শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
কান্তজির মন্দির বাংলাদেশের উত্তর- পশ্চিমাংশে অবস্থিত শেষ মধ্যযুগীয় একটি হিন্দু ধর্মীয় মন্দির।এটি অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগের একটি ধর্মীয় স্থাপনা ও মুঘল আমলের শেষ দিকের বৈশিষ্ট্যমন্ডিত একটি নবরতœ মন্দির।
মন্দিরটি হিন্দুদের দেবতা কৃষ্ণের নামানুসারে রাখা হয়।রাধা-কৃষ্ণের অমর প্রেমের কীর্তিকে স্বরনীয় রাখতে মিন্দিরটি নির্মান করা হয়।এটি বাংলাদেশের পোড়ামাটি স্থাপত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।মন্দিরের উত্তর দিকের শিলালিপি থেকে জানাযায় ১৭২২ খিষ্টাব্দে তথকালীন দিনাজপুরের জমিদার মহারাজা প্রাননাথ তার জীবদ্দশার শেষ দিকে মন্দিরটির নির্মাণকাজ শুরু করেন।কিন্তু মন্দিরের কাজ সমাপ্তির পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরন করেন।তার মৃত্যুর পর মহারাজা প্রাননাথের পোষ্যপুত্র রামনাথ রায় তার পিতার ইচ্ছা পুরনার্থে রুক্নিনীকে (রাধা)স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য মন্দিরের কাজ আবার শুরু করেন এবং ১৭৫২ খিষ্টাব্দে মন্দিরের নির্মান কাজ সমাপ্ত করেন।
মন্দিরটি মাটি থেকে ১ মিটার উচ্চতায় আয়তাকার একটি প্লাটফর্মের উপর নির্মিত।ভূমি থেকে মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ৭০ মিটার।মন্দিরের চারিপাশে চারটি প্রশস্ত বারান্দা রয়েছে।বারান্দা ও মূল বেদির মাঝখানে চারিপাশে রয়েছে ৪ টি করে খিলান্দ্বার।প্রতি পার্শ্বে দুটি করে সুসজ্জিত পিলার দ্বারা প্রতিটি খিলানদ্বার বিভক্ত।নীচতলায় বারান্দা ও খিলান দ্বারের সংখা ২১টি।দ্বিতীয় তলায় ২৭ টি এবং তৃতীয় তলায় ৩ টি প্রবেশ দ্বার রয়েছে।মন্দিরের উত্তর-পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে আড়াই ফুট প্রস্থের একটি ছোট্ট সিড়ি তৃতীয় তলা পর্যন্ত উঠে গেছে।মন্দিরটির দ্বিতীয় তলার চারকোনে চারটি এবং তৃতীয় তলায় পাচটি টি চূড়া রয়েছে।তবে ১৮৯৭ সালের ভুমিকম্পে মন্দিরের তৃতীয় তলার ৯টি চূড়াই সম্পূর্নরুপে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।বিশ দশকের প্রথমদিকে মহারাজা গিরিজা নাথ বাহাদুর মন্দিরের ব্যাপক সংস্কার করলেও মন্দিরের চূড়াগুলো আর সংস্কার করা হয়নি।তাই বর্তমান মন্দিরটির উচ্চতা দাড়িয়েছে ৫০ ফুট। বর্তমান মন্দিরটির উত্তর-পশ্চিম-পার্শ্বে রাজা প্রাননাথ ১৭০৪ সালে প্রথম একটি কৃষ্ণ মন্দির নির্মান করেন এবং বৃন্দাবন থেকে রাধা-কৃষ্ণের যুগল মূর্তি এনে সেখানে স্থাপন করেন।রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহটি পরবর্তীতে বর্তমান মন্দিরে স্থাপন করেন।কান্তজির মন্দিরটির দেওয়ালে সতের হাজার টেরাকোটা টাইলস বসানো আছে।এই টেরাকোটা টাইলসগুলো একটি অপরটির সাথে কোন মিল নেই।এ সমস্ত পোড়ামাটির ফলকগুলোর গায়ে মধ্যযুগের শেষ দিকের বাংলার সামাজিক জীবনের নানা কাহিনী বিবৃত রয়েছে।চিত্রায়িত হয়েছে সুলতানি আমলের রাজকীয় গরুর গাড়ি,হাতি,ঘোড়া ও উটের রাজকীয় সজ্জা,মুঘল আমলের পোষাক ও তরবারিসহ রামায়ন- মহাভারতের বিভিন্ন পৌরানিক কাহিনীর অংশ।পোড়ামাটির এ অলংকারগুলি ৭ম-৮ম শতাব্দীতে পাল বংশের বৌদ্ধ মন্দিরগুলিতে পাওয়া অন্যান্য পোড়ামাটির কাজ থেকে সম্পূর্ন ভিন্ন প্রকৃতির।সেকারনে কান্তজির মন্দির বাংলাদেশের সেরা অপার সৌন্দর্যের মন্দির।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।