Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে জোট গড়ে ভোটের ঘোষণা বিরোধীদের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’কে হারাতে জাতীয় স্তরে জোট গড়ছে বিরোধীরা। গত বুধবার রাতে নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পরে এ কথা ঘোষণা করেছেন ভারতের বিরোধী দলগুলোর শীর্ষনেতারা। তারা জানিয়েছেন, এজন্য অভিন্ন কর্মসূচিও তৈরি করা হবে।
বিরোধী দলগুলি এত দিন বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যস্তরেই জোট তৈরির চেষ্টা করছিল। এবার সেখান থেকে বেশ কয়েক ধাপ এগোলেন রাহুল গান্ধী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-শরদ পওয়ারেরা। দিল্লিতে পওয়ারের বাড়িতে বৈঠক শেষ করে রাহুল, মমতা, অরবিন্দ কেজরীওয়াল, চন্দ্রবাবু নায়ডু, ফারুক আবদুল্লাহরা একযোগে ঘোষণা করেন, জাতীয় স্তরে জোট তৈরি করেই তারা ভোটে যাবেন।
যার অর্থ, ভোটের আগেই জাতীয় স্তরে মহাজোট তৈরি হবে। সেই মহাজোট ক্ষমতায় এলে কী করবে, তার জন্য আগাম একটি অভিন্ন কর্মসূচিও তৈরি হবে। পওয়ারের ঘোষণা, এই কাজটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কংগ্রেস সভাপতি রাহুলকে। দিন পনেরোর মধ্যেই এ নিয়ে ফের বৈঠকে বসবেন বিরোধী নেতারা। ২৬ ফেব্রুয়ারি অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী অমরাবতীতে ফের বৈঠক হতে পারে। বৈঠকের পর ‘মোদী হটাও, দেশ বাঁচাও’ স্লোগান তুলে মমতা বলেন, ‘আমরা জাতীয় স্তরে একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের অভিন্ন কর্মসূচি তৈরি হবে। প্রাক-নির্বাচনী জোট হবে।’
ঠিক কী ভাবে এই মহাজোটের সমীকরণ তৈরি হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এটি রাহুলের মাস্টারস্ট্রোক। এর ফলে রাজ্য স্তরে বিভিন্ন বিরোধী দলের কলহ যাতে জাতীয় স্তরে ছায়া ফেলতে না পারে, তা নিশ্চিত করা যাবে। রাহুল বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে মোদী সরকার, বিজেপি এবং আরএসএসের হামলা থেকে রক্ষা করা।’ তবে এসপি-র কোনও নেতা এই বৈঠকে ছিলেন না। বিএসপি নেতা সতীশ মিশ্র ছিলেন। তবে দলে তিনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক নন।
এ ছাড়াও প্রশ্ন, জাতীয় স্তরে জোট হলেই যে রাজ্যে আসন সমঝোতা হবে, তার নিশ্চয়তা কী। যেমন, বৈঠকে এই প্রথম রাহুল ও কেজরীওয়াল একসঙ্গে এলেও দিল্লিতে কংগ্রেস-আপ সমযোতা হয়নি। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গেও কংগ্রেস-তৃণমূলের জোটে প্রদেশ কংগ্রেস নেতারাই বাধা। রাহুল নিজেই বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের মধ্যে রাজ্যে প্রতিযোগিতা করতেই পারি। দিল্লি ও বাংলায় কী হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।’ মমতা অবশ্য আগেই বলে রেখেছেন, যেখানে যার শক্তি বেশি, সেখানে সেই দলই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে।
গত ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে যে সমাবেশ হয়েছিল, দিল্লীতে তার দ্বিতীয় পর্বের আয়োজন করেছিলেন কেজরীওয়াল। মঞ্চ থেকে কংগ্রেসের আনন্দ শর্মা মমতার ভ‚য়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি ৪০ বছর ধরে চিনি। তিনি আমার বোনের মতো। তার নেতৃত্বে ব্রিগেড সম্মেলন এক বিরাট জোটের ইঙ্গিত দিয়েছে।’ মমতাও জানিয়ে দেন, রাজ্যে লড়াই জারি থাকলেও কেন্দ্রে বিজেপি-কে হটানোর স্বার্থে কংগ্রেস এবং সিপিএমের সঙ্গে মিলে যুদ্ধ করতে তিনি প্রস্তুত। কলকাতার সাম্প্রতিক সিবিআই কান্ডের কথা উল্লেখ করে তার বক্তব্য, ‘আজ এই লোকসভার শেষ দিন। আর বিশ দিনের মধ্যে ভোট ঘোষণা হয়ে যাবে। ভয় দেখানো বন্ধ।’ আর তার আগে? মমতার ঘোষণা, ‘আমাকে যদি খুন করে বা জেলে ভরে ভরুক। আমার বাড়ি সিবিআই পাঠাতে চাইলে পাঠাক। আমি রান্না করে রাখব।’
বক্তৃতায় উপস্থিত প্রায় সব নেতার নাম উল্লেখ করলেও মমতা সুকৌশলে উচ্চারণ করেননি কংগ্রেস প্রতিনিধির নাম। কংগ্রেস এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ গোপন না-রেখেই বলেন, ‘আমার রাজ্যে সিপিএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই করার অভ্যাস আমার রয়েছে। ওদের সঙ্গে রাজ্যে জোট করে লাভ হয় না। কারণ, ওদের ভোট ওরা আমাদের হাতে তুলে দেয় না। ওরা (কংগ্রেস-সিপিএম) যদি বেশি লড়াই করে, আমরা ৪২টি আসনই পাব!’ কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এর পরেই তিনি বলেন, ‘বড় কাজের জন্য ছোট ছোট বলিদান দিতেই হয়। মোদীকে হটিয়ে দেশ বাঁচাতে রাজ্যে (কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গে) লড়াই থাকলেও জাতীয় স্তরে একসাথে লড়ব।’ সূত্র: ইকোনমিক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ