চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
দুই
আবদুল মজিদ অনূদিত ‘কোরান শরীফ’ (১৯০৭), শ্রী কিরণ গোপাল সিংহ (১৮৮৫-১৯৪২), আমপারা কাব্যানুবাদ (১৯০৮), মুন্সী করিম বক্স (১৮৭৫-১৯৪৭) অনূদিত ‘কোরান শরীফ’ ১ম পারা (১৯১৬) ও আমপারা (১৯১৮), মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমিন (১৮৭৫-১৯৪৫) অনূদিত ও ব্যাখ্যাত ‘কোরান শরীফ’ ১ম, ২য়, ৩য় পারা ও ‘আমপারা’ (১৯১৭-১৯৩০), এয়ার আহমদ এল টি (মৃ.১৯৪৪) এর ‘আমপারার বাঙ্গালা তফছির, (১৯২০), আবদুর রশিদ সিদ্দিকীর (১৮৭৯-১৯৫১) গদ্যে ও পদ্যে অনূদিত ‘মহাকোরান কাব্য’-আমপারা (১৯২৭), মীর ফজল আলীর (১৮৯৮-১৯৩৯) ‘কোরান কণিকা’ (১৯৩০), আবদুল ওয়াসেক (১৮৭১-১৯৪৬) অনূদিত ‘আমপারা’ (১৯৩৩), কবি মুহাম্মদ আবূ বকর (১৯১২-১৯৭৩) অনূদিত ‘আমপারা’ (১৯৩৩), কাজী নজরুল ইসলামের (১৯৯৯-১৯৭৬) ‘কাব্য আমপারা’ (১৯৩৩), মোহাম্মদ গোলাম আকবরের (মৃ.১৯৫৬), ‘আমপারার তফসির’ (১৯৩৬), মুহাম্মদ ইব্রাহিম (১৮৭৭-১৯৪০) অনূদিত ‘আমপারা’-১ম ও ২য় সোপান (১৯৩৬১৯৩৮), আবদুর রশীদের ‘সরল আমপারা’ (১৯৩৯) নূর মহল বেগমের (১৯১৯-১৯৭৩), ‘কোরান মুকুল’ (১৯৪০), মীজানুর রহমানের (১৯০০-১৯৬০) ‘নূরের ঝলক’ ও ‘বেহেস্তী সওগাত’ (১৯৪৪-১৯৪৭), মুফতী মুহাম্মদ ওয়াফীর ‘তাফসীর পারা আম্ম’ (১৯৪৫), মাওলানা কুদরাত-ই-খুদার (১৯০০-১৯৭৭) ‘পবিত্র কোরআনের পুত কথা’ ১ম ও ২য় ভাগ (১৯৪৫-১৭৪৭) ও রংপুর নিবাসী মুনীর ঊদ্দিন আহমদেও ‘হাফীজীল কাদেরী’ (১৯৪৭) ইত্যাদি।
উল্লিখিত পবিত্র কুরআনের খন্ডিত অনুবাদগুলোর মধ্যে মাওলনা রুহুল আমিনের অনুবাদটি ছিল তাঁর পূর্ববর্তী ও সমসাময়িক যুগের কুরআনের অনুবাদকদের বিভ্রান্তিকর অনুবাদের খন্ডন ম্বরূপ।
১৯৪৭ খৃষ্টাব্দে ভারতবর্ষ বৃটিশ শাসন থেকে মুক্ত হলে ভারত ও পাকিস্তান নামে দু’টি পৃথক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ফলে বঙ্গদেশ তথা বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। পশ্চিম বঙ্গ ও আসাম ভারতের অঙ্গিভূত হয়ে যায়। আর আসামের সিলেট জেলাসহ পূর্ববঙ্গ পাকিস্তনের পূর্বাংশে পরিণত হয়। অখন্ড ভারতের বাঙ্গালী মুসলিম পান্ডিত ও কবি সাহিত্যিক দেও সামগ্রিক সাহিত্যকর্মের তৎপরতা কলকাতায় কেন্দ্রীভূত ছিল। কিন্তু দেশ বিভাগের পর পূর্ববঙ্গে মুসলমানদের জন্য সাহিত্যকর্মের মূল কেন্দ্র হিসেবে ঢাকা কলকাতার স্থলাভিষিক্ত হয়। এ দিকে পূর্ববঙ্গে বাংলা ভাষা আন্দোলনেরও তৎপরতা শুরু হয়। এ সময় স্বাধীনতাত্তোর উভয় দেশের উভয় বঙ্গে বাঙ্গালী মুসলিম পান্ডিত ও কবি সাহিত্যিকরাও নব উদ্দীপনায় সাহিত্য-চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। বাংলা সাহিত্যের ধর্মীয় শাখায় কুরআনী সাহিত্যেও এর বেশ প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এ সময় উভয় বঙ্গে বাঙ্গালী মুসলিম পন্ডিত ও কবি-সাহিত্যিকদের অনেকেই গদ্য ও পদ্যাকারে কুরআনের বঙ্গানুবাদ, কুরআনের বিভিন্ন বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত গ্রন্থাবলী ও প্রবন্ধ রচনা করে কুরআনী সাহিত্য-চর্চাকে সমৃদ্ধ করতে মনোনিবেশ করেন। পাক-ভারতের স্বাধীনতাত্তোর ১৯৪৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে এ উপমহাদেশে কুরআনী সাহিত্য চর্চায় কুরআনের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ ও ভাষ্য লিখনে যাঁলা বিশেষভাবে অবদান রেখেছিলেন তাদেও মধ্যে খাঁন বাহাদুর আবদুর রহমান খাঁ (১৮৯০-১৯৬৪), ঢাকার ইমদাদিয়া লাইব্রেরী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত কুরআনের অনুবাদ বোর্ড , মাওলানা মুহাম্মদ আবদুর রহীম (১৯১৮-১৯৮৭), হাকীম আবদুল মান্নান (জ.১৯২২), ঢাকার ইসলামিক একাডেমী কর্তৃক গঠিত কুরআনের অনুবাদ বোর্ড , কাজী আবদুল ওদুদ (১৮৯৪-১৯৭০),অধ্যক্ষ আলী হায়দার চোধুরী, মুহাম্মদ আবদুল বারী(১৯৩২-১৯৯৯), ও মাওলানা মোহাম্মদ তাহের (১৯২২-১৯৯৪) প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।
বাংলা সাময়িকপত্রে কুরআন চর্চা:
পবিত্র কুরআনের বঙ্গানুবাদ, ব্যাখ্যা, ও কুরআনের বিভিন্ন বিষয়ের সাথে স¤পর্কিত বিভিন্ন প্রবন্ধ রচনার মাধ্যমে কুরআন চর্চার ক্ষেত্রে বাংলা সাময়িক পত্রের ভ‚মিকা অবিস্মরণীয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধের মাঝামাঝি সময়ে বাংলা সাময়িকপত্রে পবিত্র কুরআনের বঙ্গানুবাদ চর্চা লক্ষ্য করা যায়। আলোচ্য শতাব্দীর ৭০ এর দশক থেকে বাংলা সাময়িক পত্রে পবিত্র কুরআনের বঙ্গানুবাদ চর্চা আরম্ভ হয়। কলকাতার অধিবাসী ভারতীয় খৃস্টান তারাচরণ চট্টোপাধ্যায় জনৈক মাওলানার সহযোগিতায় ও মাওলানা আবদুল কাদেরের উর্দ‚ ভাষায় অনূদিত কুরআনের সাহায্যে প্রায় ১২ পারা পর্যন্ত পবিত্র কুরআনের বঙ্গানুবাদ করেন। আর এই অনুবাদ চন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় স¤পাদিত ‘বঙ্গমিহির’ পত্রিকায় ১৮৭৩ খৃষ্টাব্দ থেকে ধারাবাহিক প্রকাশিত হয়। এবং ১৮৮২ খৃস্টাব্দে অনুবাদটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। অতঃপর ১৮৯১ খৃস্টাব্দ থেকে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশক পর্যন্ত মুন্সী রেয়াজুদ্দীন আহমদ (১৮৬২-১৯৩৬) সম্পাদিত ‘ইসলাম প্রচারক’ পত্রিকায় বিভিন্ন সংখ্যায় বিক্ষিপ্তভাবে প্রকাশিত হতে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।