পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719606527](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন সেই সময়ের সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। তার বিরুদ্ধে নুসরাতে শ্লীলতাহানির ঘটনাকে ‘নাটক’ এমনকি পরবর্তীতে আগুনের ঘটনাকেও ‘আত্মহত্যার’ রূপ দিতে তিনি মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়েছিলেন। এছাড়া এ দুটি ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওসি প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ দৌলাসহ তার সহযোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। নুসরাতের স্বজন ও স্থানীয়রা এসব অভিযোগ করেন। গত ১০ এপ্রিল এমন অসংখ্য অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোনাগাজী মডেল থানা থেকে মায়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।
স্থানীয়রা অভিযোগে বলেন, ৬ এপ্রিলের আগুন দিয়ে পোড়ানোর ঘটনাকে নানাভাবে ‘আত্মহত্যা’ বলে প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি চেষ্টা করেছেন ওসি। ওই সময়ে তার রহস্যজনক আচরণে অনেকে ক্ষুদ্ধ হলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি। পরে ৯ এপ্রিল ঘটনা তদন্তে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক সোনাগাজীর ওই মাদরাসায় এলে ওসির অনিয়মের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। ডিআইজি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাব না দিলেও ওসি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরদিন ১০ এপ্রিল দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
স্বজন ও স্থানীয়রা অভিযোগে বলেন, গত ২৭ মার্চ প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে করা নুসরাতের যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুজনকে থানায় নিয়ে যায় ওসি মোয়াজ্জেম। তিনি নিয়ম ভেঙে জেরা করেন এবং তা ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। পরবর্তীতে ভিডিওটি প্রকাশ হলে প্রিন্সিপাল ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যতার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
ভিডিওতে দেখা যায়, থানায় ওসির সামনে জেরা করার সময় অঝোরে কাঁদছিলেন নুসরাত। আর সেই কান্নার ভিডিও ওসির সামনেই ধারণ করা হচ্ছিল। নুসরাত তার মুখ দু’হাত দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন। তাতেও ওসির আপত্তি। বারবারই ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ জাতীয় বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে।’
থানার ভেতরে নুসরাতকে জেরা করে ওসি বলেন, ‘কিসে পড়ো? ক্লাস ছিল?’ ঘটনা জানাতে গিয়ে নুসরাত বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। সে সময় তাকে জিজ্ঞেস করা হয়- ‘কারে কারে জানাইসো বিষয়টা?’ নুসরাত যখন জানায়- তাকে প্রিন্সিপাল ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তখন প্রশ্ন করা হয়- ‘ডেকেছিল, নাকি তুমি ওখানে গেছিলা?’ পিয়নের মাধ্যমে ডেকেছিল বলে নুসরাত জানালে প্রশ্ন করা হয়- ‘পিয়নের মাধ্যমে ডেকেছিল? পিয়নের নাম কী?’ নুসরাত সে সময় পিয়নের নাম বলেন- ‘নূর আলম।’ পুরো ভিডিও জুড়েই নুসরাত কাঁদছিলেন। একসময় ভিডিওধারণকারী তাকে ধমকের সুরে বলে- ‘কাঁদলে আমি বুঝবো কী করে, তোমাকে বলতে হবে। এমন কিছু হয়নি যে তোমাকে কাঁদতে হবে।’ ভিডিও’র শেষে নুসরাতের কথা বলা শেষ হলে ধারণকারী বলেন- ‘এইটুকুই?’ আরও কিছু অশালীন উক্তির পাশাপাশি তাকে উদ্দেশ করে বলেন- ‘এটা কিছু না, কেউ লিখবেও না তোমার কথা। আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব। কিছু হয়নি। রাখো। তুমি বসো।
নুসরাতকে জেরা করার সময় ভিডিও করা কতটুকু আইনসম্মত এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সর্বমহলে। এ বিষয়ে আইনজীবীরা বলছেন, যৌন হয়রানির অভিযোগ করার সময় ওসির ভিডিও ধারণের ঘটনায় ওসির বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার সুযোগ রয়েছে নুসরাতের পরিবারের। ওসির এ ধরনের আচরণের বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, আইন না মেনে অভিযোগ করতে যাওয়া কারোর ভিডিও করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।