মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতীয় লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৫৪২ আসনে নির্বাচনের ভোট শেষ হয়েছে গত রোববার। গত ১১ এপ্রিল থেকে দেড় মাস ধরে সাত দফায় এই ভোট নেয়া হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল আটটা থেকে সারা দেশে একযোগে ভোট গণনা করা হবে। রাতের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ফলাফল আসতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে বিকেলের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে কারা সরকার গড়তে যাচ্ছে। সংঘর্ষ, ইভিএম বিতর্ক আর আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগের মধ্যে ৭ দফার ভোট গ্রহণ শেষে গত রোববার বিকেলে শুরু হয় এক্সিট পোলের জরিপ। এতে সব জরিপেই এনডিএকে ২৮০ থেকে ৩০৬ পর্যন্ত আসন জিততে পারে বলে আভাস দেয়া হয়। এ জরিপের ফল পেয়েই শাসক দল দিল্লিতে বিজয় শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নিতে থাকে। গত মঙ্গলবার দিল্লিতে নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানো হয় শাসক এনডিএর শরিক দলগুলোকে। আত্মবিশ্বাসী বিজেপি নেতাদের এদিনে দেখা যায় ফুরফুরে মেজাজে।
অপরদিকে বিরোধী সব দলের কার্যালয়গুলোতে নিরবতার পাশাপাশি নেতৃবৃন্দকে সতর্ক মন্তব্য করতে দেখা যায়। তবে এর মাঝেও সব বিরোধী দল একটি ক্ষেত্রে একমত পোষণ করেছেন যে, ইভিএম নিয়ে তাদের প্রশ্ন রয়েছে এবং ভিভিপিএটি স্লিপ আগে গণনা করে তবেই ইভিএমে হাত দিতে হবে। একাট্টা হয়ে বিরোধী দলগুলো গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে গিয়ে তাদের দাবিদাওয়া পেশ করে এসেছে। তাদের আরো একটি দাবি হ’ল, কোন পোলিং বুথে অসামঞ্জস্য দেখা গেলে পুরো নির্বাচনী এলাকাতে ভিভিপিএটি স্লিপ এবং ইভিএমের গণনার সংখ্যা মিলিয়ে দেখতে হবে। তবে নির্বাচন কমিশন বিরোধীদের দাবি আমলে নেয়নি। সাফ জানিয়ে দিয়েছে আগের নিয়মেই হবে ভোটগণনা। অর্থাৎ আগেই ইভিএমে গণনা করা হবে।
ইভিএম বিতর্ক এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি পর্যন্ত এ নিয়ে তার সন্দেহের কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ইভিএম নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে’, নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই সেগুলোর সুরাহা করতে হবে। মুখার্জি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন দেশের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান এবং ভারতের গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদেরকে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে হবে’।
কলকাতায় পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির তিক্ত প্রতিদ্ব›দ্বী মমতা ব্যানার্জি বিরোধী নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাতে তারা তাদের সমর্থকদের সাথে নিয়ে ইভিএম স্ট্রং রুম দিন রাত পাহারা দেয়, যতক্ষণ না বৃহস্পতিবারের ভোট গণনা শেষ হয়। সমাজবাদী দলের কর্মীদের দেখা গেছে পালাক্রমে ইভিএম স্ট্রংরুমের উপর নজর রাখতে, যাতে কোন রকমের ইভিএম অদল বদল করা না হয়। আরজেডি কর্মীরা বিহারে ইভিএমের উপর নজর রাখছে এবং তারা অভিযোগ করেছে যে, সেখানে প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। উত্তর প্রদেশের গাজিপুরের বিএসপি প্রার্থী আফজাল আনসারী একটি ভোট গণনা কেন্দ্রের সামনে ধর্নায় বসেছেন যাতে ইভিএমের নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখা গেছে যে, উত্তর প্রদেশে ভোট সম্পন্ন হবার একদিন পর গত সোমবার খোলা ট্রাকে করে ইভিএমগুলো গণনাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যেখানে কোন সুরক্ষা নেই। অথচ ওই রাজ্যে ৮০টি আসন রয়েছে রাজ্যসভার, যেটা যে কোন ভারতীয় রাজ্যের তুলনায় সর্বোচ্চ। বিরোধীদের এই দাবিগুলো মানা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত এখন নির্বাচন কমিশনের কাছে। তবে যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হলো ইভিএমের বিষয়টি ২২টি বিরোধী দলকে ভোটের ফল ঘোষণার আগেই এক জায়গায় নিয়ে এসেছে। নির্বাচন পরবর্তী জোট গড়ার ক্ষেত্রে এটাই মূল শক্তি হিসেবে কাজ করবে, এনডিএ যদি ২৭২টি আসন পেতে ব্যর্থ হয়।
ইসি’র কাছে পেশ করা স্মারকের পিছনে যে দলগুলো রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে প্রধান দলগুলো হলো: কংগ্রেস এবং ইউপিএভুক্ত অন্যান্য দল, উত্তর প্রদেশের তিনটি মহাগাটবন্ধন পার্টি - এসপি, বিএসপি এবং আরএলডি, তৃণমূল কংগ্রেস, তেলেগু দেশম পার্টি, বাম দলগুলো, আম আদমি পার্টি, এনপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর ন্যাশনাল প্যানথার্স পার্টিসহ অন্যরা।
আমরা যদি সিভোটার এবং এবিপি-নিলসেনের বুথ-ফেরত জরিপের দিকে তাকাই, তাহলে এই দলগুলোর সবগুলোর মিলিত আসনের সংখ্যা দাঁড়াবে ২১০-২২০টি। এনডিএর চেয়ে তারা পিছিয়ে থাকবে ৬০-৭০টি আসন। তবে, বিজেপি বিরোধী দলগুলোর আসন যদি ২৪০টি ছাড়িয়ে যায়, তাহলে তারা তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি, ওয়াইএসআরসিপি এবং বিজু জনতা দলের মতো দলগুলোর কাছে যেতে পারবে এবং জোট সরকার গড়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করতে পারবে। পেছনের সমঝোতার প্রচেষ্টা এরই মধ্যে চলছে এবং এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ারের মতো নেতারাও এখানে বড় ভূমিকা রাখছে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, সাউথ এশিয়ান মনিটর, এএনআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।