বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সারাদেশের বিভিন্ন জেলার সাথে সিলেটের ১২ উপজেলাতেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে বিরাজ করছে আনন্দমুখর পরিবেশ। প্রার্থীরা ভোটারদের মনজয়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন। রাজনীতির মাঠের বিরোধীদল বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশ না নিলেও বেশ কয়েকটি উপজেলাতে তাদের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। নির্বাচনের মাঠেও চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচার-প্রচারণা। শেষ পর্যন্ত যদি তারা নির্বাচনের মাঠে থাকেন তবে ওই উপজেলাগুলোতে নির্বাচন বেশ জমজমাট হবে এমনটিই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেট জেলার ১২ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ৫০ জন প্রার্থী। ১২টির মধ্যে ৯টিতেই আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সাথে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিদ্রোহীরাও। বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে অংশ না নিলেও দলের প্রার্থীরা লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। ৫টি উপজেলায় স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
সিলেট সদর উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৪ প্রার্থী। এদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আশফাক আহমদ। তিনি টানা দুইবারের চেয়ারম্যান। তিনি ছাড়াও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুরে আলম সিরাজী, জেলা বিএনপি নেতা শাহ জামাল নুরুল হুদা ও খাদিম নগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাজহারুল ইসলাম ডালিম।
বিশ্বনাথে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়পত্র দাখিল করেছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এস এম নুনু মিয়া, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন, উপজেলা আঞ্জুমানে আল-ইসলাহর সভাপতি ফয়জুল ইসলাম। এর মধ্যে উপজেলাটির বর্তমান চেয়ারম্যান হচ্ছেন সুহেল আহমদ চৌধুরী।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবু জাহিদ এবং বিদ্রোহী প্রার্থী ময়নুল ইসলাম।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি, সাংবাদিক শাহ মুজিবুর রহমান জকন। বিদ্রোহী হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল ইসলাম। এছাড়া বিএনপির সর্মথক হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ওহিদুজ্জামান ছুফি, প্রবাসী হারুনুর রশীদ চৌধুরী, তালামিয নেতা হারুনুর রশীদ ও প্রবাসী মনির মিয়া।
বালাগঞ্জ উপজেলায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ৪ জন। তারা হচ্ছেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান মফুর, বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদাল মিয়া, জাতীয় পার্টির আব্দুর রহিম এবং স্বতন্ত্র গোলাম রাব্বানী।
জৈন্তাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী লিয়াকত আলী এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কামাল আহমদ মনোনয়নপত্র জমা দেন।
গোয়াইনঘাটে মনোনয়ন পেয়েছেন আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া হেলাল। কিন্তু হেলালকে মাঠ ফাঁকা করে দিচ্ছেন না প্রবাসী দুই নেতা। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা গোলাপ মিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ। বিএনপি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সহভাপতি লূৎফুল হক খোকন ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম স্বপন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল বাছির, সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াকুব আলী, ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম আহমদ, তার স্ত্রী জরিনা বেগম, উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল হক, হাফিজ মাসুম।
গোলাপগঞ্জে দলীয় প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদের সাথে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ওয়াহাব জোয়ারদার। এ উপজেলায় জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাওলানা রশিদ আহমদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দেয়া প্রার্থীরা হলে- বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আবুল কাশেম পল্লব, কার্যকরী কমিটির সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী শামীম আহমদ, জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল হাসনাত ও সহ-সভাপতি আলকাছ আলী।
জকিগঞ্জ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ সভাপতি ও আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মর্তুজা আহমদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরফুদ্দিন চৌধুরী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।
কানাইঘাটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল মোমিন চৌধুরী, বিদ্রোহী জেলা আওয়ামী লীগের উপ প্রচার সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশ ও সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা আবুল খায়ের চৌধুরী। এ উপজেলায় বিএনপির কেউ প্রার্থী হননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।