মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
‘ওয়া জনগণই নিজেদের প্রভু’, মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধ বিরতির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কুচকাওয়াজে বললেন ইউডবিøউএসএ নেতা বাও ইউশিয়াং। তাদের সেনাবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার সদস্য, নিজেরাই অস্ত্র তৈরি করে, প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজন সদস্য আছে এই বাহিনীতে। এটাই হলো ইউনাইটেড ওয়া স্টেট আর্মি। কমিউনিস্ট, স্বতন্ত্র, চীনা সমর্থিত এই বাহিনী মিয়ানমারের প্রত্যন্ত সীমান্ত এলাকায় তাদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যুদ্ধসাজে সজ্জিত স্নাইপার প্লাটুন, নারীদের কোম্পানি, সাঁজোয়া গাড়িবহরসহ হাজার হাজার সৈন্য বুধবার জাতিগত ওয়ার রাজধানী পাঙ্গসাঙ্গে (চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তের কাছে) মার্চপাস্টে অংশ নেয়। ৭০ ছাড়ানো বয়সের চেয়ারম্যান বাও এই অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করে আছেন কয়েক দশক ধরে। শি জিনপিঙের আদলে বাও তার সেনাবাহিনী, দল ও সরকারেরও প্রধান। তিনি সারা জীবনের জন্যই এসব পদ নিজের করে রেখেছেন। সিনিয়র ইউডিব্লিউএসএ নেতা ঝাও গোয়া অ্যান চীনের সাথে তাদের সম্পর্ক নিয়ে বলেন, বেইজিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করলেও ওয়ারা কিন্তু ফেডারেল শাসন প্রতিষ্ঠার সমঝোতায় এখনো আসেনি। মিয়ানমার নেত্রী আং সান সু চির বেসামরিক সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তারা তাতে সাড়া দেয়নি। আবার রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ব্যাপক যুদ্ধ চলতে থাকায় দেশব্যাপী শান্তিচুক্তি দ্রুত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। ত্রিশ বছর আগে কমিউনিস্ট ওয়া বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের সাথে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বিশেষ আধা স্বায়ত্তশাসিত এলাকা প্রতিষ্ঠা করেছিল। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অ-রাষ্ট্রীয় সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা বাও ইউশিয়াং এই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যুদ্ধবিরতির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষেই আয়োজন করা হয় এই মার্চপাস্টের। এবার বিদেশী মিডিয়াকেও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়। মূলত বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন এলাকাটির সামরিক শক্তিমত্তা প্রদর্শনই ছিল এর অন্যতম লক্ষ্য। বাও বলেন, ওয়া জনগণ তাদের নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ছয় লাখ যুদ্ধ-পরীক্ষিত মানুষ কখনো প্রক্সি যুদ্ধের ঘুঁটি হবে না। তিনি ঘোষণা করেন, তারা মানবসমাজের অন্যতম সেরা গ্রুপ। আকারের দিক থেকে ওয়া বাহিনীকে লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনীর সাথে তুলনা করা যেতে পারে। হিজবুল্লাহর মতো তারাও একটি বড় রাষ্ট্রের অনুকূলেই ভূমিকা পালন করে। তবে তাদের মধ্যে স্থানীয় সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব আছে, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রের (তথা বামার জাতিগত গ্রুপের আধিপত্য) প্রতি বৈরিতা রয়েছে। ওয়া আর্মির কুচকাওয়াজে স্নাইপার ফোর্সের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। তাদের সামরিক বাহিনীর শক্তি কতটা তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। ধারণা করা যায়, ইউডবিøউএসএর শক্তি ২৫-৩০ হাজার নিয়মিত ও বিশাল, প্রশিক্ষিত রিজার্ভ বাহিনী নিয়ে গঠিত। খনিজ-সম্পদ সমৃদ্ধ ওয়া রাজ্যের প্রতি চীনা সহযোগিতা বিপুল। এই সুবাদেই তারা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সাফল্য ধরে রাখতে পারছে। এক ইউডবিøউএসএ কর্মকর্তা বলেন, আমরা কয়েক দশক পর্যন্ত বিপদে পড়িনি। আমরা ৩০ বছর ধরে এই অগ্রগতি হাসিল করেছি। তবে আমাদের তৈরি থাকা দরকার। আমাদের নেতার কথা হলো, যত বেশি পরিশ্রম, তত কম রক্তক্ষরণ। এ কারণে প্রতিটি বাড়ির একজন বা দুজনকে ওয়া সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হয়। একসময় ওয়া ছিল চীনা ছিটমহল। পরে তা ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয়। মানুষ হত্যার জন্য তাদের কুখ্যাতির জন্য ব্রিটিশরা তাদের বলত বুনো ওয়া। তবে বিশেষ অঞ্চলে পরিণত হওয়ার পর তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসে। এখানে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিনের খনি। তাছাড়া রাবার বাগানও আছে বিশাল বিশাল। আবার মাদক পাচারেও তাদের দুর্নাম রয়েছে। আফিম উৎপাদনকারী গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলে ওয়ার বিশেষ ভূমিকাও রয়েছে। এখানে ইয়াবার কারখানাও আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে ওয়া নেতারা এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করে থাকেন। ওয়ার এক নেতা বলেন, এখন আর এখানে পপি চাষ হয় না। এটি পুরোপুরি নির্মূল করা হয়েছে। তবে নিরপেক্ষ বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এমন দাবি করা অসম্ভব। তবে এখানে প্রবেশাধিকার সীমিত থাকায় দাবি যাচাই করাও সম্ভব নয়। সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।