতা আবুল হায়াৎ, টেলিভিশন নাট্যকার সংঘের সভাপতি মাসুম রেজা, অভিনেতা ও টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইরেশ যাকেরসহ অনেকেই হত্যকাÐের বিচার দাবি করেছেন। আবুল হায়াৎ এ ধরনের ঘটনার পেছনের কারণ বিচারহীনতা ও সুশাসনের অভাবই দায়ী উল্লেখ করে বলেন, ‘বিচারহীনতা ও সুশাসনের অভাবে এ ধরনের ঘটনা সমাজে ঘটে। কারণ বিচারহীন সবকিছু চলতে থাকলে অনেকে আশকারা বা লাই পেয়ে যায়। অপরাধ করে পার পাওয়া মানুষদের দেখে অন্যরা ভাবে আমরাও অপরাধ করলে কিছু হবে না’। ইরেশ যাকের বলেন, ‘একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা আছেন তাদের কাছে একটাই অনুরোধ যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন তাদের যেন শাস্তি হয়। শাস্তি না হলে এমন ঘটতেই থাকবে। এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছে। কিন্তু দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চোখে পড়েনি। সরকার তার স্বাভাবিক পরিচালনার মধ্যে এসব অপরাধীদের সঙ্গে সঙ্গে বিচারের আওতায় নিয়ে আসবে। যদি রিফাতের মৃত্যুর সঠিক বিচার না হয় তাহলে আমরা মাঠে নামবো। তখন দাবি নয়, প্রতিবাদ জানাব’। মানুস রেজা বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে দাবি তোলার এই যে প্রশ্ন উঠছে, তার মানে হলো দেশে স্বাভাবিক যে বিচার প্রক্রিয়া রয়েছে তার মধ্যে গলদ আছে। এই জাতীয় নৃশংস কাজে অন্যদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। অন্যরাও ভয় পাচ্ছে না। তারা নিঃসঙ্কোচে নিঃশঙ্কায় এই ঘটনাগুলো ঘটিয়ে যাচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।