Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাবর যা করেছেন পাল্টানো যাবে না, অযোধ্যা মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের মত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৯, ৩:১৯ পিএম

অযোধ্যা মামলার মধ্যস্থতা নিয়ে রায় স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ মামলার শুনানিতে বলেছে, বাবর কী করেছিলেন, তা বিবেচ্য নয়। এই মামলা শুধু সম্পত্তি নিয়ে নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আবেগ ও বিশ্বাস। বুধবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ মামলার শুনানিতে বলেছে, এই মামলা শুধু সম্পত্তি নিয়ে নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আবেগ ও বিশ্বাস। 

প্রধান বিচারপতি এবং বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ ও এসএ নাজিরের বেঞ্চের কথায়, 'এটা শুধু সম্পত্তি নয়। এটা মনের ব্যাপার। হৃদয়ের ব্যাপার।’ এদিন বিভিন্ন হিন্দু ও মুসলিম সংগঠনের বক্তব্য শোনে শীর্ষ আদালত। এর পরে সব পক্ষকেই মধ্যস্থতাকারীদের নাম প্রস্তাব করতে বলা হয়। সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখে মধ্যস্থতাকারীদের নাম চূড়ান্ত করবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তবে এই মধ্যস্থতার সময়কালে সংবাদ মাধ্যমে এই সংক্রান্ত কোনও খবর প্রকাশ করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। শুনানিতে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এতে বিবদমান সব পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমাবে।
অন্যতম প্রবীণ বিচারপতি এ এস বোদড়ের পর্যবেক্ষণ, জমি নয়, বরং রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা ভাবাবেগ এবং বিশ্বাসের। পাশাপাশি বিচারপতি বোদড়ের মন্তব্য, ‘কে আক্রমণ করেছিল, বাবর কী করেছিল, সেই সময় কে রাজা ছিল, মসজিদ না মন্দির ছিল, সেসব আমরা পাল্টাতে পারব না। আমরা শুধু বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করতে পারব।’
এই মামলায় মোট পাঁচটি পক্ষ। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া, রাম লালা বিরাজমান, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা এবং মহন্ত সুরেশ দাস। এর মধ্যে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং নির্মোহী আখড়া মধ্যস্থতাকারীর সিদ্ধান্তে রাজি হলেও আপত্তি তোলে বাকি তিনটি পক্ষ। তাদের অনেকেরই যুক্তি, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে এই মামলার নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে বেঞ্চের মন্তব্য, ‘আমরা বিষয়টা (মধ্যস্থতা) অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। কিন্তু মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির এক শতাংশ সম্ভাবনা থাকলেও সেই সুযোগটা আমরা দিতে চাই।’
মধ্যস্থতার বিরোধিতায় এক আইনজীবীর যুক্তি ছিল, মধ্যস্থতায় সব পক্ষ রাজি হলেও সাধারণ মানুষ নাও মেনে নিতে পারেন, যেখানে এত মানুষের ভাবাবেগ জড়িয়ে এবং এক পক্ষ রাম মন্দির নির্মাণের তোড়জোড় শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে বিচারপতি বোদড়ে বলেন, ‘আপনি তো ধরেই নিচ্ছেন, এক পক্ষকে অনেক কিছু ছাড়তে হবে বা সমঝোতা করতে হবে এবং অন্য পক্ষের জয় হবে। কিন্তু মধ্যস্থতা মানেই সব সময় এমনটা নাও হতে পারে। আপনি আগেই সিদ্ধান্তের কথা ভাবছেন।’ একাধিক মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করা হবে বলেও জানান বিচারপতি বোদড়ে।
প্রশ্ন ওঠে, সব পক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারীদের দর কষাকষি বা আলোচনার বিষয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তার প্রভাবে উত্তেজনা বাড়তে পারে। এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির মন্তব্য, এই সব ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে রিপোর্ট করা উচিত নয়। এটা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা নয়। তবে এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা বা মতামত প্রকাশ করা উচিত নয়। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ