মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বেশ কিছুদিন আগেও খ্যাতনামা ‘কমেডিয়ান’ হিসেবে ভোলোদিমির জেলেনস্কিকে চিনত গোটা ইউক্রেন। এতদিন তার কাজ ছিল টিভির পর্দায় প্রেসিডেন্টের ভূমিকায় অভিনয় করে দর্শকদের মন মাতানো। তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য কৌতুক মঞ্চে নয় এবার বাস্তব জীবনেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন ভোলোদিমির জেলেনস্কি। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটের প্রাথমিক ফলাফলে প্রতিদ্বন্দ্বী পেট্রো পোরোশেনকোর চেয়ে বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। বুথ ফেরত জরিপে বলা হয়, খ্যাতনামা এই কৌতুক অভিনেতা পেয়েছেন দেশটির মোট ভোটের প্রায় ৭৩.২ শতাংশ। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ধনকুবের খ্যাত পেট্রো পোরোশেনকো পেয়েছেন বাকি ২৫.৩ শতাংশেরও কম। যে কারণে এরইমধ্যে নিজের পরাজয় মেনে নিয়েছেন তিনি।
গত মার্চের শেষ সপ্তাহে দেশটিতে মোট ৩৯ জন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম দফার ভোট। যদিও সেবার কেউই এককভাবে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে জেলেনস্কি এবং পেট্রো দ্বিতীয় দফায় ভোটের জন্য মনোনীত হন। যে কারণে গত রবিবার তাদের মধ্যে চূড়ান্ত ভোটের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়।
ইউক্রেনের জনপ্রিয় টিভি শো ‘সার্ভেন্ট অব দ্য পিপল’ নামে হাস্যরসাত্মক একটি অনুষ্ঠানে অভিনয় করেছিলেন জেলেনস্কি। সেখানে দেখা যায়, দীর্ঘদিন যাবত দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর সাধারণ এক নাগরিক দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এবার জেলেনস্কির কল্পিত সেই টিভি শো-ই বাস্তব রূপে হাজির হতে যাচ্ছে বলে দাবি তার সমর্থকদের।
এদিকে দ্বিতীয় দফার ভোট শেষে রবিবার জেলেনস্কি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আমি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হইনি। যে কারণে আপনাদের উদ্দেশে আমি এটাই বলতে চাই যে, আপনারা কখনও আমার জন্য হতাশ হবেন না।’ তিনি বলেন,‘তারপরও ইউক্রেনের একজন নাগরিক হিসেবে সোভিয়েত পরবর্তী দেশগুলোকে এটাই বলতে চাই যে, আমাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন। সব কিছুই সম্ভব, আমরা সবই পারি।’
জেলেনস্কি তার পরিবারের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমার স্ত্রী, বাবা-মা ও প্রচারণা দলের সকল সদস্যদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ। কেননা এবার আমরা একসঙ্গে এই কাজটা করেছি। একইসঙ্গে আমি সকল ইউক্রেনীয় নাগরিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলতে চাই যে, এখন থেকে আর কোনো জগাখিচুড়ি হবে না।’
অপরদিকে ভোটে চূড়ান্তভাবে পরাজিত হওয়ার পর নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে এক টুইট বার্তায় পেট্রো পোরোশেনকো বলেছিলেন, ‘আমি ইউক্রেনীয় জনগণের ইচ্ছা মেনে নিয়ে আমার অফিস ছেড়ে যাচ্ছি। তবে আমি আপনাদের এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, আমি এখনই রাজনীতি ছেড়ে যাচ্ছি না।’
যদিও এই চূড়ান্ত নির্বাচনের আগে পোরোশেনকো বলেছিলেন, ‘গোটা পাঁচ বছরের জন্য প্রেসিডেন্টের পদ কোনো কমেডি শো নয়; যেটি আপনাদের ভালো না লাগলে সুইচ অফ করে দিবেন কিংবা অন্য চ্যানেলে চলে যাবেন। তাই আমি আপনাদের উদ্দেশে এটাই বলতে চাই, গোটা দেশ ও আপনাদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করুন।’
নির্বাচনে পরাজয়ের পরও পোরোশেনকোর সমর্থকরা মনে করেন, ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া সংযুক্তিকরণের সময় রুশ সমর্থিত ইউক্রেন সরকারের পতন ঘটানোর মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্টের পদে বসেন পোরোশেনকো। মূলত এর পরপরই তিনি যেভাবে সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠিত করেছেন; তাতে তার নেতৃত্বের গুরুত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত। তবে জেলেনস্কির সমর্থকদের দাবি, পোরোশেনকোর এসব পদক্ষেপের পরও ইউক্রেনের প্রায় সাড়ে চার কোটি জনতার কোনো দাবিই পূরণ হয়নি। মূলত এসব কারণেই জেলেনস্কিকে সাধারণ ইউক্রেনবাসী একজোট হয়ে ভোট দিয়েছেন বলে ধারণা দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
জেলেনস্কি তার প্রচারণায় বলেছিলেন, ‘আমি কোনো রাজনীতিবিদ নই। আমি কেবল মাত্র একজন সাধারণ মানুষ; যে দেশের সমস্ত সিস্টেমকে ভাঙতে চায়। আমি আপনাদের ভুল এবং মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না।’
অনেক জনগণই মনে করেন, এই সরল ও সাদাসিধে মানুষটি দেশের সমস্যা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছেন। যদিও বেশকিছু লোকের ধারণা, পার্লামেন্টে খুব বেশিদিন টিকে থাকতে পারবেন না এই কমেডিয়ান। কেননা সেখানে তার কোনোই সমর্থন নেই। এর উপর রাশিয়ার জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মোকাবিলা করার মতো কোনো অভিজ্ঞতাই তার ঝুলিতে নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।