মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিদ্যাসাগরের মূর্তি রাজনীতিতে ভারতে বাগযুদ্ধ চলছে মোদি-মমতার। ‘পঞ্চধাতুর মূর্তি’ বানিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদিকে পাল্টা আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মথুরাপুরের সভা থেকে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ওই মূর্তি নেবেন না তারা। বরং নিজেরাই তৈরি করবেন বিদ্যাসাগরের মূর্তি। মূর্তি ভাঙা ‘তৃণমূলের গুন্ডা’দের কাজ বলে উত্তরপ্রদেশের মউয়ের সভায় অভিযোগ করেছেন মোদি। জবাবে ফের কান ধরে ওঠবোস প্রসঙ্গ টেনে মমতার মন্তব্য, ‘মিথ্যে কথা বলার জন্য কান ধরে ওঠবোস করা উচিত প্রধানমন্ত্রীর।’
অমিত শাহের রোড শোয়ে বিশৃঙ্খলা-সংঘর্ষের জেরে কলকাতায় ভাঙা পড়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তি। তা নিয়ে বৃহস্পতিবার মোদি বলেন, ‘তৃণমূলের গুন্ডারা’ মূর্তি ভেঙেছে। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। একই সঙ্গে বলেছিলেন, ওই জায়গাতেই বিদ্যাসাগরের পঞ্চধাতুর মূর্তি বসাবেন তারা। সেই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই মথুরাপুরের মন্দিরবাজারে নির্বাচনী সভায় যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মোদির মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে কার্যত তুই-তুকারিতে নেমে আসেন মমতা। তার সাফ জবাব, ‘উত্তরপ্রদেশে মিটিং করে বলেছে, মূর্তি বানিয়ে দেব, তোরটা থোড়াই নেব আমরা, আয়! বাংলার টাকা আছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি বানানোর। দু’শো বছর আগেকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে দিতে পারবে? জীবন গেলে জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবে?’ ওই সভাতেই মমতা ফের বলেন, ‘তোমার কাছে বাংলা ভিক্ষা চায় না।’
অমিত শাহের রোড শোয়ে সংঘর্ষ, অশান্তির জন্য বিজেপি-তৃণমূল পরস্পরকে দোষারোপ করছে। ‘তৃণমূলের গুন্ডাদের’ ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছিলেন মোদি। তথ্যপ্রমাণ এবং ভিডিয়ো হাতে আছে দাবি করে মোদির উদ্দেশে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘দু’শো বছরের ঐতিহ্য তুমি ভেঙ্গেছ, আমাদের কাছে সব ভিডিও কপি আছে। আর তুমি বলছ, তৃণমূল কংগ্রেস করেছে, লজ্জা করে না? কান ধরে ওঠবোস করা উচিত এই প্রধানমন্ত্রীর। এক বার নয়, লাখবার। মিথ্যে কথা বলার জন্য। মিথ্যেবাদী! হয় প্রমাণ কর, নইলে তোমাকে কিন্তু আমরা জেলে টানব। তার কারণ, আমরা কিন্তু ছেড়ে কথা বলার লোক নই। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, নথি আছে। নথি নিজেই কথা বলবে। আইন আইনের পথেই চলবে।’
দু’দিন আগেই ক্যানিংয়ের সভা থেকে অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘সোনার বাংলাকে কাঙাল’ করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সেই আক্রমণের জবাবে মমতা বলেন, ‘তোমার নেতা, ওই অমিত শাহ, গুন্ডা, কী বলে গিয়েছে বাংলায়? বাংলাকে কাঙাল বলে গিয়েছে তোমার পার্টি। মনে রেখ, বাংলার একটা মানুষও বিজেপি করবেন না, বিজেপির সঙ্গে যাবেন না।’ একই সঙ্গে কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে মমতা বলেন, ‘যারা যাবেন (বিজেপির সঙ্গে) তারা জেনে রাখুন, আগামি দিনে সমাজ তাদের গ্রহণ করবে না। ভালবাসবে না। যারা টাকার জন্য গিয়েছেন, তারা জেনে রাখুন, মোদি বলেছিল, বছরে দু’কোটি চাকরি দেবেন। একটাও তো দেয়নি, উপরন্তু আরও তিন কোটির চাকরি ছিল, তারা বেকার হয়ে গিয়েছেন। ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে আপনার আমলে।’
রাজ্যে প্রচারে এসে মোদি-অমিত শাহরা বার বারই চিট ফান্ড নিয়ে সরব হয়েছেন। এ বার বিজেপির বিরুদ্ধেই পাল্টা চিট ফান্ডে মদত দেওয়ার অভিযোগ আনলেন মমতা। বৃহস্পতিবার মোদির একটি সভা রয়েছে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্র এলাকায়। সেই প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আজ যেখানে মিটিং করছেন, যান গিয়ে খোঁজ নিয়ে আসুন। চিটফান্ডের কথা বলে। মিস্টার প্রবীর মণ্ডল। মাইক্রো ফাইনান্স উইদাউট লাইসেন্স। সব ডকুমেন্ট পেয়ে গেছি আমি। লোকাল পুলিশকে দিয়ে দেব, কেস শুরু করার জন্য। এই লোকটার বিরুদ্ধে।’ ওই ব্যক্তি কোটি কোটি টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘বিজেপিকে ভাগ দিচ্ছে কি?’
এই সময় মমতার হাতে এক গুচ্ছ কাগজও দেখা যায়। সেগুলি জনসভার মঞ্চ থেকেই দেখান তিনি। সব মিলিয়ে কার্যত রণং দেহি মেজাজে মোদি-অমিত শাহের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই নজিরবিহীন ভাবে এ রাজ্যে শেষ দফার নির্বাচনের জন্য এক দিন আগেই প্রচার শেষের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘আজকেই প্রচার বন্ধ করে দিয়ে আমার কাঁচকলা করবে।’ সব কর্মসূচি শেষ করে দেবেন বলেও জানান মমতা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।