Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মমতার আশ্বাসে ধর্মঘট তুললেন জুনিয়র ডাক্তাররা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৯, ৮:০৭ পিএম

দীর্ঘ সাত দিন অচলাবস্থার পর, সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে চলেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ধর্মঘট তুলে নিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আন্দোলনকারীদের ৩০ জনের প্রতিনিধির সামনে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিলেন— সবার আগে দেখা হবে হাসপাতালে যাতে আর একটাও হামলার ঘটনা না ঘটে। যদি ঘটে যায়, সে ক্ষেত্রেও দ্রুত এবং কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার দুপুর তিনটেয় নবান্নে বৈঠকের কথা থাকলেও, সকাল থেকে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মতো, টেলিভিশন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা বৈঠকের লাইভ টেলিকাস্ট করতে সম্মত হয় সরকার। এ সব টানাপড়েনের শেষে বিকেল চারটে নাগাদ শুরু হয় বৈঠক।

মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ১২ দফা লিখিত দাবি পেশ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রতিটি দাবিই আলাদা আলাদা করে তারা বিস্তারিত বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে। এ গুলির মধ্যে, হাসপাতালে চিকিত্সকদের নিরাপত্তায় পুলিশের সংখ্যা এবং সক্রিয়তা বাড়ানোর দাবি যেমন ছিল, তেমনই ছিল রোগীদের অভাব অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ার জন্য হাসপাতালের গ্রিভ্যান্স সেল বা অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে সামনে নিয়ে আসার দাবিও। একই সঙ্গে বিভিন্ন হাসপাতালে রাজনৈতিক দলগুলির ‘প্রভাব’ কমানোর জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়।

এনআরএস-এর ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থেকেও যে নিষ্ক্রিয় ছিল, তা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠকে উপস্থিত পুলিশকর্তাদের মমতা নির্দেশ দেন, এ নিয়ে যথাযথ তদন্ত করার। ভবিষ্যতে যাতে এমনটা আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করা জন্যও পুলিশকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

বেশ কয়েক দিনের বরফ গলে, এ দিন বৈঠকের শুরু থেকেই নমনীয় দেখা যায় দু’পক্ষকে। মমতা এবং জুনিয়র ডাক্তাররা একে অপরের কথা শুনেছেন মন দিয়ে। বৈঠকে কিছু অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ উঠলেও, সুর কখনও চড়া হয়নি। আন্দোলনকারীদের সব দাবি সঙ্গেই একমত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জুনিয়র ডাক্তাররা আশা প্রকাশ করেছেন, বৈঠকের সব সিন্ধান্ত যথাযথ প্রয়োগ সরকারপক্ষ করবেন।

সোমবার সকালে আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে জানানো হয়, মৌখিক ভাবে বিভিন্ন সূত্র থেকে নবান্নে বৈঠকের কথা জানতে পারলেও, সরকারি ভাবে কোনও আমন্ত্রণপত্র তারা হাতে পাননি। সরকারি আমন্ত্রণপত্র ছাড়া তাঁরা কোনও ভাবেই বৈঠকে যোগ দিকে পারবেন না।সাংবাদিকদের এ কথা জানানোর কিছু পরই স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র তাদের কাছে পৌঁছেছে।

ওই আমন্ত্রণপত্রে অবশ্য মিডিয়ায় উপস্থিতি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের শর্তের উল্লেখ ছিল না। লেখা ছিল, প্রতিটা মেডিক্যাল কলেজ থেকে অন্তত ২ জন প্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠকে যোগ দিতে পারবেন। বেলা আড়াইটার মধ্যেই পরিচয়পত্র-সহ তাদের নবান্নে পৌঁছে যেতে হবে। এবং পুরো বৈঠকটা রেকর্ড করা হবে। কিন্তু আমন্ত্রণ পত্রে লাইভ কভারেজের কোনও উল্লেখ নেই বলে বেঁকে বসেন আন্দোলনকারীরা। সরকারের তরফে সেই ব্যবস্থা না হলে বৈঠকে যাবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন। তার পরই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে লাইভ কভারেজের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়। একটি চিঠি প্রকাশ করে তা জানান এনআরএস-এর অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়। সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ