মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের গত লোকসভা নির্বাচনে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি ও মধ্যপ্রদেশের বেশ কিছু বুথে হাজার হাজার অতিরিক্ত ভোট গোনা হয়েছে। পরিসংখ্যানমূলক ও তথ্যভিত্তিক রিপোর্টে সম্প্রতি এমনই অভিযোগ করেছে ‘নিউজক্লিক’ সংবাদসংস্থা। জানা গিয়েছে, বিতর্কিত কেন্দ্রগুলির মধ্যে রয়েছে পটনা সাহিব, জেহানাবাদ ও বেগুসরাইয়ের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল অঞ্চল। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ওই পোর্টালের পক্ষ থেকে আটটি কেন্দ্রে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, অন্তত একটি কেন্দ্রে জয়ী প্রার্থীর সঙ্গে তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বীর যত সংখ্যক ভোটের ব্যবধান রয়েছে, গোনা হয়েছে তার চেয়ে বেশি সংখ্যক ভোট। এর থেকেই আশঙ্কা জেগেছে যে, অন্যান্য কেন্দ্রেও এই হারে গণনায় গরমিল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হওয়ার আগে ইভিএম স্থানান্তর কেন্দ্র করে সন্দেহ প্রকাশ করে বিরোধী শিবির। এই বিষয়ে বিশেষ সন্দেহ দেখা দেয় বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানা নিয়ে।
এই নিয়ে তিন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রত্যেকেই বিস্ময় প্রকাশ করে রায় দেন, প্রাপ্ত ভোট ও গণনায় পাওয়া সংখ্যার মধ্যে কী কারণে ফারাক সৃষ্টি হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে ভারতের নির্বাচন কমিশনকে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিহারের পটনা সাহিব কেন্দ্রের কথা, যেখানে দুই প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন বিজেপির রবি শংকর প্রসাদ এবং কংগ্রেসের শত্রঘ্ন সিনহা। এই কেন্দ্রে নথিভুক্ত মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ২০,৫১,৯০৫ জন। ১৯ মে এখানে ভোটগ্রহণ হয় এবং বুথে ভোটার উপস্থিতির হার ছিল ৪৬.৩৪%। ২৩ মে ভোট গণনায় পাওয়া হিসেব জানিয়েছে, পোস্টাল ব্যালট-সহ প্রসাদের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ৬,০৭,৫০৬।
অন্য দিকে, শত্রঘ্ন পেয়েছেন ৩,২২,৮৪৯ ভোট। ওই কেন্দ্রে অন্য ১৬ জন প্রার্থীর সম্মিলিত প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫,৭০৯। অর্থাৎ, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ৯,৮২,২৮৫। কিন্তু বুথে ভোটারের হাজিরা যদি ৪৬.৩৪% থাকে, অঙ্ক বলছে তাহলে মোট ভোট সংখ্যা হওয়া উচিত ৯,৫০,৮৫২। স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে, সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৩১,৪৩৩ ভোট কী ভাবে গণনায় স্থান পেল?
এমনই হিসেবের গরমিল দেখা গিয়েছে বেগুসরাই কেন্দ্রেও। এই কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ১৯,৫৪,৪৮৪ জন। ২৯ এপ্রিল সেখানে ভোটগ্রহণ পর্বে বুথে ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৬১.২৭%। তিন প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী বিজেপির গিরিরাজ সিং, সিপিআই-এর কানহাইয়া কুমার ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের মহম্মদ তনবির হাসান। এই তিন জন ছাড়া আরও ৭ জন প্রার্থী বেগুসরাই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছিলেন। গণনায় দশ জন প্রার্থীর মোট প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১২,২৫,৫৯৪। অথচ ভোটারের হাজিরার হিসেব অনুযায়ী, প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা হওয়া উচিত ১১,৯৭,৫১২। প্রশ্ন উঠেছে, অতিরিক্ত ২৮,০৮২ ভোট কোথা থেকে গুনতিতে জায়গা পেল?
শুধুমাত্র এই দুই কেন্দ্রই নয়, নথিভুক্ত ভোট সংখ্যার সঙ্গে গণনায় প্রকাশিত হিসেবে গরমিল দেখা গিয়েছে পূর্ব দিল্লি, উত্তরপ্রদেশের গুনা, বদায়ুঁ ও ফারুখাবাদ, বিহারের জেহানাবাদ, মধ্যপ্রদেশের খান্ডওয়া, মান্ডলা, সিধি, গোয়ালিয়র, দেওয়ার, সাতনা, ছিন্দওয়ারা ও মোরেনা কেন্দ্রেও একই বিসদৃশ ধরা পড়েছে সমীক্ষায়।
বিষয়টি জানতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বহু বার ফোনে ধরার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি বলে দাবি নিউজক্লিক-এর। জবাব মেলেনি মোবাইল মেসেজেরও। উল্লেখ্য, ভোটের ফলপ্রকাশের পরে পটনা সাহিবের কংগ্রেস প্রার্থী শত্রঘ্ন সিনহা মন্তব্য করেন, ‘এখানে বড় খেলা হয়েছে।’ পরাজিত প্রার্থীর মন্তব্য সেই সময় বিশেষ গুরুত্ব না পেলেও অনুসন্ধান রিপোর্ট পাওয়ার পরে তা যথেষ্ট অর্থবহ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।