Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ড. কামালের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড : বিএনপির অভ্যন্তরেও ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ড. কামাল হোসেনকে ঐক্যফ্রন্টের নেতা বানিয়ে বিএনপির কি কোনো লাভ হয়েছে? বিএনপির কি নেতার এতই আকাল পড়েছিল যে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কামাল হোসেনের দুয়ারে তাকে ধরনা দিতে হয়েছে? শুরুতেই বিএনপির এই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছিলেন অনেকেই। কেউ প্রকাশ্যে, কেউ পর্দার অন্তরালে। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। আজও ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী এবং জাতীয়তাবাদী ঘরানার লোকজনদের কাছে এই বিষয়টি বোধগম্য নয় যে, ২০১৮ সালের এপ্রিল-মে থেকেই নেতৃত্ব ধার করার জন্য বিএনপি ব্যস্ত হয়েছিল কেন? প্রথমে দলটি বলে, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কথা। সেই ঐক্য গড়ার আগে নেতৃত্বের জন্য যার দরজায় প্রথম কড়া নাড়া হয়েছিল তিনি হলেন ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গত বছর বিএনপির ইফতার মাহফিলে ডা. বি চৌধুরী, আসম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না এবং কাদের সিদ্দিকীকে অত্যন্ত সম্মানের সাথে রিসিভ করা হয় এবং তাদের জন্য বসার স্পেশাল অ্যারেঞ্জমেন্ট করা হয়। ঐ মাহফিলেই মির্জা ফখরুল ডা. বি চৌধুরীকে ‘আমাদের অভিভাবক’ বলে অ্যাড্রেস করেন। আমাদের অভিভাবক সম্বোধনটি সেই সময়েই অনেক সিনিয়র নেতার কাছে অস্বস্তিকর ঠেকে। তার পরেও তারা এই তোষামোদি মেনে নেন।
এরপর দেখা যায়, ঐক্যজোটের নামে বিএনপি একটি যুক্তফ্রন্ট গঠন করেছে। সেই যুক্তফ্রন্টের প্রধান করা হয় ডা. বি চৌধুরীকে। ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য অংশীদার ছিলেন আসম রবের জেএসডি এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য। তখনও কাদের সিদ্দিকী যুক্তফ্রন্টে যোগ দেননি। পরের ঘটনা সকলেই জানেন। আসন ভাগাভাগি এবং জামায়াত প্রশ্নে বি চৌধুরী এবং তার পুত্র মাহি বি চৌধুরী অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করেন এবং যুক্তফ্রন্ট তাদেরকে বাদ দেয়। বি চৌধুরী ঐক্যজোট থেকে আউট হন, আর ইন করেন ড. কামাল হোসেন। ড. কামাল হোসেন এলে তার ওপর ঐক্যফ্রন্টের সর্বময় নেতৃত্ব অর্পণ করা হয়। কামাল হোসেন আসার পরপরই আসেন কাদের সিদ্দিকী এবং সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। ঐক্যফ্রন্টকে নিয়ে বিএনপি বেশ মাতামাতি করে। সে ঐক্যফ্রন্টকে যত সামনে নিয়ে যায় তার ২০ দলীয় ঐক্য জোট ততই পেছনে চলে যেতে থাকে। চলে যেতে থাকে না বলে বরং বলা যায় যে তাদেরকে পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়।
যুক্তফ্রন্ট বলুন আর ঐক্যফ্রন্ট বলুন, আসম আব্দুর রবের জেএসডি এবং মান্নার নাগরিক ঐক্য নিয়ে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু কামাল হোসেন আসার পর থেকেই বিরোধী দলের রাজনীতির চেহারাই যেন পাল্টে যায়। ঐক্যফ্রন্ট সারাদেশে নির্বাচন উপলক্ষে সাকুল্যে মাত্র ৪টি জনসভা করে। এই স্থানগুলি হলো ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী। সবগুলি সভাতেই সুলতান মনসুর জওহর কোট (পন্ডিত নেহরুর এই জওহর কোটই বাংলাদেশে মুজিব কোট নামে পরিচিত হয়েছে) পরে বক্তৃতা করেন। প্রতিটি বক্তৃতাতেই তিনি ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধ’ু ও বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের কথা বলেন। ৪টি জনসভাই লক্ষ লক্ষ লোকে পরিপূর্ণ হয়। সভাগুলি অ্যারেঞ্জ করে বিএনপি। কিন্তু বিএনপির জড়ো করা লক্ষ লোকের সমাবেশে কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের বিশেষ নেতা এবং বিশেষ আদর্শের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকেন। কোনো একটি সভাতেও তিনি শহীদ জিয়াউর রহমানের নাম ভুলেও উচ্চারণ করেননি।
সেই কামাল হোসেন দলের মধ্যে বাকশাল আমলের গভর্নর শেখ হাসিনার তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাঈদ, ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগের টিকেটে ইলেকশন করা মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, সুলতান মনসুর, মোকাব্বির খান প্রমুখকে আমদানি করেন। বেগম জিয়ার মুক্তি প্রশ্নে তিনি লিপ সার্ভিস দেন।
নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। প্রায় প্রতিটি প্রার্থীর নির্বাচনী সভায় হামলা করা হয় এবং তাদের হামলায় অনেক প্রার্থী গুরুতর জখম হন। এসবের বিরুদ্ধে নাগরিক ঐক্য এবং জাসদ রাজপথে নামতে চাইলে কামাল হোসেন শান্তি এবং নিয়মতান্ত্রিকতার দোহাই দিয়ে বিএনপিকে রাজপথে নামতে বিরত করেন।
এসব ঘটনা সকলেরই জানা। নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হওয়ার পর নাগরিক ঐক্য এবং জেএসডির তরফ থেকে সারাদেশে ৩ দিন ব্যাপী লাগাতার হরতালের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু দুর্বোধ্য কারণে ড. কামাল হোসেন এবং মির্জা ফখরুলের সম্মতি না পাওয়ার কারণে হরতাল তো দূরের কথা, কোনোরূপ প্রতিবাদী বা রাজপথে কর্মসূচি দেওয়া থেকেও ঐক্যফ্রন্ট বিরত থাকে। নির্বাচন মানি না, পার্লামেন্ট মানি না এবং পুনর্নির্বাচন চাই- এই কটি কথা প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বলেই বিএনপি এবং কামাল হোসেন তাদের প্রতিবাদী কর্মসূচি শেষ করেন।
দুই
নির্বাচনের পর প্রায় ৪ মাস হয়ে গেল। কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্ট বা মির্জা ফখরুলের বিএনপি ভোট ডাকাতির নির্বাচন সম্পর্কে সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত এবং উদাসীন হয়ে যায়। মাঝে মাঝে প্রেস ব্রিফিং এবং মানববন্ধনের মধ্যেই তাদের প্রতিবাদ সীমাবদ্ধ রাখে। যে পানিতে স্রোত নাই সেখানে শ্যাওলা পড়ে। বিএনপি নিষ্ক্রিয়। তাই সেখানেও শ্যাওলা পড়েছে। কিন্তু কামাল হোসেনের ভূমিকা বড়ই অদ্ভুত এবং রহস্যময়। বিএনপির জাহিদুর রহমান শপথ নিয়েছেন। বিএনপি তাকে বহিষ্কার করেছে এবং বলেছে যে, ভবিষ্যতে তার পরিবারের জন্যও বিএনপির দুয়ার বন্ধ হয়ে যাবে। সুলতান মনসুর এবং মোকাব্বির খানও শপথ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেন এখন পর্যন্ত তাদেরকে বহিষ্কার করেননি। ভেতরের খবর নিয়ে জানা যায় যে, মোকাব্বির খানকে নাকি শো’কজ করার কথা ছিল। সেটিও করা হয়নি। এদের ব্যাপারে বিশেষ করে মোকাব্বির খানের ব্যাপারে কামাল হোসেন ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নীতি ফলো করছেন বলে চারদিক থেকে আওয়াজ উঠেছে। তাঁর দলের অন্যতম নেতা পথিক অভিযোগ করেছেন যে, মোকাব্বির খান যখন কামাল হোসেনের মতিঝিল অফিসে দেখা করেন তখন তিনি তাকে নাকি বলেন, যে শপথ নিওনা। আবার সেই একই মোকাব্বির খান যখন কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় গিয়ে তার সাথে দেখা করেন তখন তিনি বলেন, শপথ গ্রহণ করো।
সেই মোকাব্বির খান গত ২৭ এপ্রিল শনিবার অনুষ্ঠিত গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল সভায় মঞ্চে কামাল হোসেনের দুইটি চেয়ারের পরের চেয়ারেই উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি নাকি ড. কামালের গাড়ি বহরের সাথেই কাউন্সিল সভায় যোগ দেন।
আমি অত্যন্ত বিশ^স্ত সূত্রে খবর পেয়েছি যে, ঐ বিশেষ কাউন্সিল সভাটি ডাকা হয়েছিল গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে তার পদ থেকে বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে। এটি আগে ভাগেই জানতে পেরে মন্টু কাউন্সিল সভায় আসেননি। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় মন্টু তার নেতা কামাল হোসেনের ডাবল স্টান্ডার্ড নীতি বিশেষ করে মনসুর এবং মোকাব্বিরকে নিয়ে চোর-পুলিশ খেলা মেনে নিতে পারছেন না। কামাল হোসেন চেয়েছিলেন, ২৭ তারিখের কাউন্সিল সভায় পরলোকগত আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া অথবা বাকশাল আমলে পাবনার গভর্নর ডেজিগনেট অধ্যাপক আবু সাঈদকে জেনারেল সেক্রেটারি করতে। কিন্তু কাউন্সিল সভাতেই একটি অংশ মোকাব্বিরের ব্যাপারে বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রকাশ্য প্রতিবাদ করায় কামাল হোসেন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য শনিবার কোনো রদবদল করেননি।
এমন একজন ডুবিয়াস (উঁনরড়ঁং) চরিত্রের লোককে বিএনপি আর কতদিন নেতা মানবে, এই নিয়ে বিএনপির সিনিয়র লেভেলেও কথা উঠেছে। মেজর হাফিজ উদ্দিন ইতোপূর্বে প্রকাশ্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বের সমালোচনা করেছেন। ২০ দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শরীক এলডিপির নেতা কর্নেল অলি আহমেদ কামাল হোসেনসহ আরও দুই একজনের নাম করে বলেছেন যে, ওরা নাকি সরকারের টাকা খেয়ে বিএনপিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছেন। এসব খবর কতদূর সত্য আমরা জানি না। কিন্তু একাধিক পত্রপত্রিকায় এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ড. কামাল হোসেনের অপরিচ্ছন্ন এবং রহস্যময় ভূমিকা সম্পর্কে এখন আর শুধু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাঝেই আলোচনা হচ্ছে না, সেটি এখন পত্রিকার পাতাতেও উঠে এসেছে।
তিন
গত রবিবার দৈনিক ইনকিলাবের প্রথম পৃষ্ঠায় এ সম্পর্কে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তার অংশ বিশেষ নিম্নরূপ:
মোকাব্বির খান ইস্যুতে ড. কামাল নিজেই অপরিচ্ছন্ন রাজনীতি চর্চা করছেন। দলের নেতাকর্মীদের অন্ধকারে রেখেছেন। মতিঝিলের অফিসে এলে মোকাব্বিরকে বের করে দেন; বেইলি রোডের বাসায় গেলে সংসদে যাওয়ার পরামর্শ দেন; আবার মহানগর নাট্যমঞ্চে বিশেষ কাউন্সিলে পাশে বসিয়ে বক্তৃতা করেন। প্রবীণ এই রাজনীতিকের ত্রিমুখী নীতির প্রতিবাদে গণফোরামে উঠেছে ঝড়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘সুবোধ বালকের মতো’ ঐক্যফ্রন্টে অংশ গ্রহণের মাধ্যমে বিএনপিকে ‘ঘুম পাড়িয়ে’ রেখেছিলেন ড. কামাল হোসেন। সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসিন মন্টু কাউন্সিল বর্জন করেন এবং রফিকুল ইসলাম পথিক পদত্যাগ করেন। আরো কয়েকজন নেতা পদত্যাগের হুমকি দেন।
ড. কামালের দুর্বোধ্য , ধোঁয়াশে ও রহস্যময় আচরণের জন্য ১৯৯৩ সালে গণফোরাম গঠন করলেও ১৬ বছর পর ২০১৯ সালে এই দলটি সম্পূর্ণভাবে নেতা ও কর্মী শূন্য হয়ে গেছে। অথচ শুরুতে এই দলে ছিলেন সিপিবি নেতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক, আওয়ামী লীগ নেতা সামসুদ্দোহা এমপি, ন্যাপ নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা ১২/১৩ বছরের অর্থ মন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠকারী শাহজাহান সিরাজ, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রউফ প্রমুখ। এখন তারা সকলেই তাকে ছেড়ে চলে গেছেন।
চার
ড. কামালের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড সম্পর্কে ২৮ এপ্রিল দৈনিক যুগান্তরে প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকেই ড. কামাল হোসেনের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে নির্বাচনের আগের দিন ভোট কারচুপির অভিযোগ উঠলেও ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা হয়ে তিনি এর প্রতিবাদে কোনো উদ্যোগই নেননি। উল্টো নির্বাচনের দিন নিজের ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এখন পর্যন্ত ভোট মোটামুটি সুষ্ঠু হয়েছে। নির্বাচনে যাওয়া, শেষ পর্যন্ত বিএনপিকে নির্বাচনে রাখা এবং গণফোরামের দুই এমপির শপথের বিষয়টি একই সূত্রে গাঁথা বলেও তারা মনে করেন। মনসুরকে লোক দেখানো বহিষ্কার করা হলেও মোকাব্বিরের ক্ষেত্রে সেটাও করা হয়নি। শপথ নেয়ার পর শোকজ করেই দায়িত্ব শেষ করেন গণফোরামের নেতারা। ড. কামাল হোসেনের পরামর্শে শপথ নিয়েছি- মোকাব্বির এমন দাবি করলেও গণফোরাম সভাপতি তাতে প্রতিবাদ করেননি।
বিএনপির নিষ্ক্রিয়তা সম্পর্কে দলটির বিরুদ্ধে নানান রকম সমালোচনা থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ গ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত সিরিয়াসলি নিয়েছে বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ায় ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান জাহিদকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সব ধরনের পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে তার সংসদ সদস্য পদ বাতিলে স্পিকার ও নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেয়ার এবং সর্বশেষ আদালতের আশ্রয় নেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যদি বাকি এমপিরাও শপথ নেন তাহলে তাদের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির সবোর্চ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।
ড. কামালের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড বা দ্বৈত ভূমিকা নিয়ে ইতোমধ্যেই বিএনপির অভ্যন্তরে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট যদি রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয়তা অব্যাহত রাখে তাহলে এই ভুল বোঝাবুঝি বাড়তেই থাকবে। এর ফলে চূড়ান্ত পরিণামে লাভ হবে সরকারের। তাই বিএনপির উচিত, ড. কামালকে সরাসরি বলা যে, তিনি যেন তার অবস্থান পরিষ্কার করেন এবং এই সংসদ বাতিল করে নতুন সংসদ নির্বাচন দাবির পক্ষে বিএনপির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে আন্দোলনে নামেন। আর সেটি যদি তিনি করতে রাজি না হন তাহলে ঐক্যফ্রন্টের স্বয়ংক্রিয় মৃত্যু ঘটতে দেওয়া হোক। জনগণ যে রকম উত্তপ্ত হয়ে আছে, সেখানে বিএনপি সাহস করে মাঠে নামলেই তাদের পেছনে হাজার হাজার লোক পাবে। জেএসডি, নাগরিক ঐক্য এবং জামায়াতও তাদের পেছনে কাতার বন্দি হয়ে রাস্তায় নামবে। আর শ্যাওলা ও আগাছাগুলো আন্দোলনের তোড়ে ভেসে যাবে।
[email protected]



 

Show all comments
  • Magfur Rahman Jannat ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২১ এএম says : 0
    দারুন, সেই কবে থেকে বলছি
    Total Reply(0) Reply
  • M M Rahman Bhuiyan ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২১ এএম says : 0
    দিলদার ,টেলিসামাদ,আনিস সহ সব কৌতুক অভিনেতারা মারা গেছে, বিএনপি এখনও টিকে আছে বলে মানুষ একটু বিনোদন পায়। না হলে হাসির অভাবে লক্ষ মানুষ প্রতিদিন মারা যেত।
    Total Reply(0) Reply
  • msIqbal ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২২ এএম says : 0
    মির্জা বাড়ির গর্বিত সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা (!?) ফখরুল ইসলাম ছাড়া এই সংসদ মানি, মানব না! সংবিধান সংশোধন করে হলেও শপথের সময়সীমা আরো তিন মাস বাড়ানো হোক! আহারে, বেচারা বড্ডো একা হয়ে গেলো গো!
    Total Reply(0) Reply
  • monirul islam ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২২ এএম says : 0
    বিএনপি কি বোকার দল! নাকি খালেদা জিয়ার আটকের মাধ্যমে, বিএনপিকে মাইনকার চিপায় ফালাইছে। ধন্যবাদ তাদেরকে,যারা বিএনপিকে এই অবস্থায় দাড় করিয়েছে,যে একটা মশা তাড়াবে এমন আন্দোলনও বিএনপি করতে জানেনা। অধিকার আদায়ের আন্দোলনই যদি না জানে তবে কিসের জন্য রাজনীতি। বিএনপি কি ক্ষমতায় থাকা কালীন আওয়ামীলীগের ওপর চাপ সৃষ্টি করেনাই ¿ আওয়ামীলীগ কি আন্দোলন করেনাই----। দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক ও দুর্নীতি মুক্ত উন্নয়ন হউক এটাই কামনা।
    Total Reply(0) Reply
  • শিক্ষিত মূর্খ ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২২ এএম says : 0
    যদি দল, জনগন বা দেশের চিন্তা থেকে শপথ নেয়ার হতো তবে সেটা অনেক আগেই নেয়া হতো। এভাবে টম এন্ড জেরি বা সার্কাস খেলার কোন মানে হয় না। শেষ মুহুর্তে সিন্ধান্ত নেয়ার মানে হলো এখানে ব্যক্তি স্বার্থ চরমভাবে জড়িত। আন্দোলনের অংশ হেন-তেন বলে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের এই সার্কাস বন্ধ করতে হবে। আর হে, গনফোরামের দুজন বিএনপির নামে মানহানীর মামলা করতে পারেন। এই সংসদে যোগ দেয়া নিয়ে তাদেরকে এত-এত অসম্মান করার পর বিএনপি নিজেরাই ডিগবাজি দিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Ashraf U Khan ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২৩ এএম says : 0
    কামাল হোসেনের নিজের রাজনীতির প্রাথমিক ট্রেনিং ক্যাম্প এবং তার ফ্যাকাল্টিদের কথা মনে রাখলেই সদুত্তর পাওয়া যাবে ।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ এনায়েত উল্লাহ্‌ ৩০ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
    রাজনীতিতে নীতি, নৈতিকতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়চেতা না হলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। গণফোরামের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ড. কামাল


আরও
আরও পড়ুন