নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় পর্বে ‘বি’ গ্রুপে সেরা হতে চায় বাংলাদেশ কিশোরী দল। ইতোমধ্যে প্রথম ম্যাচে ফিলিপাইনকে ১০-০ গোলে এবং দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক মিয়ানমারকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের চুড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করেছে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা। এখন মারিয়া মান্ডা বাহিনীর প্রত্যাশা চমক দেখানোর। সেই লক্ষ্যে গ্রুপের শেষ ম্যাচে রোববার শক্তিশালী চীনের মুখোমুখী হচ্ছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের মানদালা থিরি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে ম্যাচটি।
আগের দিন স্বাগতিক দলকে হারিয়ে চুড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করায় শনিবার বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন মারিয়া মান্ডা, তহুরা খাতুন, আঁখি খাতুন ও শামসুন্নাহাররা। মিশন সফল হওয়ায় বেশ নির্ভার ছিলেন তারা। এদিন অনুশীলন করেননি বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৬ দলের ফুটবলাররা।
ফুটবলারদের পাশাপাশি কোচেরাও একদিন বিশ্রাম পেয়েছেন। তাই হোটেলে সারাদিন কাটিয়েছেন মারিয়া মান্ডরা। সকালে শুধু কিছুক্ষণের জন্য সাঁতার সেশন ছিল রিকোভারির জন্য।
এক ম্যাচ হাতে রেখে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত হওয়ায় চীনের বিপক্ষে চাপহীন বাংলাদেশ। তারপরও কাল পেশাদারিত্বপূর্ণ বক্তব্যই দিলেন অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা। তিনি বলেন, ‘এখনো আমাদের একটি ম্যাচ বাকি আছে। আমরা শেষ ম্যাচটি ভালোভাবে শেষ করতে চাই। তাই মিয়ানমারকে হারিয়ে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত হলেও তখন আনন্দ উদযাপন করতে পারিনি।’
গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী চীন। ফিফা নারী র্যাঙ্কিংয়ে যাদের অবস্থান ১৫ নম্বরে। দু’বার ফিফা অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলেছে দেশটি। টেকনিক্যালি ও ফিজিক্যালি সব দিক দিয়েই বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে চীন। কিন্তু তাতে কোন ভয় পাচ্ছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক মারিয়া। তার কথা, ‘২০১৭ সালে এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত হওয়ার পর এই দলের (চীন) অনেক ফুটবলারের সঙ্গে আমরা চীনে অনুশীলন ম্যাচ খেলেছিলাম। কিছু ম্যাচ জিতেছিলাম, কিছু হেরেছিলাম। তাই তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
তবে বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন চীনের বিপক্ষে ম্যাচটিকে দেখছেন চূড়ান্ত পর্বের ড্রেস রিহার্সেল হিসেবে। তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত পর্বের জন্য কতটুকু প্রস্তুত আমরা, আর কি করা প্রয়োজন- এই ম্যাচের মাধ্যমে তা বোঝা যাবে।’
এ বছরের সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্ব। এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বের সেরা তিন দল ফিফা অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলবে। তাই চূড়ান্ত পর্ব নিয়ে কোচ ছোটনের পরিকল্পনা, ‘মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর- এই সময়ে আমাদের নিয়মিত অনুশীলন ও ভালো দলের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে হবে। অনুশীলন ম্যাচ খেলাটা খুবই জরুরি।’
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার ম্যাচটি ড্র হলে গোল ব্যবধানে চীন এগিয়ে থেকে ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে। দু’ম্যাচে চীন করেছে ১২ গোল ও বাংলাদেশের ঝুলিতে আছে ১১ গোল। তাই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হলে জিততেই হবে বাংলাদেশকে। আর সেটা হলে চূড়ান্ত পর্বের ড্র’তে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল পাবে বাংলাদেশ।
প্রথম দু’ম্যাচ অল অ্যাটাকিং খেলেছিল বাংলাদেশ। চীনের বিপক্ষে একটু রক্ষণের দিকে বেশি মনোযোগ থাকবে। মিয়ানমার ও ফিলিপাইনের বিপক্ষে সেট পিস থেকে অনেক গোল করেছে চীন। তাই সেট পিস নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশের। আগের ম্যাচে ব্যথা পাওয়ায় চীনের বিপক্ষে মাঠে নামতে পারবেন না শামসুন্নাহার (জুনিয়র)। তবে তাকে মিস করবেন কোচ ছোটন। তিনি বলেন, ‘শামসুন্নাহার খুবই কার্যকরী ফুটবলার। তার বিকল্প আসলে হয় না।’
একাদশে এই একটিই পরিবর্তন হচ্ছে। গত ম্যাচে নাজমা ও শামসুন্নাহার (সিনিয়র) হলুদ কার্ড দেখেছেন। এই ম্যাচেও কার্ড পেলে চূড়ান্ত পর্বের প্রথম ম্যাচ মিস হতে পারে। এজন্য তাদের প্রতি বাড়তি সতর্কতার নির্দেশ রয়েছে কোচের।
চীনে কয়েকজন ভালো মানের ফুটবলার কোচ ছোটনের চোখে ধরা পড়েছে, ‘চীনের তিনজন খুবই ভালোমানের ফুটবলার রয়েছে। তাদের জার্সি নম্বর ২২, ৮ ও ১০। আমাদের মনিকা-মারিয়াও অসাধারণ। তাদেরকে এখন সব দলকেই হিসাব করতে হবে।’ বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমার প্রশংসা করেন ছোটন। তিনি বলেন, ‘এই টুর্নামেন্টে চার দলের মধ্যে সেই সেরা গোলরক্ষক। মিয়ানমার ম্যাচে অসাধারণ খেলেছে রুপনা।’
এশিয়ার সেরা আটটি দেশকে নিয়ে সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে হবে টুর্নামেন্টের চুড়ান্ত পর্ব। যেখানে সরাসরি খেলবে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়া, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া, তৃতীয় জাপান ও স্বাগতিক থাইল্যান্ড। এদের সঙ্গে যোগ হবে দ্বিতীয় পর্বের সেরা চার দল। চূড়ান্ত পর্বের সেরা তিন দল খেলার সুযোগ পায় ফিফা অনুর্ধ্ব-১৭ মহিলা বিশ্বকাপে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।