Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

পুরি-সমুচা বেচে বছরে আয় কোটি টাকা!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৯, ৮:০৭ পিএম

ভারতের আলিগড়ের ঘিঞ্জি এলাকার তস্যা গলিতে শিঙাড়া, সমুচা ও পুরি (কচুরি) বিক্রি করে আয় করেন বছরে প্রায় কোটি টাকা। আর এমন আয়ের কারণে পুরি বিক্রেতার দিতে হচ্ছে আয়কর। দেশটির বাণিজ্যিক কর দপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে পুরির দোকানী মুকেশ কচৌরির বাৎসরিক আয় ভারতীয় মুদ্রায় ৭০ লাখ(১ কোটি টাকা)।

কাকডাকা ভোরেই ঝাঁপ ওঠে, গ্যাস জ্বালানো হয় ‘মুকেশ কচৌরি’র ঘুপচি দোকানে, আর ঝাঁপ বন্ধ হয় মধ্যরাতে। গত ১২ বছরে খুব বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সমস্যা ছাড়া মুকেশ কোনো দিনই বন্ধ রাখেননি তার দোকানের ঝাঁপ। কর-কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, গলির এক ধারে বসে এত দিন কচুরির (পুরির) দোকান চালালেও মুকেশ জানতেন না এই ব্যবসার লাভের কড়ি থেকে একটি অংশ কর হিসেবে জমা দিতে হয় সরকারের ঘরে। মুকেশ যেমন তা জানতেন না, তেমন কর-কর্মকর্তারাও জানতেন না শুধু কচুরি আর সমুচা ভেজেই বছরের পর বছর ধরে অন্তত ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকা করে ঘরে তুলছেন মুকেশ।

মুকেশের এমন উন্নতি আশপাশে থাকা লোকজনের সহ্য না হলে তাদের একজন সরাসরি অভিযোগ জানান- বাণিজ্যিক আয়কর দপ্তরে। কর-কর্মকর্তাদের বলেন, ‘দেখুন তো গিয়ে কত রোজগার মুকেশের। ও কর দেয় আপনাদের?’ এরপরেই কর্মকর্তারা ছদ্মবেশে আশপাশের কয়েকটা দোকানে কয়েক দিন ধরে বসে নজর রাখতে শুরু করেন মুকেশের ছোট্ট দোকানের ওপর। দেখতে থাকেন কখন দোকান খোলে, কখন বন্ধ হয়, সারা দিন ধরে মুকেশের দোকানের সামনে লাইনটা কত বড় থাকে, মুকেশের কেমন বিক্রিবাট্টা হয়। সেই সব দেখে টেখে কর্মকর্তারা হিসাব করে দেখেন, মুকেশের আয় বছরে ৬০ থেকে ৭০ লক্ষ টাকার কম হতে পারে না।

এরপরই কর্মকর্তারা সরাসরি মুকেশের দোকানে গিয়ে তাকে প্রশ্ন করেন। মুকেশ সরলভাবে বলে দেন, বছরে তার আয় ৬০-৭০ লক্ষ টাকা তো বটেই, কখনো তা ১ কোটি টাকাও হয়ে যায়। মুকেশ স্বীকার করেন এর পরেও জিএসটির করদাতা হিসেবে তিনি নাম নথিভুক্ত করাননি, সেই সব নিয়মকানুন জানতেন না বলে।

মুকেশের কথায়, ‘আমরা খুবই ছাপোষা মানুষ। কর-টর দিতে হয় জানতাম না। কেউ আমাকে বলেওনি কোনো দিন।’ রাজ্যের গোয়েন্দা দপ্তরের এক কর্মকর্তাও জানিয়েছেন, মুকেশের কিছুই জানা ছিল না। তিনি অকপটে সব স্বীকার করেছেন তাদের কাছে। জানিয়েছেন, কত তেল পোড়ে দিনে, গ্যাসের খরচ কতটা হয়, কচুরি, সমুচা বানানোর কাঁচা মাল কিনতে দিনে তার কত খরচ হয় আর লাভই বা হয় কতটা।

রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তরের ডেপুটি কমিশনার আর পি ডি কৌন্তেয় বলেছেন, ‘ওকে সব কিছু বুঝিয়ে বলা হয়েছে। নোটিশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে এ বার নাম নথিভুক্ত করাতে হবে জিএসটি করদাতাদের তালিকায়। উনি রাজিও হয়েছেন সঙ্গে সঙ্গেই। এও বলা হয়েছে, এবার থেকে বাণিজ্যিক করও দিতে হবে ওকে। আর বকেয়া হিসাবে গত এক বছরের কর দিতে হবে।’ সূত্র: ডেকান হেরাল্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ