Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের বেহাল দশা

প্রায় প্রতিদিন চলছে কর্ম বিরতি

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৯, ২:২৬ পিএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে অবস্থিত পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসটি বাণিজ্যিক অফিস হলেও এখানে প্রায় প্রতিদিন কর্মকর্তা কর্মচারীদের কর্ম বিরতির ফলে অফিসের পরিস্থিতি এখন চরমে পৌঁছেছে। এক থেকে দেড় যুগ আগে যে অফিসের সুনাম ছিল আকাশ চুম্বী আজ সেটা দুর্নীতি আর হয়রানীর অফিস হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে দালাল আর ঘুষের অফিস সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসটি। এখানে ছোট বড় ¯েœহ শ্রদ্ধা গণ্যমান্য ব্যক্তি বোধের কোন বালাই নেই। জানা গেছে, ৮০ এর দশকে স্থাপিত সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুতের অভিযোগ কেন্দ্রটি ২০০২/০৩ সালে জোনাল অফিস হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। গ্রাহকেরা মনের আনন্দে ঐ অফিসে আসা যাওয়া করত এবং বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কাজ গুলো বিনা সেলামীতে করিয়ে নিত। এখন সরিষাবাড়ীর ঐ পল্লী বিদ্যুতের অফিসে যে কোন কাজই করতে যান না কেন, দালালদের মাধ্যমে (আগে সেলামী প্রদান) টাকা লেন দেন ছাড়া কোন কাজই হয়না। যার অংশ বুঝে নেয় ডিজিএমসহ সংশ্লিষ্টরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানান, ডিজিএম প্রকৌশলী মস্তফা কামাল সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসটিকে তার নিজের ব্যক্তিগত বা বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। কর্মচারীরা বদলী ও হয়রানীর ভয়ে মুখ বুঝে সব সহ্য করে আসছে। এছাড়া গ্রাহকদের হয়রানীর তো শেষ নেই। হাতেম আলী, আলী আজগর, সোহরাব আলীসহ অনেক বিদ্যুৎ গ্রাহক জানান, আমরা বিদ্যুৎ সংক্রান্ত নানা প্রয়োজনে সমস্যাদি নিয়ে তাকে ফোন করলে পাওয়া যায়না। অফিসে এসে সাক্ষাৎ করলে তিনি জানান, গ্রাহকরা ফোন করলেই আমাকে ফোন রিসিফ করতে হবে এমন কোন ধরা বাধা আইন নেই। সমস্যা আছে থাকবেই। আরেক গ্রাহক পিংনা গ্রামের আঃ মালেকের ছেলে আশরাফ আলী জানান, আমি আমার আবাসিক সংযোগ পেতে তার খুঁটি বা আনুষঙ্গিক বাবৎ ৪৬ হাজার টাকা ডিজিএম এর কাছে জমা দেই, কিন্তু মানি রিসিপ পাই ১৯ হাজার টাকার। এমন আরো নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রাহক জানান, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ যেটা গ্রাহকদের সাধারণ ক্ষমা করে দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে ডিজিএম মস্তফা কামাল গ্রাহকদের ধোঁকা দিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার বানিয়ে মাসে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মস্তফা কামালের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গ্রাহকদের অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। কাজ করতে গেলে ত্রুটি বিচ্যুতি হতেই পারে। অফিসের কর্মচারীদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ করা হয় এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, কর্মচারীরা ফাঁকিবাজ, তারা কাজে ফাকি দিতে চায়, আমি অফিস প্রধান, আমাকে অফিস মেইনটেন করতে ওদের তো শাসন করতেই হবে। অফিসটি দালালদের দখলে, এ বিষয়েও কথা বললে তিনি জানান, দালালরা তো আমার আত্নীয়স্বজন না, তারা তো এলাকারই লোক, তারা যদি গ্রাহকদের কাছ থেকে কাজের বিনিময়ে কিছু গ্রহন করে তাতে দোষের কি। মোট কথা এসব অনিয়ম আর বিধি বহির্ভুত কাজের জন্য সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারীরা মাঝে মাঝে কর্ম বিরতী পালন করে আসছে। সংবাদ কর্মীরা ঐ কর্মবিরতীর ছবি তুলতে গেলে ডিজিএম তাদের সাথেও অসৌজন্য মুলক আচরন করে থাকে। এলাকাবাসী সরিষাবাড়ী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসটি দালাল ও হয়রানী মুক্ত চায়। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সরিষাবাড়ী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ