গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ শপিং মল ও মার্কেটগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ।
শনিবার রাজধানীর গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে লাগা আগুনের ঘটনাস্থল থেকে তিনি একথা জানান। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের সার্বিক বিষয় তত্ত্বাবধানে রয়েছেন তিনি।
আগুনে হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি জানিয়ে শাকিল নেওয়াজ বলেন, এখানে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ছিল। কেমিক্যাল রিয়াকশনের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তার আগেই আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি।
গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের আগুনে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও দুইদিন আগে বনানীর বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ আগুনে জীবন দিতে হয়েছে ২৫ জনকে। আগুনে দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ৭১ জন। বনানীর ভবনটিতে আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না।
এ ঘটনা তুলে ধরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালককে প্রশ্ন করা হয়- ঢাকার অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর বিরুদ্ধে আপনার কী ধরনের পদক্ষেপ নেবেন। উত্তরে তিনি বলেন, ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে কী কী করতে হবে এত দিন আমরা সে সুপারিশ করেছি। এখন আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় যাব। প্রয়োজনে মার্কেটের সামনে ব্যানার ঝুলিয়ে দেব- ‘এই মার্কেটটি অগ্নি নিরাপত্তায় ঝুঁকিপূর্ণ’।
দুই বছর তিন মাস আগে গুলশানের এই মার্কেটটিতে আগুনের ঘটনা ঘটে। সেই আগুনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফায়ার সার্ভিস মার্কেটটিকে ‘অতি অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করে এবং মার্কেটটি ভেঙে ফেলার সুপারিশ করে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি।
এ বিষয়ে শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘এই মার্কেটে দুই বছর তিন মাস আগে আগুন লেগেছিল (২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি)। এরপরে আমরা কিছু সুপারিশ দিয়েছিলাম। আমরা এই মার্কেটকে অতি অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছিলাম এবং ভাঙার সুপারিশ করেছিলাম। তবে মার্কেট কর্তৃপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে রিট করে। এখন এটা আদালতের বিষয়।’
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে গুলশানের মার্কেটটিকে অতি অগ্নি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও গত দুই বছরেও মার্কেটটিতে অগ্নি নির্বাপকের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। এ বিষয়ে মেজর এ কে এম শাকিল নেওয়াজ বলেন, ‘অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা থাকলে আগুন নিভে যেত। কিন্তু সে রকম কোনো ব্যবস্থা ছিল না।’
শনিবার (৩০ মার্চ) ভোর ৫টা ৪৮ মিনিটে মার্কেটের কাঁচাবাজারের পূর্ব পাশে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি একই মার্কেটে আগুন লেগেছিল। সেই সময় ১৬ ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ওই আগুনে মার্কেটের নিচতলা ও দোতলার মোট ৬০৫টি দোকান পুড়ে যায়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বনানীর ২২তলা এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ৭১ জন আহত হয়েছেন। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।