Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২০১৪ সালকে ছাড়িয়ে গেছেন নরেন্দ্র মোদি

টাইমস অব ইন্ডিয়া | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ভারতে ২০১৯-এর নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালের নরেন্দ্র মোদিকে ছাড়িয়ে গেছেন। বিজেপি ২০১৪ সালে পাওয়া ভোটের সাথে আরো ৬.৪ শতাংশ যোগ করেছে, তা দাঁড়িয়েছে ৩৭.৪ শতাংশে যা পরিমাণে কংগ্রেসের ১৯.৫ শতাংশ ভোটের প্রায় দ্বিগুণ। ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে হিন্দি বলয়ে বিজেপি ১৪১টি আসন পেয়েছে (নির্বাচন অনুষ্ঠিত আসনগুলোর ৭১ শতাংশ), বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) সারা ভারতে পেয়েছে ৩.৭ শতাংশ ভোট।
ভারতের ৫টি বড় রাজ্যে ভোটের ফলাফল : উত্তর প্রদেশে ৮০টি আসনে বিজেপি পেয়েছে ৬৪টি, বিএসপি ১০, এস পি ৫, কংগ্রেস ১; মহারাষ্ট্রে ৪৮টি আসনে বিজেপি ২৩, এনসিপি ৪, সেনা ১৮, কংগ্রেস ১, অন্যরা ২; পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনে তৃণমূল ২২, বিজেপি ১৮ ও কংগ্রেস ২; তমিলনাড়–তে ৩৮টি আসনে ডিএমকে ২৩, কংগ্রেস ৮, এআইডিএমকে ২, সিপিআই ২, সিপিএম ২ এবং বিহারে বিজেপি ১৭, জেডিইউ ১৬, এলজেপি ৬, কংগ্রেস ১।
এই ফলাফলের অর্থ :
গেরুয়া সংহতকরণ : এ ভোট হচ্ছে নরেন্দ্র মোদির ‘হিন্দুত্ব প্লাস বিকাশ’ রাজনীতির প্রতি জনগণের সমর্থন। গো-মাংসে নিষেধাজ্ঞা ও নেহরু নিয়ে লড়াই, সরদার প্যাটেল ও অম্বেদকারকে দখল, রাস্তা নির্মাণ, টয়লেট তৈরির মত ধর্মানরপেক্ষ উদ্যোগের সাথে আঞ্চলিক প্রতীকদের প্রচার ফল দিয়েছে।
কল্যাণ রাষ্ট্র, মোদির বিজয়ের একটি প্রধান কারণ তার প্রতি দরিদ্রদের বিশ্বাস। রান্নার গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ, সাথে স্বাস্থ্যবীমা, ব্যাংক একাউন্ট এবং কৃষকদের প্রতি আয় সমর্থন ইত্যাদি কল্যাণমূলক কর্মসূচি মোদির প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি করেছে।
জাতীয়তাবাদী আবেদন : বিজেপি মোদিকে একজন সিদ্ধান্তদাতা নেতা হিসেবে প্রদর্শন করেছে, দেখিয়েছে তিনি জাতীয় নিরাপত্তার এক বলিষ্ঠ প্রবক্তা হিসেবে যা পুলওয়ামা ও বালাকোট হামলার পর দেখা গেছে। বিজেপি সন্ত্রাস বিষয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল বলে সমালোচনা করেছে। মোদি তার পেশি প্রদর্শনমূলক জাতীয়তাবাদের সমর্থনে একটি নির্বাচনী এলাকা গঠন করে বিভক্তি সৃষ্টির অভিযোগ মোকাবেলা করেছেন, একটি আবেগপূর্ণ বিষয়ে বিরোধীদের কোণঠাসা করে ফেলেছেন।
নিষ্পত্তিমূলক বৈধতা : জাতীয় পর্যায়ে জনগণের পরিষ্কার রায় দেয়ার প্রবণতা দেখা গেছে যার অর্থ বিরোধী জোটের প্রতি সমর্থন নয়। ভোটাররা একটি দল ও নেতার প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থন ব্যক্ত করেছে এবং তারা উদ্বিগ্ন ছিল একটি ‘খিচুড়ি’ সরকারের ব্যাপারে যা সুশাসন ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। জাতীয় পর্যায়ে আঞ্চলিক দলগুলোর ভ‚মিকা সঙ্কুচিত হয়েছে যদি রাষ্ট্রীয় নির্বাচনে তারা প্রাসঙ্গিক।
কাক্সিক্ষত ভারত : ভারতের রাজনীতি থেকে জাতিভেদ বিলুপ্ত হবে না। কিন্তু বিজেপির জয় গ্রামীণ ও শহুরে ভারতে নতুন, উন্নয়নমুখী ভ্রাম্যমাণ নির্বাচনী এলাকার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। দেখা যাচ্ছে মোদি এমন একজন নেতা যিনি বিশ^মঞ্চে ভারতের সঠিক স্থান দাবি করতে পারেন।
মুসলিম বিচ্ছিন্নতা : পার্লামেন্টে মুসলিম এমপিদের সংখ্যা বেড়েছে, এসপি ও বিএসপির সাথে তারা আসন সংগ্রহ করেছে। কিন্তু সার্বিকভাবে যেসব রাজ্যে এ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যগতভাবে ফলাফলে প্রভাব পড়ে যেমন ইউপি, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, কেরালা, বিহার ও মহারাষ্ট্রে তাদের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে। বিজেপি তার উঁ”ু জাতের হিন্দুদের সমর্থনের পাশে জাত-পাতের হিন্দুদের নিয়ে জোট গঠনের ব্যাপারে ‘মুসলিম ভেটো’ কাটিয়ে উঠেছে।
সংখ্যাই সব বলছে
*২০১৪ সালে ১৩৬টি আসনের জায়গায় এবার ২২৪টিরও বেশি আসনে বিজেপি ৫০ শতাংশের উপর ভোট পেয়েছে।
*১৫টি রাজ্য ও ইউনিয়ন টেরিটোরিতে বিজেপি ও তার মিত্ররা ৫০ শতাংশের উপর ভোট পেয়েছে।
*বিজেপি ৮১.৮ শতাংশ আসন ধরে রেখেছে। কংগ্রেস ধরে রেখেছে ৩৭.২ শতাংশ আসন।
*বিজেপি ১৫টি আসনে ৫ লাখেরও বেশি ভোটে জিতেছে।
*১০টি রাজ্য ও ইউনিয়ন টেরিটোরিতে বিজেপি সকল আসন পেয়েছে।
*২০টি আসন ও ইউনিয়ন টেরিটোরিতে কংগ্রেস একটিও আসন পায়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ