Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোদাগাড়ীতে বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত।

মোঃ হায়দার আলী, গোদাগাড়ী (রাজশাহী) | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৯, ৪:১৯ পিএম

আজ ১৭ মার্চ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্ম বার্ষিকী। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের এ দিবসটি জাতি রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। এ উপলক্ষ্যে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসন র‌্যালি, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরনের আয়োজন করা হয়। সকাল ৯ টার সময় উপজেলা পরিষদ থেকে র‌্যালিটি বের করে ফিরোজ চত্তর ঘুরে এসে উপজেলা শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়।
উপজেলা পরিষদ নতুন অডিটারিয়ামে আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: শিমুল আকতারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী Ñ ১ আসনের এমপি, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান মোঃ ইসহাক, প্রভাষক আকবর আলীর সঞ্চলানায় উপস্থিত ছিলেন নবনির্বাচিত উপজেলার চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মো আব্দুল মালেক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খাতুন মিলি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সস্পাদক আব্দুর রশিদ, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শামসুল কবীর, অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, মাইনুল ইসলাম, সাবেক অধ্যক্ষ এনামুল হক, বরজাহান আলী পিন্টু, প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী, গোদাগাড়ী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএম কামরুজ্জামান বকুল প্রমূখ।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বঙ্গবন্ধুর শিশু প্রেম বিবেচনায় নিয়ে তার জন্ম দিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

শিশুর জন্য একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং সুন্দর আগামীর প্রত্যাশার মধ্যদিয়ে সারা দেশে পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিন ও ২৪ তম জাতীয় শিশু দিবস। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় র‌্যলি, কুইজ, চিত্রাংকন, রচনা, আলোচনা, মোনাজাতসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে বই, খাতা, কলম প্রদান করা হয়। প্রত্যেক গ্রুপের প্রথম স্থান অধিকারীকে ৫টি খাতা, ৫ টি কলম, দ্বিতীয় অর্জনকারীকে ৪ টি খাতা, ৪টি কলম এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারীকে ৩ টি খাতা ও ৩ কলম প্রদান করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ গ্রহনকারী ৪২৩ জন ছাত্রীকে ৩০ টাকা মূল্যের ১ টি করে খাতা প্রদান করা হয়। পরিশেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ধর্মীয় শিক্ষক মোঃ মোমিনুল হক।

অনুরুপ অনুষ্ঠান করেন গোদাগাড়ী মহিলা ডিগ্রী কলেজ, রাজাবাড়ী ডিগ্রী কলেজ, শাহ সুলতান (রহ:) কামিল মাদ্রসা, সোনাদিঘি উচ্চ বিদ্যালয়, রাজাবাড়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজাবাড়ী হাট উচ্চ বিদ্যালয়, ললিত নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মহিশালবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যলয়সহ গোদাগাড়ী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়েরা খাতুনের কোল জুড়ে বাঙালির বহু শতাব্দীর পরাধীনতার শৃঙ্খল মোচনে শান্তি ও মুক্তির বার্তা নিয়ে সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এই বয়সী অনেক রাজনেতিক এবং বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিত্বের নেতৃত্ব এবং স্ব-স্ব কর্মকান্ডে নিয়োজিত থাকার নজির থাকলেও বাঙালীর জাতির পিতাকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাত্র ৫৫ বছর বয়সে প্রাণ দিতে হয়েছে। শুরুতে তিনি ছিলেন দুরন্ত খোকা, কিশোর-মুজিবুর। অনেকের কাছে মুজিব ভাই। এরপর মুজিবুর রহমান, অথবা শেখ মুজিবুর রহমান। তার পর বহুদিন ধরে মানুষের মুখে মুখে তার নাম ছিল ‘শেখ সাব’। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন পরিচয় ‘বঙ্গবন্ধু’। একাত্তরের পর তিনিই স্বাধীন দেশের স্থপতি ‘জাতির পিতা’। তিন দশক সময়কালের মধ্যে এভাবেই ঘটেছিল তার অবস্থানের উত্তরণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন। ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার এই অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়।

তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন। তার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে-ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্ততি নিতে থাকে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্থানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তাস্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরুকরে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। যা গত বছর ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার এ অন্তভুক্তির মাধ্যমে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাজশাহী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ