Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষমতাসীন মহাজোটর হেভিওয়েট নেতৃবৃন্দের অনুসারীদের হতাশা ক্রমশ বাড়ছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:০৫ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষমতাসীন মহাজোটের মূল শরিক দলের হেভিওয়েট নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীদের হতাশা কাটছে না। মন্ত্রীসভায় ঠাঁই না মেলার পড়ে সর্বশেষ জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ পদটির জন্যও যে আশা ছিল কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতার, তাও হতাশায় পর্যবসিত হয়েছে ইতোমধ্যেই। উপরন্তু প্রথমবারের মত সংসদ ভবনে প্রবেশ করেই বরিশাল ও পিরোজপুর সদরের দুই এমপি মন্ত্রী পরিষদে স্থান কওে নেয়ায় অনেক সিনিয়র নেতার অনুসারীগনও চরমভাবে হতাশ হয়েছেন। তবে এবারের মন্ত্রী পরিষদে দল ও মহাজোটের অনেক দাপুটে নেতা ও সাবেক মন্ত্রীকে ঠাঁই না দেয়ায় অবাক হলেও তাকে প্রধানমন্ত্রীর দুরদর্শীতা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যকেবক্ষক সহ দল নিরপেক্ষ সাধারণ মানুষও। 

তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের মতে, এতদিন আওয়ামী লীগ সহ মহাজোটের যেসব নেতৃবৃন্দ এবং তাদের অনুসারীগন দল ও জোটের মন্ত্রীসভায় অনিবার্য ভাবতেন, তাদের বর্তমান অবস্থান দক্ষিণাঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্যতা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি এর ফলে পুরনো ঐসব নেতৃবৃন্দের কর্মী বাহিনী কিছুটা হোচট খেয়ে নিজেদের সামলে রাখবেন বলেও আশাবাদী মহলটি। তবে বরিশাল সদর অসনের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফরুক শামিম শপথ নেয়ার পরে এ পর্যন্ত তিনবার এ নগরীতে আসার সময়ই তার কর্মী বাহিনী ছোট বড় মোটর সাইকেলের বহর নিয়ে তাকে নগরীতে নিয়ে এসেছেন। গত ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আমীর হোসেন আমু একবারই নিজ নির্বাচনী এলাকায় আসার সময় প্রায় ৩৬ কিলোমিটার দূরে বরিশাল বিমান বন্দর থেকে বিশাল মোটর বাইকের বহর তাকে ঝালকাঠীতে নিয়ে যায়।
এবারের মন্ত্রীসভায় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আমীর হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমদ ছাড়াও সাবেক চীফ হুইপ আবুল হসনাত আবদুল্লাহ ও আ.স.ম ফিরোজ-এর ঠাই না মেলায় তাদের ঘনিষ্ঠজন ছাড়াও অনুসারীগন যথেষ্ঠ হতাশায় ভুগতে শুরু করেছেন ইতোমধ্যে। হতাশা ভর করেছে রাশেদ খান মেননের অনুসারীদের মধ্যেও। তবে মেনন সংসদীয় কমিটির দায়িত্ব পাওয়ায় কার জন্য ‘ দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো’র অবস্থা বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই না মেলার পরে চীফ হুইপ-এর পদটির জন্য আ.স.ম ফিরোজ ও আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে নিয়ে যে ক্ষীণ আশা ছিল, তাও মিলিয়ে যাওয়ায় চরম হতাশায় ডুবেছেন তাদের অনুসারীগন।
তবে আ.স.ম ফিরোজ-এর গাড়ীতে এবার পতাকা না ওঠায় এলাকায় তার নিজ দলীয় ব্যক্তিগত প্রতিপক্ষ যথেষ্ঠ খুশি হয়েছেন। স্বÑস্ব এলাকায় আমীর হোসেন আমু ও তোফোয়েল আহমদের দূর্বল প্রতিপক্ষরা খুশি হলেও বেশী খুশি হয়েছেন তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। এমনকি ভোলার চরফ্যাসনের আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবেরও এবার মন্ত্রী পরিষদে ঠাঁই না মেলায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষগন যথেষ্ঠ খুশি। তবে জ্যাকব-এর সংসদীয় কমিটির প্রধান হওয়াকে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে তার ওপর সন্তুষ্টি হিসেবেও দেখছেন অনেকে।
একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচন হলে অতীতের দাপুটে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক নেতৃবৃন্দেরই ২০০১-এর নির্বাচনী ফলাফল বরণ করতে হত বলে নিশ্চিত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
পাশাপাশি বরিশাল সদর আসনে সদ্য বিদায়ী এমপি জেবুন্নেসা আফরোজও ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত আশায় বুক বেঁধেছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য। কিন্তু সেখানেও তাকে হতাশ হতে হয়েছে। ফলে বরিশাল বিভাগীয় সদরে তার অনুসারীগন এখন কান্ডারীবিহীন। ২০১৪-এর ৫ ডিসেম্বর প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় শওকত হোসেন হিরন প্রথমবারের মত সংসদ ভবনে প্রবেশ করলেও পনের মাসের মাথায়ই তার অকাল মৃত্যু ঘটে। ফলে উপ-নির্বাচনে স্বামীর শূণ্য আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিরোধী দলহীন নির্বাচনে এমপি হন জেবুন্নেসা। কিন্তু ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে দলের জেলা ও মহানগর পর্যায়ের জোরালো সমর্থন থাকলেও সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে তার মনোনয়ন মেলেনি। এরপরে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নের শেষ আশাটুকুও মিলিয়ে যাওয়ায় জেবুন্নেসা আফরোজের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়েই সংশয় সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে। ১৩-২-২০১৯।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ