Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গোল্ডেন-বুট দৌড়ে মেসিকে প্রায় ধরে ফেললেন রোনালদো

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১১:৩০ এএম

বোদ্ধাদের ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করে ঠিকই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসির সঙ্গে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা জমিয়ে তুললেন ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটের দৌড়ে প্রতিদ্বন্দ্বী মেসিকে প্রায় ধরে ফেললেন জুভেন্টাসের পর্তুগিজ তারকা। এই পুরস্কারের দৌড়ে মেসির চেয়ে এখন মাত্র ৩ গোল বা ৬ পয়েন্টে পিছিয়ে রোনালদো।

সেই ২০০৮ সাল থেকেই ‘বিশ্বসেরা’র দ্বৈরথটা হয়ে আসছে মেসি ও রোনালদোর মধ্যে। ২০০৯ সালে রোনালদো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেওয়ার পর তাদের ব্যক্তিগত দ্বৈরথটা পায় অন্যমাত্রা। একই লিগে খেলায় দ্বৈরথটা হয়ে উঠে সরাসরি।

কিন্তু গত জুলাইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে জুভেন্টাসে পাড়ি জামান ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। তার এই দলবদল একটা শঙ্কা মিশ্রিত প্রশ্নেরই জন্ম দিয়েছে, তবে কি লিওনেল মেসির সঙ্গে রোনালদোর ব্যক্তিগত দ্বৈরথটার যবনিকা ঘটল। বয়স ৩৪ ছুঁইছুঁই। এই বয়সে ইতালির ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ ফুটবলে রোনালদো সুবিধা করতে পারবেন না ধরে নিয়েই এমন শঙ্কার কথা বলেন ফুটবল বোদ্ধারা।

মৌসুমের শুরুতে রোনালদোর পারফরম্যান্সও বোদ্ধাদের এই ধারণাকে আরও শক্ত ভিত্তি দেয়! নতুন ক্লাব, নতুন লিগ, নতুন সব সতীর্থ, নতুন পরিবেশ, নতুন কোচ—এতো সব নতুনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরুতে একটু সংগ্রামই করতে হয়েছে পর্তুগিজ সুপারস্টারকে। জুভেন্টাসের জার্সি গায়ে ইতালিয়ান সিরি আ’য় নিজের প্রথম ৩ ম্যাচেই রোনালদোকে থাকতে হয় গোল-হীন।

মানে ৪ ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ। অথচ ততো সময়ে বার্সেলোনার হয়ে মেসি স্পেনের লা লিগায় করে ফেলেছেন ৪ গোল! শুরুতেই ৪-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া, দল পাল্টে ইতালির রক্ষণাত্মক ফুটবলে যাওয়া রোনালদো কিছুতেই মেসির সঙ্গে পেরে উঠবেন না, বোদ্ধাদের এই বিশ্বাস তখন পাক্কা!

কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বোদ্ধাদের সেই পাক্কা বিশ্বাসকেও নড়বড়ে করে দিয়েছেন রোনালদো। আপন মহিমার বাতি জ্বেলে ৫ বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ঠিকই নিজেকে তুলে এনেছেন মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। রোববার মেসি-রোনালদো দুজনেই নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। আর রোববারের এই দ্বৈরথে রোনালদোই জয়ী। সেদিন মেসি গোল পাননি। অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের সঙ্গে জিততেও পারেনি তার দল বার্সেলোনা। ফিরতে হয়েছে গোলশূন্য ড্র করে।

অন্যদিকে রোনালদো নিজে এক গোল করেছেন। সতীর্থকে দিয়ে আরেকটি করিয়েছেন। রোনালদো জাদুতে সেদিন তার দল জুভেন্টাসও জিতেছে ৩-০ গোলে। রোববারের এই গোলটি ছিল মৌসুমে রোনালদোর ১৮তম লিগ গোল। যে সংখ্যাটা গোল্ডেন বুটের দৌড়ে তাকে নিয়ে এসেছে তিন নম্বরে। তবে যৌথভাবে দুই নম্বরেও বলতে পারেন।

কারণ, বর্তমানে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে দুই নম্বরে থাকা পিএসজির ফরাসি বিস্ময়বালক কিলিয়ান এমবাপেরও লিগ গোল সংখ্যা ১৮টি। বুঝতেই পারছেন, তালিকার সবার ওপরে মেসি। মৌসুমে যিনি এরই মধ্যে করে ফেলেছেন ২১ গোল। তবে মেসির জন্য শঙ্কার, পেছন ধেয়ে এসে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো এখন তার ঘাড়ের উপর তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলছেন। পিছিয়ে আছেন মাত্র ৩ গোলে।

এই তো গত নভেম্বরেও ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটের দৌড়ে থাকা খেলোয়াড় তালিকায় ছিল একটা অবাক করা ব্যাপার। সবাইকে বিস্মিত করে দৌড়ে সবার উপরে ছিলেন অখ্যাত লিলিউ। পুরো নাম এলিনটন অ্যান্তোনিও কস্তা মারিয়াস। তবে এস্তোনিয়ান ক্লাব নম্মে কালজুতে খেলা ব্রাজিলিয়ান এই অখ্যাত ফুটবলারকে সবাই লিলিউ বলেই ডাকে। এই নামেই পরিচিতি তিনি।

নম্মে কালজুর হয়ে এস্তোনিয়ার শীর্ষ লিগে মৌসুমে ৩১ গোল করেছেন তিনি। গোল সংখ্যায় এখনো তিনি ইউরোপে সবার ওপরে। কিন্তু কম প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলে এস্তানিয়ান লিগে প্রতি গোলের জন্য বরাদ্দ মাত্র ১ পয়েন্ট। ফলে লিলিউ অর্জনও করেন ঠিক ৩১ পয়েন্ট।

বিপরীতে স্প্যানিশ লা লিগা, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, জার্মান বুন্দেসলিগা, ইতালিয়ান সিরি আ, ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান—ইউরোপের এই ৫টি লিগেই প্রতি গোলের জন্য বরাদ্দ ২ পয়েন্ট করে। ফলে ২১ গোল করেও মেসির অর্জন ৪২ পয়েন্ট। এমবাপে, রোনালদোদের অর্জন সমান ৩৬ পয়েন্ট করে।

সমান ৩৪ পয়েন্ট করে অর্জন মোট তিনজনের। মানে পিএসজির উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড এডিসন কাভানি, ম্যানচেস্টার সিটির আর্জেন্টাইন তারকা সার্জিও আগুয়েরো ও লিভারপুলের মিশরীয় ফরোয়ার্ড মোহামেদ সালাহ—তিনজনেই নিজ নিজ লিগে করেছেন সমান ১৭টি করে গোল।

এই তালিকাই বলে দিচ্ছে, এবারের গোল্ডেন বুটের দ্বৈরথটা ভীষণ জমে উঠেছে। তবে মত পাল্টে এখন বোদ্ধাদের ধারণা, অন্যবারের মতো এবারও শেষ পর্যন্ত গোল্ডেন বুটের লড়াইটা দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসি-রোনালদোর মধ্যেই হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ