বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আগামীকাল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছে আইন-শৃংখলা বাহিনী। এ উপলক্ষে ঢাকা মহনগরীর নিরাপত্তায় ১৬ হাজার পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তায় থাকবে ৬ হাজার পুলিশ সদস্য।
নিরাপত্তায় পুলিশ-র্যাবের ফুট পেট্র্র্রোল, মোবাইল পেট্রোল, অবজারভেশন পোস্ট ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। বুধবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে বেশ কিছু সড়কে ডাইভারশন দেয়া হবে। চানখাঁরপুল, বকশীবাজার, নীলক্ষেত, পলাশী, শাহবাগ, হাইকোর্ট ক্রসিং ও রোমানা চত্বর এলাকা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি ঢুকতে দেয়া হবে না। এসব এলাকায় তল্লাশিচৌকিও বসানো হবে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে এসব এলাকায় আলপনা আঁকা শুরু হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। পুলিশ ও র্যাব সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রী, বিদেশি কূটনৈতিক ও ভিআইপিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। তবে সাধারণ নাগরিকদের সবাইকে পলাশী হয়ে শহীদ মিনারের প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দোয়েল চত্বর ও চানখাঁরপুল হয়ে বেরিয়ে যেতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার শহীদ মিনার এলাকা পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কোনও সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই। তবে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। ওই দিন শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকায় চার স্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ৬হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। ঢাকা শহরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য আর ১০ হাজার পুলিশ সদস্য নিয়োজিত থাকবে। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, বিদেশি কূূটনীতিকেরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়েল চত্বর দিয়ে চলে যাবেন। তারা না যাওয়া পর্যন্ত দোয়েল চত্বর, রোমানা চত্বর দিয়ে কাউকে শহীদ মিনারের দিকে না যেতে অনুরোধ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এ দিবসটিকে কেন্দ্র করে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই।
ডিএমপির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শহীদ মিনারে যাওয়ার প্রতিটি প্রবেশ ফটকে পর্যাপ্ত আর্চওয়ে বসানো হবে। হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশি ও হ্যান্ডব্যাগ পরীক্ষা করা হবে। নারীদের দেহ তল্লাশির ক্ষেত্রে প্রতিটি ফটকে পর্যাপ্তসংখ্যক নারী পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকায় বোমা নিষ্ক্রিয় করার দল এবং ডগ স্কোয়াড থাকবে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হবে।
অন্যদিকে গতকাল দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, একুশের রাতে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃংখলভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেবে র্যাব। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরসহ সারাদেশের সংশ্লিষ্ট শহীদ মিনারগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিতে র্যাব দায়িত্ব পালন করবে। কেউ যেন নিরাপত্তার বিঘ্ন ঘটাতে না পারে এবং কেউ যেন শৃংখলা পরিপন্থী কাজ না করতে পারে সেজন্য র্যাব প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে শহীদ মিনার ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা থাকবে। যাতে করে জনগণ স্বস্তি-আস্থা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে।
প্রক প্রশ্নের জবাবে র্যাব ডিজি বলেন, নিরাপত্তাজনিত কোনও শঙ্কা নেই। আমরা আসলে সব ধরনের শঙ্কা দূর করতে চাই। তবে সব সম্ভাব্য ঝুকি বিবেচনায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার বিষয়টি ভিন্ন ইস্যু। সেটি ১৯৪৭ সাল থেকে চলে আসছে। সেখানকার চরিত্র আর আমাদের এখানকার ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদিতার চরিত্র এক নয়। আমরা প্রতিমুহূর্তে জঙ্গিদের আপডেট রাখছি। গত এক সপ্তাহ দেখলে প্রায় প্রতিদিনই জঙ্গি গ্রেফতারের ঘটনা রয়েছে। আমরা কখনোই জঙ্গিদের থেকে দৃষ্টি সরাইনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।