বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী অশ্লীল ভিডিও, ছবি, কনটেন্ট, জুয়া এবং বিপথগামী ওয়েবসাইট বন্ধে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উদ্যোগে নিরাপদ ইন্টারনেট ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর শুরুটা হয়েছিলো ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব বরাবর ‘এক পিতার লেখা চিঠি’র সূত্র ধরে। ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর সচিবালয়ে অনলাইনে আপত্তিকর কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক বৈঠকে পর্নো ওয়েবসাইট বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এবার সরকার গঠনের পর নতুন প্রজন্মকে ইন্টারনেটের আপত্তিকর আসক্তি থেকে বের করে আনতে বেশ কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। কয়েক ধাপে প্রায় ২০ হাজার পর্নো এবং প্রায় আড়াই হাজার জুয়ার ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিরোধী ভিডিও এবং অশ্লীলতা ছাড়ানোর অভিযোগে টিকটক ও বিগো অ্যাপস্ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। কিন্তু এখনও অ্যাপস্ দু’টি চালু আছে। তবে টিকটক কর্তৃপক্ষ সরকারের এই পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে প্রায় দুই লাখ ভিডিও মুছে ফেলেছে এবং বন্ধ করেছে ১৫০টি অ্যাকাউন্ট। অপরদিকে বিগো অ্যাপে ঢোকার সময় ৩ সেকেন্ডের একটি ওপেনিং নোটিশ দেখা যাচ্ছে। যাতে লেখা- ‘যে কোন প্রকারের সেক্স এবং জুয়া বিগোতে অসহনীয়। চলো আমরা বিগো লাইভকে পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন করি।’
ফেইসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল ও অপ্রাসঙ্গিক ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে অভিনেত্রী সানাই মাহবুব সুপ্রভা, ইউটিউবার ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদির, মডার্ন ভাদাইমা তোফাজ্জল, ভাদাইমা চ্যানেলের মালিক মো. এমদাদুল ইসলাম এবং সবুজ আহমেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিযুক্ত প্রত্যেকেই ভিডিও বার্তার মাধ্যমে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং সেসব ভিডিও মুছে ফেলতে সম্মত হয়েছেন। মুচলেকা দিয়েছেন যে, কখনও আর এ ধরনের ভিডিও বানাবেন না বা ছড়াবেন না। এদিকে এরা সহ এই ধরনের কর্মকাণ্ড যারা করছেন, তাদের ওপর কড়া নজর রাখছেন ডিএমপির সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগ।
সকলের জন্য ইন্টারনেটকে নিরাপদ করতে সরকারের এই উদ্যোগগুলো সত্যি প্রসংশার দাবীদার। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অতীতে রাতে ৭০ ভাগ ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হতো পর্নোগ্রাফি দেখায়। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে সম্প্রতি পর্নোগ্রাফি দেখার হার অনেক কমেছে। সেটা নেমে এসেছে ৩০ ভাগে। ফলে সাশ্রয় হচ্ছে ব্যান্ডউইথ। তাই এই কার্যক্রম অব্যহত রাখতে হবে। পর্নো, জুয়াসহ বিপদগামী সকল ওয়েবসাইট, অ্যাপগুলো বন্ধের ব্যাপারে সরকারকে থাকতে হবে কঠোর অবস্থানে। কোনভাবে এব্যাপারে শিথিল হলে চলবে না।
ইন্টারনেটকে নিরাপদ করতে শুধুমাত্র সরকারের একার উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। অভিবাবকদেরকেও এব্যাপারে সচেতন হতে হবে। কারণ বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ ইন্টারনেট ব্যবহার হয় স্মার্ট ফোন থেকে। সন্তানদেরকে স্মার্ট ফোন দেয়ার ক্ষেত্রে অভিবাবকদের আরও সচেতন হতে হবে। তারা মোবাইলে ইন্টারনেটের মাধ্যমে কি করছে সে দিকে নজর রাখতে হবে। কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে তাদেরকে খারাপ জিনিস দেখা থেকে বিরত রাখতে হবে। এছাড়া তাদের ধর্মীয় মুল্যবোধ শিক্ষা দিতে হবে। কারণ ধর্মীয় মুল্যবোধ মানুষকে সকল অন্যায় ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।
সরকার অভিবাবকসহ সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে যখন ইন্টারনেটের নিরাপদ ও সঠিক ব্যবহার শুরু হবে, তখনই সরকারের এই উদ্যোগ পূর্ণ সফলতার মুখ দেখবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।