শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
পৃথিবীর সবচেয়ে স্বপ্নবাজ মানুষ হয় মা।একজন কন্যা সন্তান শিশুকাল থেকেই অবচেতন মনে মাতৃত্বকে ধারণ করে বেড়ে উঠে।পুতুলকে ঘুম পাড়ায়, ঘুম পাড়ানি গান শোনায়।শৈশব কৈশোর পেড়িয়ে সংসার জীবনে প্রবেশ করে সে তাঁর প্রকৃত মাতৃরূপের প্রকাশ করতে চায়।মা হওয়া মানে -পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিনতম সময়কে অতিক্রম করা। একটি জাতীয় দৈনিকে কোন এক মা দিবসে একজন মায়ের সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল-
আপনার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের সময় কী ছিল?
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন,গ্ধ আমার সন্তান প্রসবের সময়টা। ্র
আবার প্রশ্ন করা হয়েছিল-
আপনার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের সময় কোনটি ?
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন,গ্ধআমার সন্তান প্রসবের সময়টি। যখন আমি আমার সদ্য ভূমিষ্ট সন্তানের মুখ দেখেছিলাম,সব দুঃখ কষ্ট ভুলে গিয়েছিলাম। এর চেয়ে আনন্দ পৃথিবীতে আর নেই।গ্ধ
একজন মা সন্তান প্রসবের সময় কী পরিমান ব্যথা সহ্য করেন,তা আসলে অন্তর দিয়ে অনুভব করাও অন্যের জন্য অসাধ্যই বটে। ১৯৪০ সালে ড. ডি হার্ডি ও হ্যারল্ড জি ওলফ নামের দুই বিজ্ঞানী প্রমাণ করেন একজন সাধারণ মানুষ সর্বোচ্চ ৪৫ ডেল ব্যথা সহ্য করতে পারেন। আর চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে,সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় একজন মা ৫৭+ ডেল ব্যথা সহ্য করেন।তাহলে কি তিনি সাধারণ মানুষ নন? আসলে মায়েরা প্রকৃতিগত ভাবে অসাধারণই হন।›মা› শব্দটাই অসাধারণ এক বিশেষত্ব বহন করে।পৃথিবীর কোন কিছুর সাথেই তাঁর তুলনা চলেনা।
সন্তানের কষ্টে মা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পান।নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ান।কখনও কখনও মা নিজেই মা আবার নিজেই বাবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।আমার মা তিনটি অবুঝ সন্তানকে নিয়ে মাত্র বাইশ বছর বয়সে বিধবা হন।আমাদেরকে বুকে আগলে রেখে তিনি মানুষ গাড়ার স্বপ্ন দেখেছেন।অথৈ দরিয়ায় সাঁতরেছেন পাহাড় সমান কষ্টকে বুকে ধারণ করে।অসংখ্য রাত্রিতে মায়ের চাপা কান্নায় ঘুম ভেঙ্গে গেছে আমাদের।আমরা কাঁদবো বলে হয়তো তিনি শব্দ করে কান্না করতে চাননি। তবুও কান্নার শব্দকে ধরে রাখতে পারেননি।সেই শব্দে জেগে আমরা দেখেছি-বালিশ ভিজে গেছে মায়ের চোখের জলে।আমরা যখন বাবা বলে কান্না করেছি;তিনি তখন বুকে টেনে বলেছেন,গ্ধ এই যে আমি।আমিই তো তোদের বাবা।গ্ধএভাবেই আগলে রেখে বড় করেছেন আমাদের।এই তো মা।পৃথিবীর সব মায়েদের কাছেই নিজের দুঃখ কষ্ট অতি তুচ্ছ। সন্তানের সুখই তাঁর এক মাত্র আরাধ্য।
হারানো সন্তানকে সবাই ভুলে গেলও জীবদ্দশায় মা কখনও ভুলতে পারেননা।আমার পাশের বাড়ির এক চাচীকে দেখেছি-হারানো সন্তানের পথ চেয়ে আমৃত্যু অপেক্ষা করেছেন। নির্ঘুম রাত কাটাতেন,যদি সন্তান এসে তাঁকে ডাকে, জবাব না দিলে যদি ফিরে যায় ! ১৯ বছর পরেও তাঁকে সন্ধ্যা বেলায় লাঠিতে ভর দিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি সেই সন্তানের অপেক্ষায়।
এমন অসংখ্য মায়েদের বসবাস আমাদের এই পৃথিবীতে।তাই তো ইসলাম ধর্ম বলেছে-মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।কোরান হাদিসে অনেক অনেকবার মায়ের মর্যদাকে তুলে ধরা হয়েছে।অন্যান্য ধর্মেও মায়ের মর্যাদাকে সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করা হয়েছে।একজন সন্তানের জন্য মায়ের চেয়ে বড় সম্পদ আর নেই।বড় আশ্রয়দাতাও আর নেই। আব্রাহাম লিংকন বলেছেন,গ্ধ যার মা আছে সে কখনও গরীব নয়।গ্ধ
পৃথিবীর এমন কোন লেখক নেই যিনি মা›কে নিয়ে কিছু লিখেননি।
প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার পালিত হয় বিশ্ব মা দিবস। গানেও পাওয়া যায় মায়ের মর্যাদার বর্ণনা।মায়ের ঋণ কখনও শোধ করা সম্ভব নয়।গানের কথায় পাওয়া যায়-
‹মায়ের এক ধার দুধের দাম
কাটিয়া গায়ের চাম
পাপোশ বানাইলে ঋণ শোধ হবেনা।›
তাই প্রতিটি দিবসই হোক মায়েদের জন্য।অজগ্র ভালোবাসা পৃথিবীর সব মায়ের জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।