পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উদ্বোধনের অপেক্ষায় মংলা সমুদ্র বন্দরে নির্মিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল স্টেশন ‘ মংলা অয়েল ইনস্টলেশন’। বন্দর প্রতিষ্ঠার ৬৯ বছর পর সরকারের জনগুরুত্বপূর্ন প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। এ কেন্দ্রে মজুত ও সংরক্ষন করা এবং এখান থেকে দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজসহ সকল প্রকার নৌযানে সরবরাহ করা হবে জ্বালানি তেল। এটি চালু হওয়ার পর বানিজ্যিক জাহাজে জ্বালানি তেলের সংকট নিয়ে চলমান বিড়ম্বনা দূর হওয়াসহ দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলে জ্বালানি তেলের সংকট অনেকটাই পূরণ হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) ও মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, চালনা পোর্ট নামে ১৯৫০ সালে মংলা সমুদ্র বন্দরের যাত্রার শুরুতেই আমদানি-রপ্তানি বানিজ্য সুবিধার পাশাপাশি দেশী-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজে জ্বালানী তেল সরবরাহের (বাঙ্কারিং) কোন সুবিধা না থাকায় এ বন্দরে ডিপো স্থাপনে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে। শিপিং কোম্পানি ও শিপিং এজেন্টসহ ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন মহলে এ দাবির মুখে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ২০০৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মংলা বন্দর এলাকায় ২১নং প্লটে ২৫ একর জমি বরাদ্দ নেয় । এ জমিতে সরকার এক লাখ মেট্রিক টনের দ্বিতীয় তেল স্থাপনা ‘মংলা অয়েল ইনস্টলেশন’ নির্মাণে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে, সে পরিপ্রেক্ষিতে বিপিসির ডিপিপি ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে অনুমোদিত হয়। এরই মধ্যে ৫/৬ জন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ হলেও কাজের কোন অগ্রগতি হয়নি। ২০১২ সালের ৯ জুলাই সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদনের পর প্রকল্প এলাকায় ভূমি উন্নয়নসহ ১ লাখ মেট্রিক টন ধারনক্ষমতা সম্পন্ন ১৪ টি পেট্রোলিয়াম স্টোরেজ ট্যাংক ও অটোগেজিং সিস্টেম স্থাপন, অত্যাধুনিক ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম, সাবস্টেশন নির্মাণ ও ৪টি মেরিন লোডিং আর্ম ডলফিন অয়েল জেটিসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রামস্থ পতেঙ্গায় তিনটি তেল বিপনন কোম্পানির (পদ্মা/মেঘনা/যমুনা) মেইন ইনস্টলেশন অবস্থিত। বর্তমানে চট্টগ্রামস্থ পতেঙ্গার মেইন ইনস্টলেশন হতে তেল আনয়ন করে এ অঞ্চলের চাহিদা পূরন করা হয়। তাছাড়া পতেঙ্গার মেইন ইনস্টলেশনে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেখা দিলে অথবা প্রয়োজন হলে বিদেশ হতে আমদানী পেট্রোলিয়াম পণ্য মংলা অয়েল ইনস্টলেশন স্থাপনায় গ্রহন করে তা বিকল্প ইনস্টলেশন হিসেবে সারাদেশে জ্বালানি তেলের স্বাভাবিক সরবরাহ বজায় রাখতে সক্ষম হবে। এ প্রেক্ষিতে মংলা অয়েল ইনস্টলেশন দ্বিতীয় তেল স্থাপনা হিসেবে ডিপিপি অনুমোদিত হয়েছে।
মংলা অয়েল ইনস্টলেশন হতে কোস্টাল ট্যাংকারের মাধ্যমে দৌলতপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল ডিপোসমূহ ও পাওয়ার প্লান্টসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠানে জ্বালানি তেল সরবরাহ সহজতর হবে।
নব নির্মিত এ জ্বালানী তেল ডিপো প্রসঙ্গে মংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও শিপিং ব্যবসায়ী শেখ বদিউজ্জামান টিটু জানান, বিশ্বের সকল বন্দরে বাঙ্কারিং সুবিধা থাকলেও এতদিন এ বন্দরে তেল ডিপো না থাকায় মাদার ভ্যাসেল (জাহাজ) কোম্পানি, শিপিং এজেন্টসহ ব্যবসায়ীদের নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। জ্বালানি তেলের অভাবে অনেক বানিজ্যিক জাহাজ এ বন্দরে দিনের পর দিন আটকে থাকার ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া মাদার ভ্যাসেলের জন্য চট্রগ্রাম বন্দর, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে হয়েছে। এতে যেমন অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় তেমনি সময় অপচয় সহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। তিনি আরো জানান, নতুন এ তেল ডিপো স্থাপিত হওয়ায় এ বন্দরের জন্য গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখবে।
মংলা ওয়েল ইনস্টলেশন (বিপিসি) প্রকল্প কর্মকর্তা মোসাদ্দেক হোসেন জানান, এ প্রকল্পের মেয়াদ আগামি জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই এর যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন যে কোনো সময় এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি আরো জানান, এটি চালু হলে জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিতসহ মংলা বন্দরে বানিজ্যিক জাহাজের আগমন ও কাজের গতি বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে দক্ষিণ-উত্তরাঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও ব্যবসা বানিজ্যের প্রসার ঘটবে।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান (বিএন) জানান, তেল ডিপো স্থাপিত হওয়ায় বাণিজ্যিক জাহাজে তেল সরবরাহ নিশ্চিত হবে। দূর হবে দীর্ঘদিনের চলমান ভোগান্তি। জ্বালানি তেলের অভাবে বানিজ্যিক জাহাজ সমূহকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ সমস্যার সমাধান হবে এবং বিদেশীদের কাছে এ বন্দরের গুরুত্ব বাড়বে। সকল প্রকার জ্বালানি তেল সরবরাহ নিশ্চিত হওয়াসহ বন্দরে জাহাজের আগমন বৃদ্ধি ও আমদানী রপ্তানি পন্যের চাপ বৃদ্ধিসহ বাড়বে কাজের গতি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।