প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
গেল শুক্রবার (১৫ মার্চ) নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে বর্বরোচিত এক সন্ত্রাসী হামলা দেখলো পুরো বিশ্ব। দেশটির শহর ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় ৪৯জন নিহত হয়েছেন। আর এই ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে ফিরেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার। হ্যাগলি ওভালের নিকটে থাকা আল নূর মসজিদে শুক্রবার জুম্মার নামাজের জন্য যাচ্ছিলেন টাইগার ক্রিকেটার তামিম, মুশফিক, মিরাজরা। তবে মাত্র ৫০ গজ দূর থেকেই তারা জানতে পারেন মসজিদের ভেতর এক সন্ত্রাসী গুলি করে নির্বিচারে মুসলিমদের হত্যা করছে।
এ সময় বাংলাদেশ দলের সঙ্গে কোনো নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। ফলে খুব দ্রুতই পায়ে হেঁটে বাসে ফেরত আসেন ক্রিকেটাররা। বলা যায় এ যাত্রায় টাইগাররা মৃত্যুর খুব কাছ থেকেই বেঁচে ফেরেন। এ হামলার পরপরই প্রিয় ক্রিকেটারদের নিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন সোনার বাংলার সাধারণ মানুষেরা। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের আনাচে-কানাচে থাকা বাঙ্গালিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন বাংলার দামাল ছেলেদের প্রতি মুহুর্তের খবর জানতে। রিয়াদরা দেশে না আসা পর্যন্ত তাদের ভক্তদের চোখের ঘুম এক প্রকার হারাম হয়ে যায়। তবে আশার খবর হচ্ছে টাইগার ক্রিকেটাররা ইতোমধ্যেই অক্ষত অবস্থায় দেশে ফিরেছেন। তারা দেশে ফেরায় ভক্তরাও যেন হাপ ছেড়ে নিশ্বাস নিচ্ছেন।
প্রিয় ক্রিকেটারদের এমন বিপদের খবর শুনে সাধারণ ভক্তদের পাশাপাশি রীতিমতো ঘাবরে গিয়েছিলেন শোবিজ তারকারাও। তার প্রমাণও মিলেছে বিভিন্ন ভাবে। এ ঘটনায় টেলিভিশন, সংবাদপত্র থেকে শুরু করে নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাইন্টে ক্ষোভ ঝরানো কন্ঠে অসংখ্য তারকা জানিয়েছেন ঘৃণা। সেই সঙ্গে দ্রুত প্রিয় ক্রিকেটারদের দেশে ফিরিয়ে আনা আকুতিও জানিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের কাছে।
সম্প্রতি মুশফিকরা দেশে ফিরেছেন। তামিমদের দেশে ফেরার খবরটি যেন সাধারণ ভক্তদের পাশাপাশি শোবিজ তারকাদের মনেও একটি স্বস্তির নিশ্বাসের মতোই। এসবের প্রমাণ মিলেছে এই প্রতিবেদনটিতেও। আজ বরিবার (১৭ই মার্চ) দুপুরে ইনকিলাবের সঙ্গে কথা হয় বেশ কয়েকজন তারকার। এই তালিকায় আছেন দুই বাংলার ব্যস্ত নায়িকা নুসরাত ফারিয়া। এছাড়া আছেন সুপার মডেল ও অভিনেত্রী শাহতাজ। আছেন বডি বিল্ডার হিরো ও ‘ঢাকা অ্যাটাক’র অন্যতম নায়ক এ বি এম সুমন। আছেন দর্শক নন্দিত মডেল অভিনেত্রী সাবিলা নূরও।
নুসরাত ফারিয়া বলেন, ‘সত্যিই একটি অমানবিক ঘটনার জন্ম হয়েছে একটি সভ্য দেশে। এটা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। যখন সংবাদটা পেয়েছি তখন থেকেই হতবাক হয়ে গিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কিছু শব্দের মেলবন্ধনে নিজের মনের কথা হয়তো বোঝানো সম্ভব নয়। তবে দোয়া করি এই নারকীয় হামলায় যারা শহীদ হয়েছেন তাদের জন্য। সেই সঙ্গে বিশ্বাসও করি আল্লাহ নিশ্চিই তাদের যোগ্য আসনেই স্থান দেবেন।’
শাহতাজ বলেন, ‘এই হামলা কোনো ধর্মের সুস্থ কোনো মানুষ করতে পারেন না। যিনি এমন নেককার ঘটনার জন্ম দিয়েছেন তিনি একজন মানসিক রোগী বললে হয়তো ভুল হবে না। তার এমন কর্মকান্ডে উৎসাহি হয়ে উগ্রপন্থিদের জন্মও হতে পারে। এদিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ নজর রাখা জরুরি বলে মনে করছি। এই হামলার শিকার হতে যাচ্ছিলেন আমাদের প্রিয় ক্রিকেট তারকারা। এদিক থেকে বলতেই হয়, দামাল ছেলেদের ওপরওয়ালা তার নিজের হাতেই রক্ষা করেছেন। এ জন্য তাঁর দরবারে অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি। বিষয়টি ভাবতে সত্যিই শরীরে কাঁটা দিয়ে ওঠে। যারা নাকি আমাদের দেশকে রিপ্রেজেন্ট করে সারা বিশ্বে। তাদের উপর এমন হামলা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি এই হামলার তীব্রনিন্দা জানায়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডকেও বিশেষ ভাবে আমাদের প্রিয় তারকাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কাজ করারও অনুরোধ জানায়। শুধু তাই নয়, বিশ্বের সকল নেতাদের প্রতি অনুরোধ মুসলমানদের ইবাদতের স্থান মসজিদের নিরাপত্তার বাড়ানোর। যাতে করে ভবিষ্যতে এমন আর কোনো নেককার জনক ঘটনার জন্ম না হয়।’
এ বি এম সুমন বলেন, ‘অন্যান্য রাষ্ট্রের দিকে খেয়াল করলে দেখা যাবে তাদের ক্রিকেটাররা দেশের বাহিরে খেলতে গেলে নিজস্ব সিকিউরিটির ব্যবস্থা করে থাকেন সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যাক্তিরা। এদিক থেকে অবশ্যই আমাদের ক্রিকেটাররা অবহেলিত। তবে এই হামলা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমার বিশ্বাস ইতোমধ্যে আমাদের দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যাক্তিদের টনক নড়েছে। এমন ঘটনায় যে কেউ পড়তেই পারে এটাই স্বাভাবিক। যদিও কারো কাম্য নয়। তবে এটা রুখতে আগের থেকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। আমি ব্যক্তিগত ভাবে অনুরোধ করছি বাংলাদেশ কিকেট বোর্ডের কর্তা ব্যাক্তিদের। ভবিষ্যতে দেশ এবং দেশের বাহিরে টাইগারদের নিরাপত্তা যেন অরো কটোর ভাবে জোরদার করা হয়। সেই সঙ্গে দোয়া রইলো যারা এই ঘৃণ হামলায় জীবন দিয়েছেন তাদের জন্য।’
সাবিলা নূর বলেন, ‘এমন ঘটনা কারো কাম্য নয়। পুরো বিশ্বকে নাড়া দিয়েছেন ব্রেন্টন ট্যারেন্টের নামক মানুষ রুপের ওই পুশুটা। যারা এই পশুর অঘাতে জীবন দিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জানায়। সেই সঙ্গে দোয়া করি যেন দ্রুত আহত সবাই পুনোরাই স্বাভাকিব জীবনে ফিরতে পারেন। আমাদের অহংকারদের (ক্রিকেটাররা) জন্যও দোয়া রইলো। যেন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তারা এই ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেন। এবং মাঠে ফিরতে পারেন। আল্লাহর দরবারে কৃজ্ঞতা। তিনিই সব কিছুর মালিক। তিনি এর বিচার অবশ্যই করবেন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।