নিপাহ ভাইরাস রোধে আইইডিসিআর সবাইকে খেজুরের কাঁচা রস পান না করার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিবারের সদস্যদের নিপাহ সংক্রমণ প্রতিরোধে মুখে মাস্ক পরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবাদানের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

গতকাল সোমবার ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. আবু মোহাম্মদ খয়রুল কবির এক সংবাদ সম্মেলনে ওইসব তথ্য প্রকাশ করেন। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যুর জন্য নিপাহ ভাইরাসকে দায়ী করেছেন গবেষকরা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপজেলার ভান্ডারদহ নয়াবাড়ি গ্রামের এলাকায় গবেষক দলের সরেজমিন তদন্ত এবং রোগের নমুনা পরীক্ষার পর গত রোববার রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) অজ্ঞাত রোগের প্রাথমিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন । আইইডিসিআর পাঠানো প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগের কারণ অনুসন্ধানে জানা যায়, মৃত ব্যক্তিদের সকলের জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি ও মস্তিষ্ক ইনফেকশনের (এনসেফালাইটিস) উপসর্গ ছিল। মৃতদের মধ্যে থেকে একজনের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। আর পরীক্ষায় সে নমুনায় নিপাহ ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

সিভিল সার্জন বলেন, উপরোক্ত আউটব্রেক ইনভেস্টিগেশনে প্রথম মৃত ব্যক্তির খেজুরের কাঁচা রস পান করার সুনির্দিষ্ট ইতিহাস না পাওয়া গেলেও অন্যান্য মৃত ব্যক্তিদের প্রথম মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছিল বলে আইইডিসিআর ধারণা করছে। এছাড়া জীবিত সন্দেহাভাজন রোগীদের রক্তে নিপা ভাইরাসের উপস্থিতি না পেলেও বিভিন্ন সময় মৃত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিশু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাজাহান নেওয়াজ, মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. তোজাম্মেল হক, প্রেসক্লাব সভাপতি মনসুর আলী প্রমুখ ।

আইইডিসিআর, আইসিডিডিআর, ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত একটি দল গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মরিচপাড়া গ্রাম ও হাসপাতালগুলোতে তদন্ত চালিয়েছিল। নয়াবাড়ি মরিচপাড়া গ্রামে মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে বাবা-মা ও দু’সন্তানসহ একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদের বাড়ি থেকে আশপাশের এক কিলোমিটারে লোক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। অজ্ঞাত রোগের আতঙ্কে বন্ধ করে দেয়া হয় এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।