মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন টাইম সাময়িকীর প্রচ্ছদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সে দেশের 'ডিভাইডার-ইন-চিফ' বা প্রধান বিভাজনকারী বলে বর্ণনা করার পর তা নিয়ে বিতর্ক চরমে ওঠেছে।
মি মোদীর দল বিজেপি দাবি করছে টাইমের ওই নিবন্ধ পাকিস্তানি চক্রান্তের অংশ এবং নিবন্ধের লেখক নিজেও একজন পাকিস্তানি নাগরিক।
বিরোধী কংগ্রেস অবশ্য টাইমের ওই বর্ণনাকে পুরোপুরি সঠিক বলে মনে করছে - এবং ভারতেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই বলছেন নরেন্দ্র মোদী যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর আস্থা হারাচ্ছেন এটা তারই সবশেষ প্রমাণ।
টাইমের সাম্প্রতিকতম সংখ্যার প্রচ্ছদে আবারও জায়গা করে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী - গত চার বছরের মধ্যে এনিয়ে দ্বিতীয়বার।
কিন্তু এবারের বর্ণনা তার জন্য আদৌ স্বস্তিদায়ক নয়, কারণ সেখানে দাবি করা হয়েছে ভারতে যে চরম বিভাজনের রাজনীতি চলছে তার মূল কান্ডারী তিনিই।
নিবন্ধটি লিখেছেন লন্ডনের ঔপন্যাসিক আতিস তাসির, যিনি ভারতীয় সাংবাদিক তাভলিন সিং ও পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী সালমান তাসিরের ছেলে।
প্রচ্ছদ নিবন্ধটি প্রকাশিত হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র দাবি করেন, "লেখক আতিস তাসির একজন পাকিস্তানি নাগরিক - আর তার লেখা টুইট করছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।"
"পাকিস্তানের কাছ থেকে কীই বা আর আশা করা যায়? বালাকোটে বিমান হামলা চালিয়ে যেভাবে মোদীজি পাকিস্তানকে মুখের মতো জবাব দিয়েছেন তার পর থেকেই তাদের একমাত্র এজেন্ডা হল বিশ্বে তার ছবিকে কলঙ্কিত করা।"
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশেও এই নিবন্ধকে তুলোধোনা করা হচ্ছে।
ভারতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে।
জি গ্রুপের টিভি নিউজ চ্যানেলেও প্রেজেন্টার পালকি শর্মা যেমন পরিষ্কার বলছিলেন, "এই নিবন্ধে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে ভারত কি আরও পাঁচ বছরের মোদী শাসন সহ্য করতে পারবে? কিংবা ভারত কি আগে কখনও এতটা বিভক্ত ছিল?"
"প্রশ্নগুলো ভাল - কিন্তু টাইম ম্যাগাজিন এর কোনও উত্তর দিতে পারেনি, নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে পেশ করেনি কোনও তথ্য-উপাত্তও। ফলে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে - টাইম ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটা ক্যাম্পেন চালাচ্ছে।"
প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস অবশ্য টাইম ম্যাগাজিনের এই বর্ণনায় কোনও ভুল দেখছে না।
দলের মুখপাত্র রাগিণী নাইক যেমন বলছিলেন, "২০১৫তে এই টাইম ম্যাগাজিনই কিন্তু বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে জেতার পর মোদীকে নিয়ে প্রচ্ছদ করেছিল, প্রশ্ন তুলেছিল তিনি কি পারবেন নিজের প্রতিশ্রুতি রাখতে?"
"আজ চার বছর পর কিন্তু এসে দেখা যাচ্ছে, তিনি ধর্মীয় বিদ্বেষ আর বিভাজনের ভিত্তিতে ভোটে লড়ছেন। শতাধিক জনসভায় কতবার তিনি সবাইকে নিয়ে চলার শ্লোগান উচ্চারণ করেছেন?"
রাজনৈতিক ভাষ্যকার শেখর গুপ্তাও মনে করছেন, মোদীকে নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যমের যে মোহভঙ্গ হচ্ছে এই নিবন্ধ তারই প্রমাণ।
তার কথায়, "নরেন্দ্র মোদী সেই অর্থে কখনওই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রিয় ছিলেন না - যেমনটা ছিলেন রাজীব গান্ধী, অন্তত তার প্রথম কয়েক বছরে।"
"গুজরাট দাঙ্গার সময় থেকেই পশ্চিমা প্রেস মোদীকে সন্দেহের চোখে দেখত - কিন্তু তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেটা ধীরে ধরে বদলাতে থাকে।"
"বিরাট বৈচিত্র্যময় এক দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি নিজেকে পাল্টে নেবেন, তার হাত ধরে অর্থনীতির চাকা ঘুরবে, এই আশাটাও দানা বাঁধতে থাকে।"
"কিন্তু এখন সেটা একেবারে চুরমার হয়ে গেছে - আমার তো মনে পড়ে না কোনও ভারতীয় নেতাকে আন্তর্জাতিক মিডিয়া এতটা কঠোর আক্রমণ করেছে বলে!", বিবিসিকে বলছিলেন মি গুপ্তা।
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের মাঝপথে টাইমের এই প্রচ্ছদ নিবন্ধ নিয়ে অতএব তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে।
সেই সঙ্গে টুইটারে ট্রেন্ড করছে #ইন্ডিয়া'স ডিভাইডার - আর লেখক আতিস তাসিরের উইকিপিডিয়া পেজ ভারত থেকে এতবার হামলার শিকার হয়েছে যে কর্তৃপক্ষ সেটির এডিটিংয়ের সুযোগই বন্ধ করে দিয়েছেন।
সূত্র: বিবিসি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।