বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ফরিদপুরে গত ১৮ মার্চে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়া হত্যা, বাড়িঘর ভাংচুর, ষড়যন্ত্র মুলক মামলাসহ নানা ধরণের হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনের পর হতে জেলার নগরকান্দা ও সালথা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আওয়ামীলীগের অনেক নেতা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে রয়েছে।
আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ফরিদপুরের ৮টি উপজেলার নির্বাচন গত ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নগরকান্দা উপজেলায় মনিরুজ্জামান সরদার ও সালথা উপজেলায় দেলোয়ার হোসেনকে মনোনয়ন দেয়। দলীয় মনোনয়নের বিপক্ষে নগরকান্দায় কাজি বাবুল ও সালথা ওদুদ মাতুব্বরকে সমর্থন দিয়ে নির্বচনের মাঠে ঢালাও ভাবে কাজ করে সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর পুত্র সাহাদাব আকবর চৌধুরী লাবু।
তিনি নির্বাচনের আগে এ দলের নেতাকর্মীকে তার সমর্থিত সতন্ত্র প্রার্থীদ্বয়কে ভোট দেওয়ার জন্য জোর প্রয়োগ ও ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। নৌকার বিপক্ষে ভোট না দিলে দল থেকে বহিস্কার, হামলা মামলার হুমকিও দেন তিনি। ফলে ভয়ে স্থানীয় এ নেতার অনেকেই দল ছেড়ে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। ফলে এ দলের নেতাকর্মীরানিজেদের মধ্যে সহিংস ঘটনায় জড়িয়ে পরে। গত ১৭ মার্চ নগরকান্দার লস্করদিয়া ইউনিয়ননের আইনপুরে সতন্ত্র প্রার্থীরা সমর্থকরা নৌকার সমর্থকদের উপর হামলা করে। এ সময় এ ইউনিয়নের মেম্বার ইলিয়াছ সহ ১০ জন আহত হয়ে নগরকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়।
১৯ মার্চ নির্বাচনের পরের দিন ইউনিয়নের আটাইল গ্রামে কয়েকটি বাড়িতে ভাংচুর ও হামলা করা হয়। এ সময় এ এলাকার আওয়ামীলীগ অফিস ও নৌকার প্রতিক ভাংচুর করা হয়। সম্প্রতি তালমা ইউনিয়নের মানিকদি গ্রামে হামলা করে ওবায়দুর মাতুব্বর তার স্ত্রী সালমা, লক্ষনদিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজান মাষ্টার তার পিতা ওহাব মাতুব্বর, দেলোয়ার ব্যাপারী সহ অনেককে হামলা করে আহত করা হয়।
হামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সালথার রামকান্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রব মাতুব্বর, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি লুৎফর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য আলিম সহ অনেকেই।
এদিকে গত ২৫ মার্চ তালমা ইউনিয়নের কোনা গ্রামের আধিপত্তকে বিস্তার করে সাহাবুদ্দিন মেম্বার ও বাবুল মোল্লা গ্রুপের সংঘর্ষে সমর্থক সোবহান মাতুব্বর আহত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে। গত ৫ এপ্রিল ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য, ও নগরকান্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ জামাল ও ফরিদপুর জেলা পরিষদের সদস্য শেখ কামালকে আসামী করা হলে তারা গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে রয়েছে।
এ দলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করে বলেছে, নৌকার পক্ষে কাজ করায় আমরা দলীয় কোন সহযোগীতাতো পাচ্ছিই না বরং আমাদেরকে নানা ধরনের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করায় পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
রামনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদ্দুস ফকির বলেন, নৌকার পক্ষে কাজ করে আমি ভয়ে রয়েছি, ঠিকমত পরিষদ চালাতে পরবো পারছি না। বরাদ্ধ থেকে হয়তো বঞ্চিত হবো। এ ছাড়াও আমার এলাকার অনেক নেতাকর্মীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ারা বেগম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে পরিবারের মায়া ত্যাগ করে আমার স্বামী স্বাধীকার আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ে ছিল। দেশ স্বাধীন হয়েছে। আজ আমার ছেলে এ্যাড. জামাল হোসেন মিয়া ও কামাল হোসেন মিয়া আওয়ামীলীগ করার অপরাধে একটি মিথ্যা মামলায় পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমি দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি কামনা করে, আমার ছেলেদের প্রতি ন্যায় বিচারের দাবী করছি।
নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরদার বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে আমি নৌকা প্রতিক নিয়ে বিজয়ী হয়েছি। আমার পক্ষে যারাই কাজ করেছে তাদেরকে মামলা হামলা করা হচ্ছে। বিশেষ করে জামাল ও কামালের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র মুলক একটি মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। এ ঘটনাগুলো অত্যান্ত দুঃখজনক। আমি প্রকৃত আসামীদের বিচার ও নিরাপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানী বন্ধের দাবী করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।