Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাকরি যাবে না, দুর্গাপুরে আশ্বাস মমতার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৫৯ পিএম

বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা রাজ্য সরকারের হাতে কেন্দ্র তুলে দিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতা এই ‘প্রস্তাব’ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। সেই সঙ্গে ‘ডিপিএল’-এর (দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড) কোনও কর্মীর চাকরি যাবে না, দিয়েছেন এমন আশ্বাসও।

বর্ধমান-দুর্গাপুর এবং আসানসোল—এই দুই লোকসভা কেন্দ্র এলাকার রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের অবস্থা নিয়ে এ দিন মমতা সরব হন। ‘এইচএফসিএল’ (হিন্দুস্তান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন লিমিটেড)-এর মতো দুর্গাপুর এলাকার বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানাগুলির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি আমাদের এগুলো দিয়ে দেয়, তা হলে আমরা রক্ষণাবেক্ষণ করব। তবে আগে আমাদের দিতে হবে। তা না হলে কিছু করা যাবে না।’
এর পরেই তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ‘বসুমতী’ সংবাদপত্র, বর্তমানে বন্ধ থাকা বার্ন স্ট্যান্ডার্ড অধিগ্রহণ করেছিলেন, সে কথা মনে করান মুখ্যমন্ত্রী। ইস্কোর বার্নপুর কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য জমি জোগাড় করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার, ‘ডিপিএল’ বাঁচাতে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন। ‘ডিপিএল’-এর জন্য মাসে মাসে ভর্তুকি দিতে হয় জানিয়ে শ্রমিকদের প্রতি তার বার্তা, ‘আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন, কারও চাকরি যাবে না।’ ‘ডিপিএল’-এর আধুনিকীকরণের কথাও বলেন তিনি। টানেন পানাগড় শিল্পতালুকে বিনিয়োগের প্রসঙ্গ।
তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যের বড় অংশ জুড়ে এই শিল্প-কথা আসলে এই দুই কেন্দ্রের শ্রমিক মন জয়ের চেষ্টা হিসেবেই মনে করছেন রাজনৈতিক নেতা, কর্মীদের একাংশ। কারণ, আসানসোলে হিন্দুস্তান কেব্লস, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড বন্ধ হওয়া নিয়ে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ক্ষোভ রয়েছে বলেই দাবি তৃণমূল, সিপিএমের। সেই ক্ষোভের আঁচ বিজেপি যাতে ভোট-বাক্সে টের পায়, এ দিন মমতা সে ব্যবস্থা করেছেন, দাবি তৃণমূল নেতাদের।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই ‘হিন্দুস্তান কেব্লস পুনর্বাসন কমিটি’র ব্যানার নিয়ে কারখানা খোলার দাবিতে শতাধিক বাসিন্দা বিক্ষোভ-অবস্থান করেন রূপনারায়ণপুরে। অবস্থানে আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে সরব হন বিক্ষোভকারীরা। বিজেপির অবশ্য দাবি, ওই সংগঠন তৃণমূল প্রভাবিত।
‘সরকার চাইলে কেন্দ্র ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের সম্পত্তি রাজ্যের হাতে তুলে দিতে পারে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে রাজ্যকেই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে,’ বলছেন আইএনটিইউসি-র পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি বিকাশ ঘটক। তার সংযোজন, ‘এটা নিছক ভোট টানতে প্রচার, না প্রকৃত সদিচ্ছা মানুষ নিশ্চয়ই দেখবেন।’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা সিটু নেতা পঙ্কজ রায় সরকারের বক্তব্য, ‘এক সময়ে কেন্দ্র এইচএফসিএল খুলতে চেয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার বকেয়া মকুব না করায় তা সম্ভব হয়নি। ডিসিএল (দুর্গাপুর কেমিক্যালস লিমিটেড)-এর একশো শতাংশ বিলগ্নিকরণ করেছে রাজ্য সরকার।’ পঙ্কজের অভিযোগ, ‘শিল্প নিয়ে রাজ্য বা কেন্দ্র—দুই সরকারের কোনও সদিচ্ছা নেই।’ বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য আসলে ভোট-রাজনীতির কারণে।’ তবে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ তথা আইএনটিটিউসি নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘রাজ্যই যে শিল্প বাঁচাবে, মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সেই বার্তাই দিয়েছেন।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ