নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
খেলোয়াড় দলবদল নিয়ে ক্লাবকর্তাদের সঙ্গে মনোমালিন্য, এরপর ক্লাব ছেড়ে চলে যাওয়া। কিন্তু দুঃসময়ে প্রিয় ক্লাবের ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারেননি জিনেদিন জিদান। পদত্যাগের ঠিক ২৮৩ দিন পর আবারও রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে ফিরেছেন ক্লাবটির সাবেক মিডফিল্ডার, কোচ ও ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা। এ নিয়ে এক মৌসুমে তিনবার কোচ বদল করলো ইউরোপিয়ান জায়ান্ট খ্যাত মাদ্রিদের দলটি।
রিয়ালে ফিরে নিজের প্রথম প্রতিক্রিয়ায় জিদান জানিয়েছেন, মাদ্রিদে ফেরার ব্যপারে তার কখনোই কোনো সন্দেহ ছিল না। রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এক সংবাদ সম্মেলনে জিজু বলেন, ‘আমাকে প্রথম যখন ক্লাব সভাপতি ফ্লোরেনতিনো পেরেজ ডেকেছেন তখনই আমার মনে হয়েছে আমি যাব। আমি তাকে না বলিনি, আসলে ভালবাসার টানেই আমি ফিরেছি।’ ৪৬ বছর বয়সী বলেন, ‘আমি গিয়েছিলাম কারণ মৌসুমের শেষে ক্লাবে পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল। এতগুলো শিরোপা জেতার পর এটা সকলের জন্যই দরকার ছিল। আমি ফিরে এসেছি কারণ সভাপতি আমাকে ডেকেছে। আমি তাকে ভালবাসি, এই ক্লাবকে ভালবাসি, সে কারণেই আমি এখানে, আর কিছু না।’ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত জিদানের সাথে চুক্তি হয়েছে রিয়ালের।
জিদানের অধীনে টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতে রেকর্ড সৃষ্টি করার পরেই মাদ্রিদ ছেড়েছিলেন এই ফ্রেঞ্চ তারকা। তবে ঐ সময় তার ক্লাব ছেড়ে যাবার বিষয়টি অনেকেই ইতিবাচক হিসেবেই দেখেছিল। এরপর আসেন লোপেতেগি। তার আসা নিয়েও কম নাটক হয়নি। বিশ্বকাপের ঠিক তিন দিন আগে রিয়াল ঘোষণা করে কোচ হিসেবে লোপেতেগির নাম। লোপেতেগি তখন স্পেন দলকে নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের মিশনে। স্প্যানিশ ফুটবল কোনো দেরি না করে লোপেতেগিকে বরখাস্ত হরে। সেই স্প্যানিশ কোচ রিয়ালে স্থায়ী হয়েছিলেন মাত্র তিন মাস। এরপর আসেন সোলারি।
সোলারির অধীনে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে রিয়াল। মাত্র এক সপ্তার ব্যবধানে ঘরের মাঠে বার্সেলোনার বিপক্ষে দুই ম্যাচে ও আয়াক্সের বিপক্ষে পরাজিত হয়ে রিয়াল একে একে কোপা ডেল রে, লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন থেকে ছিটকে পড়ে। লিগে আর মাত্র ১১টি ম্যাচ বাকি, পিছিয়ে ১২ পয়েন্টে। লিগে রিয়ালের শিরোপা জয়েরও কোন সম্ভবনা নেই বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে জিদানের ফিরে আসাটা অনেককেই বিস্মিত করেছে।
অন্তত এই মৌসুমে জিদানের উপর কোনো প্রত্যাশার চাপ নেই। খেলোয়াড়দের সাথে আবারো তার একত্রিত হওয়াটা অনেকটাই মানসিক স্বস্তির বিষয় বলেও মনে করছেন অনেকে। প্রায় প্রতিটি খেলোয়াড়ের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন জিদান। গ্যারেথ বেলের মত তারকার ভবিষ্যত যেখানে একেবারেই অনিশ্চিত সেখানে জিদান তাকে রক্ষা করবে বলে ইঙ্গিত রয়েছে।
যে দলটিকে নিয়ে জিদান তিন বছর কাজ করেছিলেন তার থেকে বেশ কিছু পরিবর্তনে এখন জিদানের সামনে অনেকটাই নতুন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। জিদানের দল থেকে চলে গেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। আবার থিবো কর্তোয়া, ভিনসিয়াস জুনিয়র, সার্জিও রেগুইলোনের মত তরুণরা দলে এসেছেন। আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে জিদানের অধীনে নতুন একটি রিয়াল মাদ্রিদকে দেখার প্রত্যাশায় রয়েছে সমর্থকরা। যেখানে পুরোনো খেলোয়াড়দের প্রতিনিধিত্ব করবেন মূলত তরুণ প্রতিভারা।
জিদান বলেন, ‘আমরা যা অর্জন করেছি তা আমি ভুলতে চাইনা। আবার এই মৌসুমে কি হারিয়েছি সেটাও ভুলবো না। আমরা লিগ ও কাপে পরাজিত হলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জয়ী হয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমি কোথায় দাঁড়িয়ে আছি সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আমরা আগামী বছর সবকিছু পরিবর্তন করবো। কিন্তু এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি ফিরে এসেছি। সভাপতি ও ক্লাবের সাথে আলোচনা করেই আমরা পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো।’
দায়িত্ব নিয়ে নভেম্বরে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে কোচ সোলারি জিদান সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘এই ক্লাবে অন্যতম একজন সেরা কোচ তিনি ছিলেন। জিদান সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে বিশ্বের সব ভাল জিনিসই কম হয়ে যাবে। সে একজন অসাধারণ কোচ, তার সাথে কারোরই তুলনা হয় না।
জিদান তার খেলোয়াড়ী জীবনেও অন্যতম সেরা একজন খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৯৮ সালে জেতেন বিশ্বকাপ। অবসর ভেঙে ২০০৬ সালে বিশ্বকাপেও ফ্রান্সকে ফাইনালে তোলার পথে তিনি নেতৃত্ব দেন। ক্লাব ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদের জার্সি গায়ে ২০০২ জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ফ্রান্সে ‘জিজু’ নামে পরিচিত জিদান ১৯৯৮, ২০০০ ও ২০০৩ সালে ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। পাঁচ বছর ইতালিয়ান লিগে খেলার পর ২০০১ সালে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিয়েছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।