তামিম ইকবালের ব্যাটে স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল, হ্যামিল্টনের পিচে ব্যাটসম্যানরা বাড়তি সুবিধাই পাবেন। বিষয়টি কতটা সত্যি, তার প্রমাণ পাওয়া গেল নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে। টম ল্যাথাম ও জিৎ রাভালের সেঞ্চুরিতে রান পাহাড়ে চাপ পড়ছে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪৫১ রান। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ২৩৪ রানে অলআউট করা স্বাগতিকরা নিয়েছে ২১৭ রানের লিড, হাতে আছে আরও ৬ উইকেট। দিন শেষে ৯৩ রানে অপরাজিত ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। আর ১ রান নিয়ে তার সঙ্গে তৃতীয় দিন শুরুর অপেক্ষায় নাইটওয়াচম্যান নেইল ওয়াগনার।
দিনের একেবারে শেষ মুহূর্তে হেনরি নিকোলস আউট না হলে বাংলাদেশের জন্য হ্যামিল্টন টেস্টের অবস্থা থাকতো আরও কঠিন। এমনিতেই ভালো জায়গায় নেই তারা। কিউই ব্যাটসম্যানদের দাপটের সামনে বিশেষজ্ঞ বোলারদের কেউই কিছু করতে পারেননি। শেষ দিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ৫৩ রান করা নিকোলসকে ফেরাতে না পারলে প্রাপ্তির খাতায় যা যোগ হয়েছে, তার পুরোটাই যেত ‘পার্ট-টাইম’ বোলারদের দিকে!
নিউজিল্যান্ডের হারানো ৪ উইকেটের ৩টিই নিয়েছেন ‘অনিয়মিত’ বোলার সৌম্য সরকার ও মাহমুদউল্লাহ। সাকিব আল হাসানের চোটে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া মাহমুদউল্লাহর বলেই ভাঙে ল্যাথাম-রাভালের রেকর্ড জুটি। উদ্বোধনী জুটিতে তারা যোগ করেন ২৫৪ রান, যা প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দাঁড় করানো সংগ্রহের চেয়ে ২০ রান বেশি!
রাভালের আউটে স্বাগতিকরা হারায় প্রথম উইকেট। মাহমুদউল্লার বলে খালেদ আহমেদের হাতে ধরা পড়ার আগে এই ওপেনার পূরণ করেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। আউট হওয়ার আগে ২২০ বলে ১৯ চার ও এক ছক্কায় খেলে যান তিনি ১৩২ রানের চমৎকার ইনিংস।
তিনি আউট হলেও অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে নিয়ে দলের রান বাড়িয়ে নেন ল্যাথাম। টেস্ট ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি পূরণ করে ডাবলের পথেও হাঁটছিলেন এই ওপেনার। তবে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুনের দুর্দান্ত ক্যাচে। সৌম্যর বল তার ব্যাটের কানায় লেগে উড়ে গেলে স্লিপে দাঁড়ানো মিঠুন ঝাঁপিয়ে তালুবন্দী করেন। তার আগে ২৪৮ বলে ১৭ চার ও ৩ ছক্কায় ল্যাথাম খেলে যান ১৬১ রানের অসাধারণ ইনিংস।
ল্যাথামকে ফেরানো সৌম্য যেন সত্যিকারের বোলার হয়ে উঠলেন। খানিক পর তার শিকার হয়েই যে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রস টেলর। মাত্র ৪ রানে কিউই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে এই পেসার স্বস্তি ফেরান বাংলাদেশ ক্যাম্পে। যদিও সেটা স্থায়ী হতে দেননি উইলিয়ামসন ও নিকোলস। ১০০ রানের জুটি গড়ে রানের পাহাড় গড়তে থাকেন তারা। দিনের একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে নিকোলসকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন মিরাজ।