নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সুযোগ এসেছিল আগের ম্যাচেই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিপুল রান তাড়ায় ৪১ বলে ৪১ রানে থেমে গেলে বাড়ে অপেক্ষা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই মাইলফলকে যেতে তাই ৩৫ রান লাগত সাকিব আল হাসানের। তিনে নেমে প্রতি ম্যাচেই ব্যাটিংয়ে ঝলক দেখানো সাকিব সাবলীল ব্যাট চালিয়ে দ্রুতই স্পর্শ করলেন তা। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সাকিবের নামের পাশে এখন এক হাজার বিশ্বকাপ রান। বিশ্বকাপে রান সংগ্রহে সাকিব ছাড়িয়ে গেছেন সৌরভ গাঙ্গুলি, মার্ক ওয়াহদের মতো তারকাদেরও।
উইকেট মন্থর, মাঠ বড়। আফগান অফ স্পিনার মুজিব-উর-রহমান আর মোহাম্মদ নবিকে সামলাতে কৌশল বদলে নামে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করতে নামেন লিটন দাস। শুরু থেকে তিনিও ছিলেন সাবলীল। মুজিবের বলে দলের ২৩ রানে তিনি ক্যাচ দিয়ে ফেরত গেলে ক্রিজে আসেন সাকিব। দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে গড়েন ৫৯ রানের জুটি। তাতে সাকিবই ছিলেন বেশি স্বচ্ছন্দ। ৫৩ বলে ৩৬ রান করে তামিম ফেরার পর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে দলকে টেনেছেন সাকিব। উইকেটের ভাষা পড়ে অতটা আগ্রাসী হননি। এক, দুই রান নিয়ে এগিয়েছেন দেখে শুনে। ৪৫ বলে ৩৫ রানে যেতে সাকিব মেরেছেন মাত্র একটি বাউন্ডারি। বিশ্বকাপে এক হাজার রান ছুঁতে সাকিব করেছেন ২ সেঞ্চুরি আর ৭ ফিফটি। এই মাইলফলকে পৌঁছানোর বেশ কয়েক ওভার আগেই অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নারকে (৪৪৭) টপকে এবারের আসরে রান সংগ্রহেও এক নম্বরে উঠে যান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
বিশ্বকাপে হাজার রানে যেতে সাকিবের লাগল ২৭ ম্যাচ। এক হাজারের বেশি রানের সঙ্গে বল হাতেও সাকিবের উইকেট ৩০টি। আর এতেই ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে এক হাজার রান ও ৩০ উইকেটের মালিক হলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। এক দলের হয়ে বিশ্বকাপে হাজার রান ও সর্বোচ্চ উইকেটের ডাবল ছিল কেবল আর একজনেরই- ৩৮ ম্যাচ খেলে ১১৬৫ রানের পাশাপাশি ২৫টি উইকেট নিয়েছিলেন লঙ্কান কিংবদন্তি সনাৎ জয়সুরিয়া।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি রান করায় সাকিবের পরেই আছেন মুশফিকুর রহিম। ২৬ ম্যাচে ৮৩৭ রান করেছেন তিনি। গতকালও ছিল অনন্য এক কীর্তিতে সাকিব-মাহমুদউল্লাহর পাশে বসার সুযোগ। দলকে টেনে নেওয়া ইনিংসটি আরেকটু দীর্ঘ করতে পারলেই ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরি পেতেন ৮৩ রানে ফেরা এই অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। তারপরই সাকিবের সমান ২৭ ম্যাচ খেলে তামিম আছেন ৬৮২ রানে।
২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথমবার নেমেই ভারতের বিপক্ষে ফিফটি করেছিলেন সাকিব। এরপর খেলেছেন ২০১১ আর ২০১৫ বিশ্বকাপে। আগের তিন বিশ্বকাপ মিলিয়ে যেখানে তার রান ছিল ৫৪৬। সেখানে এবার এক বিশ্বকাপেই ছাড়িয়ে গেছেন সাড়ে চারশোর কোটা। এগিয়ে যাচ্ছেন আরও বড় কিছুর দিকে। সরাবরের মতো সেই যাত্রাপথে পাশে পাচ্ছেন বিশ্বস্ত মুশফিককে। এই জুটির রসায়নও দুর্দান্ত। বাংলাদেশের সফলতম জুটি আরেকবার হাল ধরেছিলেন দলের। জুটির রান বড় হয়নি। কিন্তু নতুন কীর্তি গড়েছেন দুজন।
বাংলাদেশের সফলতম জুটির রান তিন হাজার ছাড়িয়েছে। ৮২ ইনিংসে তাদের জুটি থেকে এসেছে ৩০১৭ রান। তাদের দুজনের কাছাকাছিও নেই কোনো জুটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০৪৩ রান করেছেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। নড়বড়ে তামিম ইকবাল সাজঘরে ফেরার পর ব্যাটিংয়ে আসেন মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে সাকিবকে নিয়ে গড়েন ৬১ রানের জুটি। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যাটিং করেন দুজন। ৫১ বলে তাদের জুটি ছুঁয়ে ফেলে পঞ্চাশ। ব্যাটিং ধারাবাহিকতায় এগিয়ে যান দুজন। মনে হচ্ছিল আজও তাদের জুটির রান বড় হবে। সাকিব ফিরে যাওয়ায় সেই সুযোগটি হয়নি।তবে ম্যাড়ম্যাড়ে উইকেটে দুজন লড়াই করে রানের চাকা সচল রাখেন দারুণভাবে।
৩৯.১৮ গড়ে রান তোলেন এই জুটি। ৬টি শতরানের জুটির পাশাপাশি তাদের জুটিতে আছে ১৯টি হাফ সেঞ্চুরি। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৪৮ রান তুলেছিলেন দুজন। যা তাদের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এ ছাড়া শতরানের বাকি জুটিগুলো হলো, ১১৬ (জিম্বাবুয়ে), ১০৫ (জিম্বাবুয়ে), ১১৪ (আফগানিস্তান), ১৪২ (দক্ষিণ আফ্রিকা) ও ১০৬ (ইংল্যান্ড)।
একই ম্যাচে বাংলাদেশের ২৮তম ক্রিকেটার হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে ৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ পূর্ণ করেছেন সৌম্য সরকার। এর আগে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেই মুস্তাফিজুর রহমান সর্বশেষ ক্রিকেটার হিসেবে ৫০ ওডিআই ম্যাচ খেলেছিলেন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।