বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের ভোট আজ রবিবার (৩১ মার্চ) অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে টানা ৪টা পর্যন্ত চলবে এ ভোটগ্রহণ। এ ধাপে দেশের ১০৭টি উপজেলার ভোট হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন থেকে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচনি সামগ্রীসহ নির্বাচন কর্মকর্তারা শনিবার রাত থেকে নিজ নিজ কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। রবিবার নির্বাচনি এলাকাসমূহে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনি উপজেলাগুলোতে চলাচলের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
অন্যান্য ধাপের ধারাবাহিকতায় তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে ইসি তার কঠোর অবস্থানের জানান দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও একাধিক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড় ৪৮টি উপজেলায় অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এসব উপজেলায় নির্বাচন কমিশন তাদের নিজস্ব কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। এসব পর্যবেক্ষককে ব্যালট ছিনতাই, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা, জাল ভোট, অবৈধ প্রভাব বিস্তারসহ কোনও অনিয়মের তথ্য পেলে তাৎক্ষণিকভাবে তা অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪৮টি উপজেলায় অতিরিক্ত বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে অতিরিক্ত বিজিপির পাশাপাশি অতিরিক্ত সংখ্যক র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
চতুর্থ ধাপে ১২২টি উপজেলার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫টি উপজেলার সবগুলো পদের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ওই উপজেলাগুলোতে কোনও ভোটগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না। এ ধাপে ৩৯ জন চেয়ারম্যানসহ ৮৮ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এ ধাপের ৪টি উপজেলায় আদালতের নির্দেশে ও দুটি উপজেলায় নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়েছে। এছাড়া তৃতীয় ধাপের ৬টি উপজেলার ভোট স্থানান্তর করে এ ধাপে আনা হয়েছে।
চতুর্থ ধাপে দেশের ছয়টি বিভাগের ২২ জেলার ১০৭টি উপজেলায় ভোট হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে ৩৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৩৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪০৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা দুই কোটি ৭৩ লাখ ৭ হাজার ৩৪১জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১০ হাজার ৩৮৯টি এবং ভোট কক্ষ ৬৭ হাজার ৯৭৯টি।
এ ধাপের ৮টি জেলার ১৫ উপজেলার সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলাগুলো হলো– ভোলা জেলার ভোলা সদর, মনপুরা ও চরফ্যাশন; যশোরের শার্শা; ময়মনসিংহের গফরগাঁও; ঢাকার সাভার, কেরানীগঞ্জ; কুমিল্লার লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, দেবীদ্বার, চৌদ্দগ্রাম; নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও ফেনীর পরশুরাম।
৬টি উপজেলায় ভোট স্থগিত: চতুর্থ ধাপের ৬টি উপজেলার ভোট স্থগিত হয়েছে। এর মধ্যে আদালতের আদেশে খুলনার ডুমুরিয়া, ফেনীর ছাগলনাইয়া, ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও কুমিল্লার বরুড়া এবং অনিয়মের কারণে ইসি নিজেই নোয়াখালীর কবিরহাট ও পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ভোট স্থগিত করেছে।
পুলিশ সুপার, ইউএনও ও তিন ওসি প্রত্যাহার: চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতা রোধে ব্যর্থ হওয়ায় পিরোজপুর জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবির, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ তিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হচ্ছেন- পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার ওসি এম আর শওকত আনোয়ার ইসলাম, বরগুনা জেলার আমতলী থানার ওসি আলাউদ্দিন মিলন এবং কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি মো. শাজাহান কবির।
ছয় উপজেলায় ইভিএম: চতুর্থ তৃতীয় ধাপের ছয় উপজেলায় ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা ছয়টি উপজেলা হলো, বাগেরহাট সদর, ফেনী সদর, মুন্সীগঞ্জ সদর, ময়মনসিংহ সদর ও পটুয়াখালী সদর । এর আগে তৃতীয়ধাপে ৪টি উপজেলায় ইভিএম এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
১০ এমপিকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ: চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই দফায় সরকারি দলের ১০ জন সংসদ সদস্যকে নির্বাচনি এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে গত ২৬ মার্চ ৭ জন ও শনিবার (৩০ মার্চ) ৩ জনকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ পাওয়া সংসদ সদস্যরা হলেন- টাঙ্গাইল-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাছান ইমাম খান, টাঙ্গাইল-৫ আসনের মো. ছানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল-৮ আসনের মো. জোয়াহেরুল ইসলাম, বাগেরহাট-৪ আসনের মো. মোজাম্মেল হোসেন, খুলনার-৬ আসনের মো. আক্তারুজ্জামান, ময়মনসিংহ-৯ আসনের আনোয়ারুল আবেদীন খান, ময়মনসিংহ-১১ আসনের কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ, যশোর-২ আসনের মো. নাসির উদ্দিন ও যশোর-৪ আসনের রনজিত কুমার রায় এবং নোয়াখালী-৪ আসনের মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী।
যেসব উপজেলায় ভোট: পটুয়াখালী জেলার সদর, দশমিনা, গলাচিপা, কলাপাড়া, মির্জাগঞ্জ, দুমকী ও বাউফল; ভোলা জেলার দৌলতখান, তজুমুদ্দিন ও লালমোহন; বরগুনা জেলার সদর, আমতলী, বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা; পিরোজপুর জেলার সদর, ইন্দুরকানী, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ ও নাজিরপুর; যশোর জেলার সদর, বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর; খুলনা জেলার দিঘলিয়া, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, রূপসা, তেরখাদা, ফুলতলা ও বটিয়াঘাটা; বাগেরহাট জেলার সদর, মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ, কচুয়া, শরণখোলা, চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট; ময়মনসিংহ জেলার সদর, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, ফুলপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, নান্দাইল, মুক্তাগাছা ও ভালুকা; মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর, সিরাজদিখান, লৌহজং, শ্রীনগর, গজারিয়া ও টংগীবাড়ী; নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার, সোনারগাঁও ও রূপগঞ্জ; ঢাকা জেলার ধামরাই, দোহার ও নবাবগঞ্জ; টাঙ্গাইল জেলার সদর, ধনবাড়ী, মধুপুর, মির্জাপুর, দেলদুয়ার, নাগরপুর, ঘাটাইল, ভূঞাপুর, কালিহাতী, গোপালপুর, বাসাইল ও সখীপুর, নরসিংদী জেলার নরসিংদী সদর; কুমিল্লা জেলার তিতাস, চান্দিনা, মুরাদনগর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, মেঘনা ও হোমনা; নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, সুবর্ণচর ও চাটখিল; ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর, সরাইল, আখাউড়া, আশুগঞ্জ, নাসিরাবাদ ও নবীনগর; ফেনী জেলার সদর, ফুলগাজী, সোনাগাজী ও দাগনভুঞা; চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, কক্সবাজার সদর; দিনাজপুর সদর; কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী এবং গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।