মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত সপ্তাহে ভারতের সাধারণ নির্বাচন শুরুর প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান কথিত অবৈধ মুসলিম অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্য আরো শানিত করে তুলেছেন। মুসলিম অভিবাসীদের বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপের অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)’র প্রধান অমিত শাহ এ ধরনের অবৈধ অভিবাসীকে ‘উইপোকা’ হিসেবে অভিহিত করেন। এর আগে গত সেপ্টেম্বরেও একই শব্দ ব্যবহার করেছেন তিনি। অধিকার গ্রুপগুলো তার এই বক্তব্যের নিন্দা জানায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক রিপোর্টেও তার এই মন্তব্যের কথা উল্লেখ রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শুরুর দিন পশ্চিম বঙ্গ রাজ্যের এক সমাবেশে শাহ বলেন, অভিবাসীরা বাংলার মাটিতে উইপোকার মতো। প্রতিবেশী মুসলিম প্রধান বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিজেপি সরকার বেছে বেছে একটি একটি করে অনুপ্রবেশকারীকে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করবে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানেরও অঙ্গীকার করেন তিনি। বৌদ্ধ সংখ্যাগুরু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া ৪০,০০০ রোহিঙ্গা মুসলিমকে বহিষ্কারের কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু করেছে ভারত। নয়াদিল্লি এদেরকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে ভাবছে। মোদির ডান হাত শাহের এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বিরোধী কংগ্রেস ও সংখ্যালঘু দলগুলো। তার বক্তব্যকে অনেকে জাতিগত নির্ম‚লের আহ্বানের সঙ্গে তুলনা করেন।
কেরালা ক্রিশ্চিয়ান ফোরাম এক বিবৃতিতে বলে, এ ধরনের বক্তব্য সেক্যুলার রাষ্ট্রটির পরিচয় ও সংহতির উপর প্রত্যক্ষ আঘাত। এ জন্য শাহকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে গ্রুপটি দাবি করে। বিজেপির এক মুখপাত্র এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। কংগ্রেসের মুখপাত্র সঞ্চয় ঝা বলেন, সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভোটের মেরুকরণ করার জন্য শাহ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিজেপির রাজনৈতিক মডেল হলো সাম্প্রদায়িক উত্তাপ বাড়িয়ে একে ফুটতে দেয়া এবং ভারতে একটি স্থায়ী ধর্মীয় বিভক্তি টিকিয়ে রাখা।
গত পাঁচ বছর ধরে বিজেপি ভারতে যে আমরা-বনাম-তারা রাজনীতি করে যাচ্ছে তা দেশটিতে ইতোমধ্যে বিপজ্জনক বিভক্তি তৈরি করেছে। সরকারের প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দুবাদ প্রবলভাবে ঝাকিয়ে বসেছে।
২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই প্রবণতা প্রবল হয়ে উঠে। গরু জবাই বা গো-মাংস খাওয়া, সংরক্ষণ, ইত্যাদি অভিযোগে উগ্র হিন্দুরা সারা দেশে মুসলিম ও নিম্নবণের লোকজনকে পিটিয়ে মারতে শুরু করে। প্রায়ই হামলাকারীরা পার পেয়ে যায়। এ ধরনের সর্বশেষ ঘটনা হিসেবে ভারতীয় পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার ঝাড়খন্ডে একটি মরা ষাঁড় পানিতে ডুবিয়ে দেয়ার সময় একদল লোক হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা ও তিনজনকে আহত করেছে।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ভারতের ঘৃণা ছাড়ানোর বক্তব্য গতি পায়। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করতে ইন্টারনেট ট্রল ব্যবহার ব্যাপক হয়ে ওঠে। সরকারি সংস্থাগুলো ইতিহাসের বই নতুন করে লেখার উদ্যোগ নেয়, মুসলিম শাসনামলকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানের মুসলিম নাম বদল করে হিন্দু নামকরণ করা হচ্ছে। ধর্মীয় স্থাপনাগুলো নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা আরো তীব্র হয়ে উঠেছে।
সচেতন ভারতীয় একটিভিস্ট ও উদার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোদির আমালে ভারতে হিন্দু-মুসলমান, উচ্চ ও নিম্নবর্ণ, নারী-পুরুষের মধ্যে বিভক্তি অনেক বেশি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে।
মোদির সমর্থকরা বলছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শুধু চাচ্ছেন ভারতীয় সমাজের প্রাণকেন্দ্রে হিন্দুত্ববাদকে তার উপযুক্ত স্থানে বসাতে। ভারতের হিন্দুত্ববাদী ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আরো বেশি মারমুখো উপায়ে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করার মধ্যে তারা ভুল কিছু দেখেন না বলেও উল্লেখ করেন। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।