Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপগ্রহের চোখে সুন্দরবন ধ্বংস ও রাজস্থানে দাসত্বের ছবি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৪:২০ পিএম

উপগ্রহের নজরদারিতে ধরা পড়ল সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে যারা নানা রকমের কৃষিভিত্তিক শিল্প, ব্যবসা চালান, সেই মালিক-ব্যবসায়ীরা। প্রচুর ডলার, ইউরো, পাউন্ডের লোভে যারা ম্যানগ্রোভের অরণ্য কেটে সাফ করে দিয়ে ভূমিকম্পের বিপদ বাড়াচ্ছেন সুন্দরবন ও তার লাগোয়া এলাকায়, তারাও। ভারতে চলা দাসত্বও হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল। ধরা পড়ে গেল রাজস্থানের ইটভাঁটার মালিকরা। ধরা পড়ে গেল কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবৈধ কয়লা খাদান মালিকরা। গোপন নজরদারি এড়াতে পারলেন না চিংড়ি ও অন্যান্য মাছের ভেড়ির মালিকরা। তারা সকলেই ধরা পড়ে গেলেন পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা বিভিন্ন উপগ্রহের সজাগ, সতর্ক চোখে।
ভারত-সহ গোটা বিশ্বে কাজের নামে এখনও কী ভাবে চলছে দাসত্ব, কী ভাবে শিশু ও মহিলাদের শ্রমিকদের উপর নির্বিচারে চালানো হচ্ছে অত্যাচার, বন কেটে সাফ করে কী ভাবে চলছে চোরাপাচার, ২০১৭ সাল থেকেই তার উপর নজর রাখছিল মহাকাশে থাকা বিভিন্ন উপগ্রহ। গোপনে। সেই গত দু’বছরের খুঁটিনাটি তথ্যাদি গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জমা দেয়া হয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটিতে এক সম্মেলনে। যার স্পনসর ছিলেন ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটি (ইউএনইউ)। ওই সম্মেলনে ছিলেন ভারত-সহ জাতিসংঘের ১৩২টি দেশের কম্পিউটার তাত্ত্বিক, দাসত্ব বিশেষজ্ঞ ও নীতি নির্ধারকরা।
সম্মেলনে থাকা কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের অন্যতম আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশন বিভাগের অধ্যাপক হর্ষ রবিচন্দ্রন ওয়াশিংটন বলেছেন, ‘রাজস্থানের শুধু একটি এলাকাতেই এমন ১৬৯টি ইটভাঁটার হদিশ মিলেছে। প্রত্যেকটি ইটভাঁটাতেই নির্বিচারে অত্যাচার চালানো হচ্ছে শিশু ও মহিলা শ্রমিকদের উপর। তাদের ন্যায্য বেতন দেওয়া হচ্ছে না। দিনে-রাত মিলিয়ে খাটানো হচ্ছে ২২/২৩ ঘণ্টা। এমনকী, তাদের মারধরও করা হচ্ছে। উপগ্রহগুলি থেকে সেই অবর্ণনীয় অত্যাচারের খুঁটিনাটি দেখা সম্ভব হয়েছে।’ তার কথায়, ‘পরিসংখ্যানটা জানা থাকলেও দাসত্বের বেড়িবাঁধনে জড়িয়ে থাকা শিশু ও মহিলা শ্রমিকদের সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া যায় না বেশির ভাগ সময়েই। রাষ্ট্রই সেই পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মানবাধিকার সংগঠনগুলির সহায়তাও পাওয়া যায় না সেই ভাবে।’
কাজটা শুরু করেছিল জাতিসংঘের সাহায্যপ্রাপ্ত একটি সংস্থা ‘ডিজিটালগ্লোব’ ২০১৫ সালে। পৃথিবীর উপর সব সময় নজর রাখতে তারা ইতিমধ্যেই গোটা দশেক উপগ্রহ পাঠিয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন কক্ষপথে। সেই উপগ্রহগুলি প্রথম ছবি তোলে আফ্রিকার দেশ ঘানার লেক ভোল্টা (ভোল্টা হ্রদ)-র। সন্দেহ করা হচ্ছিল, ঘানার ওই হ্রদ ও তার লাগোয়া এলাকাগুলিতে যত মাছের ভেড়ি রয়েছে, সেগুলিতে শিশু ও মহিলা শ্রমিকদের উপর চলছে অবর্ণনীয় অত্যাচার। তাদের দিয়েই হ্রদের মাছ চুরি করানো হচ্ছে দেদার। গভীর রাতে নৌকায় চাপিয়ে সেই সব মাছ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। চুপিসাড়ে। মাছ চুরির ৮০ হাজার নৌকার হদিশ পাওয়া গিয়েছিল।



 

Show all comments
  • মোঃ মোবারক হোসেন ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:৩৮ এএম says : 0
    বিশ্বের কারও মাতৃভূমি তথা দেশে যেন না থাকে মা জাতী তথা নারীর চামড়ার ব্যবসা যার উৎপত্তি হয় সমান ক্ষমতায়নের ফলে ! নাই জবাবদিহীতাহ !!! আশা রাখবো বাংলা জমিন ও আশেপাশের জমিন যেন থাকে সুরক্ষিত তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে বিশ্বের মানুষের চোখ এরানো অসম্ভব যার ফলাফল পরকালের হিসাবের কথা সরন করাতে সক্ষম যে আমাদের প্রতিপালক তাঁর সৃষ্টিকুলকে দেখছেন :)
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ