চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
দুই
ম্যূর, রাসেলের পরে ক্রমেই তা ভাষার বিশ্লেষণের দিকে ঝুঁকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে এ মতবাদ সংবেদন (ঝবহংধঃরড়হ) ব্যতীত জ্ঞানের অপর কোন মাধ্যমই স্বীকার করতে প্রস্তুুত নয়। “নূরুল ইসলাম মানিক, ইসলামী দর্শনের রূপরেখা, পৃ. ৫”। সমকালীন পাশ্চত্য দর্শন যৌক্তিক দৃষ্টবাদ (খড়মরপধষ ঢ়ড়ংরঃরারংস), প্রয়োগবাদ (চৎধমসধঃরংস), অস্তিত্ববাদ (ঊীরংঃবহঃরধষরংস) সহ আরো দার্শনিকধারা উদ্ভব হয়েছে। এই মতবাদগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন, রমাপ্রসাদ দাস ও শিবপদ চক্রবর্তী, পাশ্চাত্য দর্শনের রূপরেখা (পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্যৎ কলিকাতা, ৩য় সংস্করণ, ১৯৯২), অধ্যায়-ষষ্ঠ ও একাদশ; ঋৎবফবৎরপশ ঈড়ঢ়ষবংঃরড়হ, ঝ.ঔ. ঈড়হঃবসঢ়ড়ৎধৎু চযরষড়ংড়ঢ়যু (ঝঃঁফরবফ ড়ভ খড়মরপধষ চড়ংরঃরারংস ধহফ ঊীরংঃবহঃরধষরংস), (ঞযব ঈযধঢ়বষ জরাবৎ চৎবংং/ খড়হফড়হ ঞযরৎফ ওসঢ়ৎবংংরড়হ, ১৯৬০); অনিল কুমার বন্ধ্যোপাধ্যায়, বিংশ শতাব্দীর পাশ্চাত্য দর্শন (পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ; কলিকাতা ১৯৪৮), অধ্যায়-ষষ্ঠ, অস্টম ও একাদশ; আমিনুল ইসলাম, সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শন (নিউ এজ পাবলিকেশন্স; ঢাকা, তৃতীয় সংস্করণ-১৯৯৯), অধ্যায়-প্রথম, ষোড়শ। ইসলাম, সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শন (নিউ এজ পাবলিকেশন্স; ঢাকা, তৃতীয় সংস্কারণ-১৯৯৯), অধ্যায়-প্রথম, ষোড়শ। এদের মধ্যে যৌক্তিক দৃষ্টবাদের প্রধান প্রধান প্রবক্তরা দর্শন থেকে আল্লাহ্র ধারণা বলে প্রত্যাখান করার প্রয়াস পান যে, অধিবিদ্যক বাক্যসমূহ (গবঃধঢ়যুংরপধষ চৎড়ঢ়ড়ংরঃরড়হং) যেহেতু বাস্তবে যাচাইযোগ্য নয় তাই দর্শনে এগুলো স্বীকার করার প্রয়োজন নেই। “অধিবিদ্যক বাক্য যেমন, আল্লাহ্র অস্তিত্ব আছে, এই জীবন (দুনিয়ার জীবন) অস্থায়ী পরকালীন জীবন স্থায়ী ইত্যাদি। ‘টেবিলের উপর একটি নীল রঙের বই আছে’- বাখ্যটিকে যেভাবে বাস্তবে যাচাই করে এর সত্যাসত্য নির্ণয় করা যায় ঠিক সেভাবে আলালাহ্র অস্তিত্ব আছে’- ধরণের অধিবিদ্যক বাক্যসমূহ বাস্তবে বা চাক্ষুষভাবে যাচাই করে এর সত্যাসত্য নির্ণয় করা যায় ঠিক সেভাবে ‘আল্লাহ্র অস্তিত্ব আছে’ ধরনের অধিবিদ্যক বাক্যসমূহ বাস্তবে বা চাক্ষুষভাবে যাচাই করে এর সত্যাসত্য নির্ণয় করা যায়না বিধায় যৌক্তিক দৃষ্টবাদীরা এধরনের বাক্য এবং বাক্যে বর্ণিত বিষয় (ঋধপঃ) গুলোর অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়। এ বিষয়ে আরো জানার জন্য দেখুন, রমাপ্রসাদ দাস ও শিবপদ চক্রবর্তী, পাশ্চাত্য দর্শনের রূপরেখা, পৃ.১৭৪”। প্রয়োগবাদী চিন্তাধারা অনুযায়ী, “যে সমস্ত বিশ্বাস-ধারনা আমাদের জীবনের সহায়ক হবে তাদেরই আমরা ‘সত্য’ ; বলে স্বীকার করব”। “ডরষষরধস ঔধসবং, চৎধমসধঃরংস (ঘবি ণড়ৎশ, ১৯০৭), ৫৪-৫৫; আমিনুল ইসলাম, সমকালীন পাশ্চাত্য দর্শন, পৃ. ১৭০”। সেই হিসেবে তাদের ভাবটা যেন এমনি যে, ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়েই একজন ব্যক্তিকে আল্লাহ্র ধারণা মনে পোষণ অথবা বর্জন করতে হবে। প্রয়োগবাদী চিন্তাধারার গুরু জেম্স এর বক্তব্য যেন সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে--- “আমাদের যথার্থ মনোভাব এই হওয়া উচিৎ যে, ঈশ্বর (এড়ফ) সম্পর্কীয় কোন বিশ্বাস বা সম্ভাবনা ব্যবহারিক জীবনে কর্যকর হবে তাকেই সত্য বলে মেনে নেব।” “অনিল কুমুর বন্ধ্যোপাধ্যায়, বিংশ শতাব্দীর পাশ্চত্য দর্শন (পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ, ১৯৮৪) পৃ.৮৯”।
আর আস্তিক অস্তিত্ববাদী দার্শনিক-যিনি অস্তিত্তুবাদের গুরু সোরেন কিয়ের্কগার্ডসহ গেব্রিয়েল মার্শেল এবং কার্ল ইয়েসপার্স আল্লাহ্র অস্তিত্বকে স্বীকার করলেও অপর অংশের প্রভাবশালী নাস্তিক অস্তিত্ববাদী দার্শনিক বিশেষ করে অস্তিত্ববাদের প্রচার সচিব বলে খ্যাত, জ্যাঁ-পল-সার্ত্র আল্লাহকে এই বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস করলে ব্যক্তি তার স্বাধীন চিন্তার আলোকে কিছুই করতে পারবে। “ঋৎবফবৎরপশ ঈড়ঢ়ষবংঃড়হ, ঝ.ঔ. ঈড়হঃবসঢ়ড়ৎধৎু চযরষড়ংড়ঢ়যু, চ. ১৮৯”।
অপরদিকে বুদ্ধিবাদী বলে পরিচিত মুসলিম দার্শনিকবৃন্দ গ্রীক দর্শন কিছুটা প্রভাবান্বিত হলেও নিজেদের স্বকীয়তা এবং কুরআন ও হাদীসের প্রতি নিজেদের প্রত্যয়কে সুদৃঢ় রেখে তাঁরা দর্শনে আল্লাহ্র অস্তিত্বকে সমুন্নত রাখার প্রয়াসে অনেক যুকিত্ এবং প্রমাণের আশ্রয় নেন। “নূরুল ইসলাম মানিক, ইসলামী দর্শনের রূপরেখা, “ভূমিকা”। এদের মধ্যে আল-কিন্দী, ইবনে সীনা, আল-ফারাবী, ইবনে রুশদ প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। তবে মধ্যযুগের প্রখ্যাত মুসলিম দার্শিনিক আল-গাযালী এবং আধুনিক যুগের আল্লামা ইকবার আল্লাহর অস্তিত্বকে স্বীকার করেছেন সম্পূর্ণ কুরআনের বক্তব্যের আলোকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।