নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শেষ হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের প্রথম পর্বের খেলা। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হবে শীর্ষ ছয় দল নিয়ে শিরোপার লড়াই ‘সুপার লিগ’ পর্ব। শিরোপার লড়াইয়ে টিকে থাকা ছয় দল হলো লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ, আবাহনী লিমিটেড, প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব, প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
প্রথম পর্বের একদম শেষ ম্যাচে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়েছে মোহামেডানের। তাদের শিরোপা সম্ভাবনা টিকে থাকার পেছনে বড় অবদান রেখেছেন লিগে বড় একটা সময় অধিনায়কত্ব করা রকিবুল হাসান। যিনি রান করেছেন নিয়মিত ভিত্তিতে।
যে কারণে লিগের শুরুর দিকে প্রাইম ব্যাংকের এনামুল হক বিজয়, আবাহনী লিমিটেডের জহুরুল ইসলাম কিংবা প্রাইম দোলেশ্বরের সাঈফ হাসান রান তোলার তালিকায় শীর্ষে থাকলেও, প্রথম পর্ব শেষে সে স্থানে নিজের নাম তুলে নিয়েছেন ৩১ বছর বয়সী রকিবুল।
জাতীয় দলের এ সাবেক মিডল অর্ডার ১১ খেলায় ১১ ইনিংসে করেছেন ৫৪৫ রান। যার সর্বোচ্চ ১০২, গড় ৬০.৫৫ এবং তার স্ট্রাইকরেট ৯৫.৪৪। এবারের প্রথম পর্বে সর্বাধিক পাচ ফিফটিও বেরিয়ে এসেছে রকিবুলের ব্যাট থেকে এছাড়া একটি সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি। মানে ১১ ইনিংসের ছয়বার রকিবুলের ব্যাট পঞ্চাশ ছুঁয়েছে।
রান তোলায় দুই নম্বরে আবাহনীর জহুরুল ইসলাম অমি। জাতীয় দলের এ সাবেক টপ অর্ডার আবাহনীর ফ্রন্টলাইনকে একা টেনে নিয়ে গেছেন পুরো প্রথম পর্বে। তিন তিনটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস উপহারের পাশাপাশি জহুরুল ১০ খেলায় ১০ বার ব্যাট করে ২ বার অপরাজিত থেকে রান করেছেন ৫৩১, তার সর্বোচ্চ ১৩০। সমান দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরি করা জহুরুলের গড় ৬৬.৩৭, স্ট্রাইকরেট ৭৬.৯৫। রান তোলায় তৃতীয় এনামুল হক বিজয়। প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক বিজয়ের সংগ্রহ ১১ খেলায় ১১ ইনিংসে ১ বার নট আউট থেকে ৫১১, সর্বোচ্চ ১০২, গড় ৫১.১০ ও স্ট্রাইকরেট ৮৩.৩৮। হাফ সেঞ্চুরি তিনটি আর শতরান একটি।
চতুর্থ স্থানে রয়েছেন আরেক তরুণ ওপেনার সাঈফ হাসান। প্রাইম দোলেশ্বরে খেলা এ তরুণ ১১ খেলায় ১১ বার ব্যাট করে দুবার নট আউট থেকে রান করেছেন ৫০৬, তার গড় ৫৬.২২ ও স্ট্রাইকরেট ৭৭.৬০। সমান দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি আছে সাইফের। সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি অপরাজিত ১৩২ রানের। রান সংগ্রহে পাঁচ নম্বরে একজন ভারতীয়; নাম অভিমান্যু ঈশ্বরন। প্রাইম ব্যাংকের হয়ে খেলা ইশ্বরনের সংগ্রহ ৭ খেলায় ৪৯৬ । যার মধ্যে অর্ধশতক তিনটি আর সেঞ্চুরি একটি।
জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মান রেখে রান সংগ্রহে নয় নম্বরে আছেন আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। সৌম্য সরকার (৮ খেলায় ২২.২৫ গড়ে সংগ্রহ মোটে ১৭৮), মোহাম্মদ মিঠুন (৫ খেলায় ২৫.২৬ গড়ে রান মাত্র ১২৮), ইমরুল কায়েস (১১ খেলায় প্রতিবার ব্যাট করে ২৬২) ও সাব্বির রহমান (১০ খেলায় একটি মাত্র ফিফটিতে রান মোটে ১৯৪) চরম ফ্লপ। তাদের ব্যাট মোটেই কথা বলেনি। সে তুলনায় মোহামেডানের হয়ে ওপেন করা লিটন দাস অবশ্য ৪ খেলায় দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২০০ রান করেছেন।
মোদ্দা কথা জাতীয় দলের যে কজন ব্যাটসম্যান প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন, তাদের মধ্যে মোসাদ্দেকই যা করার করেছেন। বাকিরা সে অর্থে অনুজ্জ¦ল। আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক সৈকত ১১ খেলায় ১১ বার ব্যাট করে তিন বার নট আউট থেকে ৪২৮ রান করেছেন ৫৩.৫০ গড়ে। ৭৩.০৩ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করা মোসাদ্দেকের চার চারটি হাফ সেঞ্চুরি ছাড়াও একটি সেঞ্চুরিও আছে।
এছাড়া সময়ের আলোচিত ইয়াসির আলী রাব্বিও কম যাননি। ব্রাদার্সের হয়ে খেলা চট্টগ্রামের এ মেধাবী তরুণের রান ১১ খেলায় ৯ ইনিংসে ৪২৩। পাঁচ বার নট আউট থাকায় গড় বেশ ভাল; ১০৫.৭৫। আর স্ট্রাইকরেটটাও দারুণ- ১০০.৯৫। দুটি হাফ সেঞ্চুরির সাথে একটি সেঞ্চুরিও আছে ইয়াসির আলী রাব্বির।
বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের পক্ষে চৌকস নৈপুণ্য দেখানো রাজশাহীর অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা প্রিমিয়ার টি টোয়েন্টি লিগেরও সেরা পারফরমার হয়েছেন। আর এবার পঞ্চাশ ওভারের প্রিমিয়ার লিগেও ফরহাদ রেজার বোলিং যেন আগুনের গোলা। বল হাতে রীতিমত আগুন ঝড়াচ্ছেন। ১১ খেলায় ২৭ উইকেট শিকারি ফরহাদ রেজা উইকেট শিকারে সবার ওপরে। তার ধারে কাছে নেই আর কেউ। ওভার পিছু ৪.৭৩ রান দেয়া ফরহাদ রেজার বোলিং গড়টাও বেশ ১৬.৫৯। ম্যাচে সেরা বোলিং; ৫/৪০।
লিগের পুরো প্রথম পর্বে দুবার চার উইকেট আর একবার ৫ উইকেট শিকারি ফরহাদ রেজার এই সাড়া জাগানো বোলিং তাকে শুধু পাদপ্রদীপের আলোয়ই নিয়ে যায়নি, নির্বাচকরাও ফরহাদ রেজার বোলিংয়ের সন্তুষ্ট। তাকে বিশ্বকাপ দলে জায়গা দেয়া যায় কিনা? এমন চিন্তাও চলছে।
বল হাতে ফরহাদ রেজার দাপটের মাঝে প্রথম পর্বে ২০ উইকেটের বেশি পেয়েছেন আর মাত্র দুইজন বোলার। খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির তরুণ পেসার রবিউল হক ২২টি এবং বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) তরুণ বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ শিকার করেছেন ২০টি উইকেট।
সেরা পাঁচ
ব্যাটম্যান ম্যাচ অপ. রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক ১০০/৫০
রকিবুল হাসান (মোহামেডান) ১১ ২ ৫৪৫ ১০২ ৬০.৫৫ ৯৫.৪৪ ১/৫
জহুরুল ইসলাম (আবাহনী) ১০ ২ ৫৩১ ১৩০ ৬৬.৩৭ ৭৬.৯৫ ২/২
এনামুল হক (প্রাইম ব্যাংক) ১১ ১ ৫১১ ১০২ ৫১.১০ ৮৩.৮৬ ৩/১
সাইফ হাসান (প্রাইম দোলেশ্বর) ১১ ২ ৫০৬ ১৩২* ৫৬.২২ ৭৭.৬০ ২/২
অভিমন্যু ইশ্বরণ (প্রাইম ব্যাংক) ৭ ০ ৪৯৬ ১৩৩ ৭০.৮৫ ৯৩.৪০ ১/৩
সেরা পাঁচ
বোলার ওভার মেডেন উইকেট সেরা গড় ওভারপ্রতি রান ৪/৫
ফরহাদ রেজা (প্রাইম দোলেশ্বর) ৯৪.৪ ৪ ২৭ ৫/৪০ ১৬.৫৯ ৪.৭৩ ২/১
রবিউল হক (খেলাঘর) ১০৪.২ ৫ ২২ ৫/৪১ ২২.৭২ ৪.৭৯ ০/২
হাসান মুরাদ (বিকেএসপি) ১০৪.০ ৭ ২০ ৪/৩০ ১৯.০৫ ৩.৬৬ ১/০
দেলোয়ার হোসেন (শাইনপুকুর) ৬০.৪ ৩ ১৯ ৫/৪৬ ১৪.৮৯ ৪.৬৬ ০/১
কামরুল ইসলাম রাব্বি (গাজী গ্রæপ) ৯২.৫ ৪ ১৭ ৫/২৪ ২৮.২৩ ৫.১৭ ০/১
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।