Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কাশ্মীরে ভয়াবহ হামলায় ৪০ সিআরপিএফ জওয়ান নিহত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম | আপডেট : ১২:৫০ এএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

লোকসভা ভোটের মুখে কাশ্মীরে ফের বড়সড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর কনভয়ে হামলায় নিহত হয়েছে অন্তত ৪০ জন জওয়ান। আহত হয়েছে কমপক্ষে আরো ২০ জন। স্থানীয় সূত্রে খবর, শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়েতে অবন্তীপোরায় সিআরপিএফ কনভয়ে অতর্কিতে আত্মঘাতী হামলা চালায় জঙ্গিরা। জানা গেছে, ৭৮টি গাড়িতে ৩টি ব্যাটালিয়নের আড়াই হাজারের বেশি জওয়ান যাচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আইইডি বোঝাই একটি গাড়ি নিয়ে জঙ্গীরা ধাক্কা মারে ৫৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের জওয়ানদের বাসে। বিস্ফোরণের পরপরই শুরু হয় কনভয় লক্ষ্য করে গ্রেনেড ও গুলিবৃষ্টি। মৃত্যু হয় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ানের। হামলার দায় স্বীকার করেছে জইশ-ই-মুহম্মদ নামের একটি সংগঠন।
গত বুধবারই পুলওয়ামার স্কুলে বিস্ফোরণ আহত হয়েছিল ১০ ছাত্র। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফের জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হল ভূস্বর্গ। ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে উরিতে সেনাক্যাম্পে হামলা চালায় জঙ্গিরা। মৃত্যু হয় অন্তত ১৮ জন জওয়ানের। সেদিনের ভয়াবহতাকে ছাপিয়ে গেল গতকালের হামলা। এটাই কাশ্মীরে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় জঙ্গি হানা।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এই ঘটনাকে ঘৃণ্য আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আমি এই কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা করি। আমাদের সাহসী যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। গোটা জাতি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শহীদ সেনা সদস্যদের পরিবারের পাশে রয়েছে। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি’। এছাড়াও এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিআরপিএফ জওয়ানদের প্রতি সম্মান জানিয়ে পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মাহবুবা মুফতী সব পক্ষের সমন্বয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান খোঁজার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও। হামলার ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে টুইট করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ।
জম্মু কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাল কংগ্রেস। সীমান্তে বারবার আক্রমণ নিয়ে সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তারা। কংগ্রেস বলে, এই নিয়ে ‘মোদি সরকারের আমলে ১৮ বার বড় ধরনের জঙ্গি হামলা হল’।
দলের মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বলেন, ‘পাম্পোর, উরি, পাঠানকোট, গুরুদাসপুর, অমরনাথ, সুরজানপুর... তালিকার শেষ নেই। প্রত্যেকদিন পাকিস্তান আক্রমণ করছে। প্রত্যেক দিন যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন হচ্ছে, শুধুমাত্র জম্মু কাশ্মীরেই শহিদ হয়েছেন ৪০০ জওয়ান... তাও আমাদের সরকার নিশ্চুপ...আজকের সত্যটা হল, পাকিস্তান থেকে অপ্ররোচিত হামলার সম্মুখীন হচ্ছে ভারত’।
তিনি বলেন, ‘উরির পর থেকে এটা সবচেয়ে বড় হামলা। কিন্তু অসন্তোষ প্রকাশের কোনও সময় নেই মোদিজীর। এখন তার ৫৬ ইঞ্চির ছাতি কোথায় গেল’?
বৃহস্পতিবার ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক ভর্তি স্করপিও গাড়ি নিয়ে জওয়ানদের কনভয়ে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। আহতদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক।
উরি হামলার পর সীমান্তে জঙ্গি ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল সেনাবাহিনী। তবে বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয় রাজনীতি। একে অপরের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তোলে তারা।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, জঙ্গিদের ‘কাপুরুষোচিত’ হামলায় তিনি অত্যন্ত বিরক্ত। টুইটে তিনি লেখেন, ‘শহিদদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি আমি’। সূত্র : পিটিআই, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি।



 

Show all comments
  • Mamun Abdullah ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
    ১৯৮৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৬ সালের ৩১ শে আগস্ট পর্যন্ত কাশ্মীরে ইন্ডিয়ান আর্মির নির্যাতনের একটি পরিসংখ্যান... নিহত কাশ্মীরের নাগরিক - ৯৪,৫০৪ জন থানা হেফাজতে মৃত্যু - ৭,০৬২ জন ঘরবাড়ি ধ্বংস - ১,০৬,২৬১ টি বিধবা হয়েছে - ২২,৮২৪ জন নারী এতিম হয়েছে - ১,০৭,৫৮৬ জন শিশু ইন্ডিয়ান আর্মি কর্তৃক গণধর্ষণের ঘটনা - ১০,৪৩৩ টি আরেকটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন।কাশ্মীর পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী সামরিক সৈন্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এলাকা।এই ক্ষুদ্র এলাকার বিদ্রোহ দমনে রাখতে ইন্ডিয়া মোতায়েন করেছে প্রায় দশ লক্ষ সেনাসদস্য। কাশ্মীরিরা স্বাধীনতার জন্য যুগের পর যুগ জীবন দিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের বিদ্রোহী না বলে স্বাধীনতাকামী বলুন
    Total Reply(0) Reply
  • প্রজম্মের ভাবনা ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:১৭ এএম says : 0
    ভারতীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা কামিদের চরম প্রতিশোধ
    Total Reply(0) Reply
  • আজিজুর রহমান ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:২০ এএম says : 0
    আমার মতে কাশ্মীরকে স্বাধীনতা দিলে এই নিত্য দিনের প্রাণঞড়া বন্ধ হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Avijeet das ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:৫০ এএম says : 0
    Indian defense is one of the most worst level.Because 7,00,000 (seven lac) almost solders are only kasmir over there.And also moderest technologies using to defend these border area.How can be it possible these terrorists entryway was so easy that they eyewash solders.And 200kg explosive they blast firing over solders and they didnot see them.2016 in uri attacks 18 solders were killed.Now the biggest attack in the history of kasmir.This situation goverment and opposition blame each other.one think they always blame pakistan is responsible which is hoax.Without investigate they should not do this.Another time these brave soldiers lost their valuable life for there country.Again Quesion about the indian defence?.
    Total Reply(0) Reply
  • Habib Rahman ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১১:১৯ এএম says : 0
    Those Kashmir fighting against Indian illegal occupation they are freedom fighter. they are most oppressor by Indian government force.
    Total Reply(0) Reply
  • Ranadip ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৯:৪৬ পিএম says : 0
    Bad
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাশ্মীর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ