বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মৌলভীবাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: আলা আমিনকে অভিযানের সময় ব্যবসায়ীদের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে অবরুদ্ধ করে রাখে মৌলভীবাজার শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এ সময় ব্যবসায়ীরা দোকান-পাট বন্ধ করে প্রায় ২ ঘন্টা সড়ক অবেরোধ করে রাখেন। পরে জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তোলে নেন ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের কয়েকটি কাপড়ের দোকান ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে জরিমানা করতে যান ভোক্তা অধিকারের উপপরিচালক মোঃ আল আমিন। এসময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগকারীর নাম জানতে চাইলে তিনি অপারগতা জানান। অভিযানে তার সাথে নিয়ম অনুযায়ী অন্যান্যদের দেখতে পেয়ে কারনও জানতে চান ব্যবসায়ীরা। এসময় তিনি ব্যবসায়ীদের সাথে খারাপ আচরন করেন। ব্যবসায়ীরা জানান কিছু দিন পূর্বে অভিযানের পর আবারো একই দোকান গুলোতে ঈদের আগে হঠাৎ অভিযান তাদের সন্দেহ হয়। তাই ব্যবসীয়ারা তার প্রতি পণ্যের দাম ও মান নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েন। তারপরও তিনি কয়েকটি দোকানে বড় অংকের জরিমানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি এমবি ও বিলাসে বিদেশী পারফিউম ও অন্যান্য পণ্যের দাম অতিরিক্ত রাখা হয়েছে এমন মন্তব্য করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এনিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়েন বিলাসের মালিক সুমন আহমদ ও সুহাদ আহমদ। ভোক্তা অধিকারের ওই কর্মকর্তা তখন ক্ষেপে গিয়ে জরিমানার টাকা দেওয়ার কথা বলেন। এনিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আশপাশের ব্যবসায়ীরা ঈদের আগে এমন অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ব্যবসায়ীরা উপ-পরিচালক মোঃ আল আমিনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এবং নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সড়কে অবস্থান নেন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতারা। পরে জেলা প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় পুলিশ ভোক্তা অধিকারের উপ-পরিচালকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন জরিমানার সময় শুভ্র ভট্রাচার্য্য নামের একই ব্যক্তি সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান প্রতিবারই অভিযানে আসলে অভিযোগকারী ওই একই ব্যক্তিকে দেখানো হয়। তারা বলেন ভোক্তা অধিকারের ওই উপ পরিচালক আল আমিন ও তার সাথে একটি চক্র আছে। যারা অভিযোগকারী হলে শতকরা ২৫ ভাগ টাকা পায়। সবাই মিলে তারা জোটবদ্ধ ভাবে অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের চরম হয়রানী করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা বলেন তার কাছে বড় কোন কোম্পানীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলেও আমলে নেন না। অথচ জেলা ও উপজেলার ছোট ছোট দোকান গুলোতে কোন অজুহাত ছাড়াই অভিযান দিয়ে বড় অংকের জরিমান আদায় করেন। তার এমন আচরনে স্থানীয় ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা পথে বসতে শুরু করেছেন।
বিলাসের সত্তাধিকারী সুমন আহমদ ও সুহাদ আহমদ জানান কিছু দিন আগে তাদের দোকানে অভিযান দেন ওই উপ-পরিচালক। পণ্যের ক্রয় মূল্য ও বিক্রয় মূল্যের তালিকা দেখানোর পরও তিনি কারন ছাড়াই জরিমানা আদায় করেন। তারা জানান একটি বিদেশী ব্যান্ডেড কোম্পানীর নকল পণ্য ধরে তারা তার কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিলেও তিনি আমলে নেননি। অথচ অভিযোগ ছাড়া তিনি ঢালাও ভাবে অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানী করছেন। এমবির সত্তাধিকারী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ডা: আব্দুল আহাদ জানান তার প্রতিষ্ঠানে বিদেশী পণ্যের দাম ও মান ঠিক থাকার পরও ওই উপ-পরিচালক জরিমানা করেছেন। তিনি বলেন তার পরিচয় ও অভিযোগকারী কে এমন বিষয় জানতে চাইলে তিনি তার সাথে খারাপ আচরন করেন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন অভিযানের আগে উৎকোচ দাবী করেন ওই উপ-পরিচালক মোঃ আল আমিন। যারা তাকে উৎকোচ দেন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ পেলেও তিনি অভিযানে যান না। ব্যবসায়ীরা দূর্নীতিবাজ এই কর্মকর্তার অপসারণ সহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগব্যবস্থার দাবি করেন।
এবিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: আল আমিন বলেন, যে সকল প্রতিষ্ঠানে অভিযান করা হয়েছে সে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পণ্যের অতিরিক্ত দামসহ নানা সমস্যা ছিল। তাই আইনানুযায়ী ওই সকল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন ব্যবসায়ীরা আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীসহ উৎকোচের যে অভিযোগ তোলেছেন তা ডাহা মিথ্যা। ৬ বছরের মৌলভীবাজার কর্মজীবনে কোথাও এমন উদাহরণ নেই বলে তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।