Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের নতুন শিক্ষা নীতিতে হিন্দি বাধ্যতামূলক হচ্ছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৯, ৫:৩৮ পিএম

নতুন শিক্ষা নীতি চালু করে ভারত জুড়ে হিন্দি ভাষা চাপানোর অভিযোগে শুরুতেই সমালোচনার মুখে পড়ল নরেন্দ্র মোদি সরকার। শুক্রবারই মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। তার পরেই তার হাতে নতুন শিক্ষা নীতির খসড়া জমা পড়েছে। তাতে স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এ নিয়েই প্রতিবাদে মুখর হয়েছে দক্ষিণের রাজ্যগুলি।

এনডিএ-র শরিক এডিএমকে এবং পিএমকে জানিয়েছে, অ-হিন্দিভাষী রাজ্যগুলির উপর জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হলে দেশের বহুত্ববাদী চিন্তাধারায় আঘাত লাগবে। তামিলনাড়ুর এডিএমকে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী কেএ সেঙ্গোত্তাইয়ান জানিয়ে দিয়েছেন, তারা কেন্দ্রের এই নীতি মানবেন না। কেন্দ্রের শিক্ষা নীতির খসড়ায় স্কুলে তিনটি ভাষা শেখানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেঙ্গোত্তাইয়ান বলছেন, ‘তামিলনাড়ু দু’টি ভাষার নীতি নিয়েই চলবে। শুধু তামিল ও ইংরেজিই শেখানো হবে।’ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ই পলানিস্বামী নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখছেন। ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিন বিজেপিকে বিপর্যয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমডিএমকে নেতা ভাইকো-র হুমকি, ফের ভাষাযুদ্ধ শুরু হবে। কমল হাসনের বক্তব্য, ‘আমি নিজে হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছি। কিন্তু হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।’ টুইটারে #StopHindiImposition আন্দোলনও শুরু হয়েছে।

বিরোধীদের অভিযোগ, শিক্ষায় গৈরিকীকরণের লক্ষ্যে সঙ্ঘ পরিবারের বরাবরের কৌশল— ‘হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান’। নতুন শিক্ষা নীতির খসড়ায় তার প্রতিফলন। প্রাক্তন ইসরো চেয়ারম্যান কে কস্তুরীরঙ্গন কমিটির তৈরি খসড়া অনুযায়ী, স্কুল শিক্ষায় তিনটি ভাষা শেখানো প্রয়োজন। হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দি, ইংরেজির পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীরা যে কোনও ভাষা বেছে নিতে পারে। অ-হিন্দিভাষী রাজ্যে হিন্দি, ইংরেজির সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা একটি আঞ্চলিক ভাষা শিখতে পারে। যার অর্থ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, কেরলের মতো রাজ্যেও হিন্দি শেখা বাধ্যতামূলক।

তামিলনাড়ুতে স্বাধীনতার আগেও হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়েছে। স্বাধীনতার পরেও তা থামেনি। ১৯৬৫-তে হিন্দি-বিরোধী আন্দোলন সংঘর্ষের চেহারা নেয়। এর রেশ ছড়ায় আরও তিন দক্ষিণী রাজ্য তৎকালীন অন্ধ্রপ্রদেশ, মাইশোর এবং কেরলে। ১৯৮৬-তে শিক্ষা নীতি তৈরি হয়, যা সংশোধন হয় ১৯৯২-এ। বিজেপি ২০১৪-র ইস্তাহারেই নতুন শিক্ষা নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। দ্বিতীয় বার সরকারে এসে প্রথম একশো দিনের মধ্যেই নতুন শিক্ষা নীতি চূড়ান্ত করতে চাইছে সরকার।

জানুয়ারিতেই শোনা গিয়েছিল, নতুন শিক্ষা নীতিতে এমন সুপারিশই থাকবে। কিন্তু তখনকার মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর তা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এ বার খসড়া নীতি প্রকাশ হতে দেখা যাচ্ছে, সেটাই বাস্তব। যদিও বর্তমান মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী নিশঙ্ক এবং জাভড়েকর আজ বলেন, এটা শুধুই খসড়া। মোদি সরকারের বরাবরের অবস্থান, সব ভারতীয় ভাষার বিকাশ। তাই হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা ঠিক নয়। সূত্র: টিওআই।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ