নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দক্ষিণ এশিয়ার নারী ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার পথে ভারতবাধা টপকাতে পারেনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের মেয়েরা। সেমিফাইনালে এই শক্তিশালী প্রতিপক্ষের কাছে বড় হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিলো তারা। বুধবার বিকেলে নেপালের বিরাটনগরস্থ সাহিদ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে শেষ চারের দ্বিতীয় ম্যাচে টুর্নামেন্টের চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত ৪-০ গোলে বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে পৌঁছে যায়। বিজয়ী দলের হয়ে ইন্দুমাথি দু’টি এবং দালিমা চিব্বার ও মনীষা একটি করে গোল করেন। এদিন সকালে একই ভেন্যুতে প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিক নেপাল একই ব্যবধানে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। নারী সাফের ফাইনালে শুক্রবার ভারতকে মোকাবেলা করবে নেপাল। সাহিদ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
বয়সভিত্তিক আর জাতীয় দলের প্রতিযোগিতার মধ্যে যে বিশাল ফারাক তা হারে হারে টের পেল লাল-সবুজরা। বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক সাফল্য পেয়ে উড়তে থাকা বাংলাদেশের মারিয়া মান্ডা, আঁখি খাতুন, মনিকা চাকমা ও তহুরা খাতুনদের এক ঝটকায় মাটিতে নামিয়ে আনলো নেপাল ও ভারতের মেয়েরা। সেমিফাইনালের আগে ‘এ’ গ্রæপের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক দলের কাছে ৩-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। এবার শেষ চারে আরো বড় হার। অভিজ্ঞতা, টেকনিক ও ট্যাকটিসে যোজন যোজন এগিয়ে থাকা ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে আলো ছড়াতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। ফলে ম্যাচে নিয়মিত গোল আদায় করে নেয় ভারতীয়রা। প্রথমার্ধেই তিন গোল হজম করে বাংলাদেশ। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। যথারীতি শক্তিশালী প্রতিপক্ষের কাছে বড় হারে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। গত আসরের ফাইনালে এই ভারতের কাছে হেরেই রানার্সআপ হয়েছিল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। এবার সেমিতে দেখা দু’দলের। যদিও এ দেখা বাংলাদেশের জন্য সুখকর হয়নি।
ম্যাচে বড় ব্যবধানে হারলেও বুধবার বাংলাদেশের শুরুটা ছিল কিন্তু দারুণ। সাবিনা, কৃষ্ণা, সানজিদা ও স্বপ্না-এই চার ফরোয়ার্ড নিয়ে নামা বাংলাদেশ শুরু থেকেই বলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে রেখে আক্রমণে আধিপত্য রাখে। ১০ মিনিটে প্রথম কর্নার পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচের ১৫ মিনিটে বাংলাদেশের পোস্টে প্রথম শট নেয় ভারত। দালিমা চিব্বারের ফ্রি কিক ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়। ১৮ মিনিটে প্রথম গোল পায় ভারতীয়রা। এসময় সাঞ্জু যাদবের কর্নারে বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা লাফিয়ে উঠে বল গ্রিপে নিতে ব্যর্থ হলে দালিমা আলতো টোকায় তা জালে জড়িয়ে দেন (১-০)। পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফেরার সুযোগ পেলেও ব্যর্থ হয় লাল-সবুজরা। ২১ মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে বল পেয়ে কৃষ্ণা ও স্বপ্না তা কাজে লাগাতে পারেননি। কৃষ্ণা ডিফেন্ডারের গায়ে শট নেয়ার পর স্বপ্না দুর্বল শটে হতাশ করেন। ভারতীয়রা গতিময় ফুটবল খেললে আরো পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পাল্টা আক্রমণ থেকে পরপর আরো দু’গোল আদায় করে নিলে চালকের আসনে বসে ভারত।
২৩ মিনিটে নিজেদের ডি-বক্সের একটু ওপর থেকে লম্বা করে বাড়ানো বল সাঞ্জু নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডানে থাকা ইন্দুমাতিকে বাড়ান। রক্ষণে থাকা একমাত্র ডিফেন্ডার শিউলি আজিমের করার কিছু ছিল না। অনায়াসেই শটে গোল করেন ইন্দুমাথি (২-০)। ৩৭ মিনিটে সান্দিয়ার নিচু ক্রসে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে রুপনাকে একা পেয়ে স্কোরলাইন ৩-০ তে আনেন ইন্দুমাথি। এরপর মারিয়ার ফ্রি কিকে আঁখির হেড ভারতীয় ডিফেন্ডার হেডে বিপদমুক্ত করলে গোল পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। ম্যাচের যোগকরা সময়ে (৯০+৩ মিনিট) ভারতের পক্ষে চতুর্থ গোল করেন মনীষা (৪-০)। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ভারত। আর ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে এক জয় ও দুই হার দিয়ে সাফের পঞ্চম আসর শেষ করে বাংলাদেশ।
সাফের পরিসংখ্যানে অজেয় যাত্রা ধরে রাখল ভারত। আগের ২১ ম্যাচে ২০টিতে জয়। ড্র মাত্র একটি। আর তা হলো ২০১৬ সালের সাফে বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে। সাফ, অলিম্পিক বাছাই, সাউথ এশিয়ান গেমস মিলিয়ে এ নিয়ে ১০ ম্যাচে নয়বার ভারতের কাছে হারল লাল-সবুজরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।