বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খেজুর গাছিদের এখন আর নেই আগের মত কোন ব্যস্ততা। নেই কোন তাড়া। নেই কে বা কারা খেজুরের রস আগে সংগ্রহ করতে পারে এমন কোন প্রতিযোগিতা। সাগর উপকূলীয় জেলা বরগুনা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুস্বাদু খেজুর রস। এক সময়ে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামগঞ্জের মানুষ গাছ ছিলানো (গাছ কাটা) নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। কে কার আগে খেজুর গাছ কেটে প্রকৃতির সেরা উপহারসমূহের মধ্যে অন্যতম খেজুর রস সংগ্রহ করতে পারে এ প্রতিযোগিতায় নেমে পড়তেন।
একসময় খেজুর রসে তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েস ছিল দক্ষিণাঞ্চলের সব শ্রেণির মানুষের নবান্নের সেরা খাদ্য সামগ্রী। খেজুর রস দিয়ে অল্প সময়ে তৈরি করা হতো পাটালি গুড়, ভীড়মিঠাসহ নানা রকমের মজার মজার খাবার। সময়ের বিবর্তনে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস।
প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলায় সব ধরণের গাছ মাটিতে শুইয়ে দেয়। এসময় অনেক খেজুর গাছ মারা যায়। এক শ্রেণির ইটভাটা মালিকরাও ইট পোড়ার কাজে খেজুর গাছ ব্যবহার করায় খেজুর গাছ দ্রুত হারিয়ে যাওয়ার পথ সুগম করে দেয়। ফলে এ অঞ্চলে খেজুর রস ও গুড় দুষ্পাপ্য হয়ে পড়েছে।
আজ থেকে পঁচিশ-ত্রিশ বছর পূর্বেও বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করত গাছিরা। গত ২০ বছর ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণাঞ্চলে খেজুর গাছের সঙ্কট দেখা দেয়ায় রস পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। ফলে দিনে দিনে খেজুর রস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামগঞ্জের মানুষ। কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে খেজুর রসের তৈরি নানা প্রকার পিঠা-পায়েসসহ সুস্বাদু নবান্নের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে উৎসাহ ও আনন্দের মধ্যে নবান্নকে বরণ করত এ অঞ্চলের মানুষজন। এখন আর খেজুর রস না পাওয়ায় নবান্নের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ শীত মৌসুমে অতিথিদের রসের তৈরি পায়েস দিয়ে আপ্যায়ন করানোর প্রচলন এখন ভুলতে বসেছেন।
বরগুনার সদর উপজেলার মানিকখালী গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আয়জদ্দীন হাওলাদার জানান, গ্রামে এখন আগের মত খেজুর গাছ পাওয়া যাচ্ছে না। ছিটেফোঁটা দুই একটা থাকলেও সেই গাছ কাটতে পারছি না। নিজের খেজুর গাছ না থাকায় পরের গাছ কেটে রস বের করতে হচ্ছে। গাছের মালিককে সপ্তাহে তিন দিন রস দিয়ে বাকি চার দিন আমি নিয়ে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পাই তাতে পরিশ্রমের মূল্য হয় না। মৌসুমি রসের স্বাদ পেতে গাছ কাটা ছাড়তে পারিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।