Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিলেটে প্রায় ১৮ লাখ ভোটার বেছে নিবেন নতুন জনপ্রতিনিধি

আগামীকাল ভোটগ্রহণ

মিসবাহ উদ্দীন আহমদ | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৯, ৫:২৮ পিএম

রাত পোহালেই ভোটগ্রহণ। দেশের মোট ১২৯টি উপজেলার সাথে সিলেট জেলার ১২ উপজেলাতেও আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল কাঙ্খিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এর মধ্যে সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাতে ১০ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। বিগত দিনগুলোতে মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় সেটি আটকে ছিল। ফেঞ্চুগঞ্জসহ অন্য ১২ উপজেলার মধ্যে আছে সিলেট সদর উপজেলাও। সেজন্য ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২য় ধাপের এই নির্বাচনকে ঘিরে সিলেট জেলাতে বিরাজ করছে উৎসাহ উদ্দীপনা। তবে সেটি আরোও বেশি হতো যদি বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশে নিতো। সরকারের সাথে মতপার্থক্যের কারণে এবং বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তবে কিছু কিছু উপজেলাতে বিএনপি নেতারা দলের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। সেসব উপজেলাতে বেশ শক্তিশালী অবস্থানেও আছেন তারা।
সোমবার সিলেট বিভাগের দুই জেলা সিলেটে ও মৌলভীবাজারের ১৯টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দুই জেলাতে রয়েছেন নারী-পুরুষ মিলিয়ে ৩০ লক্ষাধিক ভোটার। সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্টিত হবে। ৫ম উপজেলা নির্বাচনের ২য় ধাপে ১২৯টি উপজেলার মধ্যে সিলেটের ১২টি উপজেলাগুলো হচ্ছে- সিলেট সদর, বালাগঞ্জ, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার।
নির্বাচন কমিশনসূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলার ১২ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৭১০ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৮ হাজার ৯০ জন, মহিলা ভোটার ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৮১৬টি।
সিলেটের সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার খোরশেদ আলম জানান, ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে বর্তমানে নির্বাচনী কাজে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
নির্বাচন কমিশনের রিটানিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) স্বন্দ্বীপ কুমার সিংহ জানিয়েছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ইতিমধ্যে কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পাঠানো শুরু হয়েছে।
সিলেটের ১২ উপজেলায় ১৪ হাজার ৫৭ জন ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন।
অন্যদিকে নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলাগুলোতে মোটর সাইকেলসহ সব ধরণের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা, বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞাসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আশফাক আহমদ তৃতীয়বারের মতো তাকে বিজয়ী করতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, সিলেট সদর উপজেলাকে ‘অবহেলার’ বদনাম ঘুচিয়ে গত ১০ বছরে চেহারা বদলে দিয়েছেন। বর্তমান সকারের উন্নয়নের মহাযাত্রায় সিলেট সদর উপজেলার মানুষও সম্পৃক্ত। আবার বিজয়ী হলে অসমাপ্ত কাজ তিনি সম্পন করবেন। আশফাক আহমদ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে কি না- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই প্রার্থীর কারণে আমার ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ তিনি দাড়িয়েছেন অন্যদের ইন্ধনে। সদর উপজেলার খেলার মাঠে মেলার অভিযোগ প্রসঙ্গে আশফাক আহমদ বলেন, ওই মাঠ একসময় আমার অধিনে ছিল। এখন সেখানে মেলা করার অনুমতি মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে। খেলার মাঠে খেলাধূলা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
অন্যদিকে জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা মাজহারুল ইসলাম ডালিম এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। এবার প্রথম স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে সদর উপজেলার সর্বত্র নজর কাড়ছেন তিনি। বিগত সদর উপজেলার নির্বাচনে বিএনপি থেকে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বি হওয়ায় কেউ বিজয়ী হতে পারেননি। এবার মাজহারুল ইসলাম ডালিম বিএনপি ঘরানার একক প্রার্থী হওয়ায় আশফাক আহমদের দুর্গে নীরবে হানা দিতে পারেন এমনটি বলছেন ভোটাররা।
বিএনপি ভোট বর্জন করলেও অনেক নেতা গোপনে ডালিমের পক্ষে মাঠে কাজ করছেন। প্রকাশ্যে সভা সমাবেশে না এসে বিএনপির উপজেলা পর্যায়ের নেতা ও বিএনপির বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ডালিমের পক্ষে সক্রিয় রয়েছেন। তাই নির্বাচনে নীরব ভোট বিপ্লব ঘটাতে পারেন মাজহারুল ইসলাম ডালিম এমনটি বলছেন এ উপজেলার ভোটাররা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপজেলা পরিষদ নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ