২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ঋতুর আবর্তে এখন চলছে শীতকাল। পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন সুপারফুড বাঁধাকপি। স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারী বলে বিবেচিত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যকে সুপারফুড বলা হয়। জেনে নিন সুপারফুড বাঁধাকপির গুণাবলী। বাঁধাকপি বা পাতাকপি একটি সবজি, যা ব্রাসিকেসিবা ক্রুসিফেরি গোত্রের ব্রাসিকা অলেরাসিয়াপ্রজাতির উদ্ভিদ।
বাঁধাকপির পুষ্টিগুণঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি গবেষণা পরিষেবা বিভাগ প্রদত্ত জাতীয় পুষ্টি ডাটাবেস অনুযায়ী কেটে রান্না করা প্রতি ৭৫ গ্রাম বাঁধাকপিতে আছে ১৭ গ্রাম ক্যালোরি, ৪ গ্রাম শর্করা যার এক গ্রাম আঁশ এবং ২ গ্রাম সুগার, ১ গ্রাম প্রোটিন। ৭৫ গ্রাম রান্না করা বাঁধাকপি দৈনন্দিন ভিটামিন সি-র চাহিদার ৩০-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করতে সক্ষম। এতে আরও আছে ৮১.৫ মাইক্রোগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ১১ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ২২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে, ১১ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ২২ মাইক্রোগ্রাম ফলেট যা ফলিক অ্যাসিড বা ভিটামিন বি-৯ নামেও পরিচিত। এতে অল্প পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন বি৬, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও থায়ামিন, যা ভিটামিন বি-১ নামিও পরিচিত। বাঁধাকপিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যেমন-বিটা-ক্যারোটিন, লুটিইন, জিয়্যাজ্যানথিন, ফ্ল্যাভোনয়েড কেইম্ফেরোল, কুয়ারসেটিন এবং অ্যাপিজেনিন। তবে এসব উপাদান সবুজ বাঁধাকপির তুলনায় লাল বাঁধাকপিতে বেশি পরিলক্ষিত হয়।
বাঁধাকপি রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেয়ঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইঁদুরের ওপর পরিচালিত বাঁধাকপি নিয়ে একটি গবেষণা থেকে গেছে, বাঁধাকপি রেডিয়েশন থেরাপি থেকে সুরক্ষা দেয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে বাঁধাকপি ঃ বাঁধাকপিতে সালফোরাফেন নামক একটি রাসায়নিক যৌগ রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষমতা দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিসৌরি কর্তৃক পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাঁধাকপিতে এপিজেনিন নামক একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। ইঁদুরের ওপর এপিজেনিন প্রয়োগ করে একটি বিষয় মোটামুটি নিশ্চিত হওয়া গেছে, স্তন ক্যান্সারে অনিয়মিত কোষ বিভাজনের ক্ষেত্রে এপিজেনিন এই টিউমারের আকার হ্রাস করতে সক্ষম। গবেষকদের দাবি, এই এপিজেনিন ভবিষ্যতে ক্যান্সার নিরাময়ের ক্ষেত্রে অ-বিষাক্ত চিকিৎসা হিসাবে ব্যবহৃত হবে।
হার্টের সুরক্ষায় বাঁধাকপি ঃ বাঁধাকপির পুষ্টিগুণ বর্ণনায় উল্লেখ রয়েছে, এতে ফ্ল্যাভোনয়েড যৌগ বিদ্যমান। আমেরিকার জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ফ্ল্যাভোনয়েডসমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়। এতে আরও বলা হয়েছে, অল্প পরিমাণে ফ্ল্যাভোনয়েডসমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণও সুফল বয়ে আনতে পারে। বাঁধাকপিতে বিদ্যমান পরিফেনল যৌগও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
হজম এবং রোগ প্রতিরোধে বাঁধাকপি ঃ সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে বাঁধাকপিতে বিদ্যমান আঁশ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাঁধাকপি শরীরে প্রদাহের ঝুঁকিও কমায়। এছাড়াও বাঁধাকপি ডায়াবেটিস, স্থুলতা এবং সামগ্রিক মৃত্যুহার কমাতে ভূমিকা পালনে সক্ষম বলে ধারণা করা হয়।
সতর্কতা ঃ আমেরিকাভিত্তিক মানব স্বাস্থ্যকল্যাণ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত বাঁধাকপি খাওয়ার কারনে অন্ত্রে গ্যাস বৃদ্ধি পেতে পারে, যা পরবর্তীকালে পেট ফাঁপা বা বøটিংঙের কারণে হতে পারে। অতিরিক্ত বাঁধাকপি খেলে ফুড পয়জনিং হতে পারে। এছাড়া বাঁধাকপিতে থায়োসায়ানেট বা রোডানাইড নামক রাসায়নিক যৌগ রয়েছে, যা আয়োডিনের অভাবে গলগন্ড হওয়াকে ত্বরান্বিত করে।
সাংবাদিক কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।