Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মোদি সরকারের কাজে অসন্তুষ্ট জনগণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৯, ৬:৩৬ পিএম

ভারতের সাধারণ নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদির সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলল একটি সমীক্ষা। দেশে কর্মসংস্থান-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেমন কাজ করেছে মোদি সরকার, এ বিষয়ে দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) একটি সমীক্ষা করেছে। প্রায় তিন লক্ষ ভোটারের উপর করা এই সমীক্ষায় মোদি সরকার সব ক্ষেত্রেই মাঝারিরও নীচে নম্বর পেয়েছে। সমীক্ষা থেকেই স্পষ্ট, মোদির ‘ভালো দিন’ বাস্তবে স্লোগান হয়েই রয়ে গিয়েছে। পাঁচ বছরে বেকারত্ব তো কমেনিই, বরং যত দিন এগিয়েছে চাকরির চাহিদা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতের মোট ৫৩৪ লোকসভা কেন্দ্রের ২ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪৮৭ ভোটারকে নিয়ে এই সমীক্ষা চালিয়েছে এডিআর। ২০১৮ সালে অক্টোবর এবং ডিসেম্বরের মধ্যে এই সমীক্ষা হয়েছিল। সমীক্ষাটি মূলত ভোটারদের প্রথম দশ দাবি বা চাহিদা নিয়ে। তাতে তালিকার শীর্ষে রয়েছে কর্মসংস্থান। ভোটাররা তালিকায় দ্বিতীয় অগ্রাধিকার দিয়েছেন চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তাকে। তৃতীয় খাবার পানি। তার পর যথাক্রমে রাস্তাঘাট, যানবাহন, সেচের পানি, কৃষিকাজে ঋণের সুবিধা, কৃষিজাত দ্রব্যের ক্রয়মূল্য বাড়ানো, সার এবং বীজে ভর্তুকি এবং আইন-শৃঙ্খলা বা বিভিন্ন পলিসির প্রয়োজনীতার কথা জানিয়েছেন ভোটাররা। শহর এবং গ্রামে এই তালিকায় একটু হেরফের হলেও দু’ক্ষেত্রেই ভোটাররা কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
২০১৭ সালে অল ইন্ডিয়া মিড-টার্ম নামে ঠিক এমনই একটা সমীক্ষা করেছিল এডিআর। ২০১৮ সালে এডিআর-এর সমীক্ষার সঙ্গে তার তুলনা করলে ফল আরও মারাত্মক বেরিয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, তখনও জনগণের জন্য চাকরি সুযোগ দেওয়া এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এই দুই ক্ষেত্রেই সবচেয়ে অসফল ছিল সরকার।
এই পুরো বিষয়টাকে এডিআর ১, ২, ৩ করে ৫ পর্যন্ত রেটিং করেছে। ৫-এর অর্থ ভাল। ৩-এর অর্থ মাঝারি এবং ১-এর অর্থ খারাপ। যে প্রথম ১০ প্রয়োজনীতাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন ভোটাররা, সে সমস্ত ক্ষেত্রে সরকার কেমন কাজ করেছে, তা বোঝানোর জন্যই এই রেটিং। এডিআর-এর সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা গিয়েছে, প্রতিটা ক্ষেত্রেই সরকারের নম্বর মাঝারির থেকেও কম। এমনকি তালিকার এই ১০টি ক্ষেত্রেই সরকারের নম্বর এক বছরে বাড়ার বদলে বরং কমেছে।
কর্মসংস্থানের বিষয়ে সরকারের নম্বর যেখানে ২০১৭ সালে ছিল ৩.২, সেখানে ২০১৮ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২.২। চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই নম্বর ২০১৭ সালের সমীক্ষার ৩.৭ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২.৪। সে রকম পানীয় জল এবং রাস্তাঘাটের ক্ষেত্রেও ২০১৭ সালের চেয়ে নম্বর কমেছে সরকারের।
এর মধ্যে রাজ্য অনুযায়ী দেখলে, বিহার, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশ এই সাত রাজ্যে কর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয়তা অন্য রাজ্যগুলোর তুলনায় বেশি। তেমনই ওড়িশা, কর্ণাটক এবং দমন-দিউয়ে খাবার পানির সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়তার কথা ভোটার জানিয়েছেন। ঠিক যেমন চন্ডীগড়ে ভোটারদের অগ্রাধিকার পানি এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ, দিল্লির যানজট, মেঘালয়ের কৃষি বীজ এবং সারে ভর্তুকি এবং ত্রিপুরায় ভোটাররা অগ্রাধিকার দিয়েছেন কৃষিকাজের জন্য ঋণের সুযোগকে। পশ্চিমবঙ্গের ভোটাররা কোন প্রয়োজনীয়তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন তা অবশ্য আলাদা করে এডিআর-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সমীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ নেই।
চলতি মাসেই বেকারত্বের বৃদ্ধি নিয়ে আরও একটি পরিসংখ্যান বেরিয়েছিল। সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই)-এর সমীক্ষায় তখন দেখা গিয়েছিল, গত এক বছরে দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৭.২ শতাংশ। যেখানে গত বছর ঠিক এই সময়ে বেকারত্বের হার ছিল ৫.৯ শতাংশ। মোদি যতই কর্মসংস্থানের হিসাব দিন না কেন, বাস্তব যে ততটা সহজ নয়, এডিআর এই সমীক্ষা থেকে তা আরও একবার স্পষ্ট হল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ