নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সেমিফাইনালে জায়গা পেল বাংলাদেশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গ্রুপের শেষ ম্যাচে লাল-সবুজের মেয়েরা ২-১ গোলে কিরগিজস্তানকে হারিয়ে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট পেয়েই শেষ চারে উঠলো। বিজয়ী দলের হয়ে মিডফিল্ডার সানজিদা আক্তার ও ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার একটি করে গোল করেন। কিরগিজদের পক্ষে এক গোল শোধ দেন বদলি ডিফেন্ডার আখমাতকুলভা জাইরিনা।
চ্যাম্পিয়ন হয়ে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্য বাংলাদেশের মেয়েদের। সানজিদা-কৃষ্ণার চমকে লক্ষ্যপূরণের প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছে তারা। এবার পালা ফাইনালের পথে এগিয়ে যাওয়া। তবে অনুর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে এই কিরগিজস্তানকে ১০ গোল দেয়ার কৃতিত্ব থাকলেও বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দলের মেয়েরা দু’টির বেশী গোল দিতে পারেনি। ম্যাচে স্বাগতিক দল হাফ ডজন গোল মিস করেছে। ভাগ্য ভালো বলতে হবে গোল মিসের মহড়ায় শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে ঘরে ফিরতে পেরেছে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। ম্যাচে অসাধারণ দুর্দান্ত দু’টি গোল উপহার দিয়েছেন সানজিদা ও কৃষ্ণা। যার সুবাদে জয় পেয়েই গ্রুপ সেরার খেতাব পায় বাংলাদেশ। আগেই দু’দলের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় হাতছানি ছিল গ্রুপ সেরা হওয়ার। যেখানে জয় হয় স্বাগতিক দলের।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রায় ৭/৮ হাজার দর্শকের সমাগম ঘটে। বিকেল তিনটা থেকেই স্টেডিয়াম চত্বর হয়ে ওঠে সরগরম। পশ্চিম গ্যালারি ছিল দর্শকে ঠাসা। ভিআইপি গ্যালারিতে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়েই স্বাগতিক মেয়েদের খেলা দেখেছেন ফুটবলপ্রেমী দর্শকরা। ঘরের মাঠে স্থানীয় দর্শকদের মূহুর্মূহু করতালিতে প্রেরণা পেয়ে জ্বলে ওঠেন কৃষ্ণা-মারিয়ারা।
ম্যাচে এক চেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করে খেলেও দু’টির বেশী গোল পায়নি স্বাগতিক দল। এর মূল কারণই হলো ফিনিশিং অভাব। ফের এই সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে স্বাগতিক দলের খেলায়। তাদের একের পর এক শট আটকে গেছে কিরগিজস্তানের গোলরক্ষক তলোনোভার হাতে। বেশ কিছু নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মৌসুমীরা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে এই ফিনিশিংয়ের অভাবেই বড় জয় ধরা দেয়নি। কালও দেখা গেছে একই দৃশ্য। কেবলমাত্র ফিনিশিংয়ের অভাবেই আরো ৫/৬ টি গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ দল।
ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে কিরগিজস্তান। যার ফলে মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই পিছিয়ে পড়ে কিরগিজরা। এসময় বাঁ প্রান্ত দিয়ে ফরোয়ার্ড কৃষ্ণার শট গ্রিপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক তোলোনোভা। ফিরতি বলে বাঁ পায়ের দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করে লাল-সবুজদের প্রথম গোল উপহার দেন সানজিদা (১-০)। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপে এখন পর্যন্ত এটিই সব চেয়ে দ্রুততম গোলের রেকর্ড। ১৩ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে সানজিদার বাড়িয়ে দেয়া বল ডান পায়ে কোনাকোনি শট নেন কৃষ্ণা। গোলরক্ষক বলের গতিপথ বদলে দেয়াতে নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের অন্তিম সময়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে দারুণ নৈপূন্যে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট করেন মার্জিয়া। বাঁ পোস্ট ঘেষে বল চলে যায় বাইরে। ম্যাচের ৬০ মিনিটে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান প্রান্ত থেকে শট নেন সানজিদা। গোলরক্ষক বল হাতে নিয়েও ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। সেই সুযোগে হেডে গোল করেন কৃষ্ণা রানী সরকার (২-০)। তবে ৭৯ মিনিটে এক গোল শোধ দিয়ে ব্যবধান কমায় কিরগিজস্তান। এসময় ডান প্রান্ত দিয়ে বদলি খেলোয়াড় আখমাতকুলভা জাইরিনার দুর্দন্ত শট আটকাতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমা (১-২)। এর কিছুক্ষণ পরই সানজিদা গোলের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন। ৮৬ মিনিটে শামসুন্নাহারের পাস থেকে বল পান সাজেদা। কিরগিজ গোলরক্ষক সামনে এগিয়ে আসলেও সুযোগটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন এই বদলী ফরোয়ার্ড। মৗাচের বাকি সময় আর কোন গোল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।