নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বার্সেলোনা সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিলো ২০১৫ সালে। এর মাঝে ঘরোয়া লিগের অনেকগুলো শিরোপা জিতলেও জেতা হয়নি মর্যাদাপূর্ণ শিরোপাটি। অন্যদিকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ সর্বশেষ ৫ বছরে ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে। সে হিসেবে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে বার্সেলোনা। বর্তমান সময়ে ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জেতার জন্য গত বছর থেকে খেলোয়াড় কেনাবেচায় বেশ পরিবর্তন এনেছিলো বার্সেলোনা।
বার্সেলোনা সবসময় দল গঠনের ক্ষেত্রে একাডেমির খেলোয়াড়দের গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আগের মতো একাডেমির উপর নির্ভরশীল হচ্ছে না দলটি। ইউরোপ কিংবা লাতিন আমেরিকার উঠতি তারকাদের দলে ভিড়িয়ে শক্তিশালী দল গঠনের দিকে ঝুঁকেছেন দলের কর্তারা। গত এক বছরে বার্সেলোনা খেলোয়াড় কেনার পেছনে ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ডে অধিক অর্থ ব্যয় করেছে। এই অর্থ দিয়ে তারা দলে ভিড়িয়েছে বিভিন্ন পজিশনে খেলা সময়ের সেরা কয়েকজন তারকাকে।
যদিও এ সকল তারকা ফুটবলারদের দলে নেয়ার কারণে কাতালুনিয়ার সমর্থকরা বিরোধিতা করেছিলো। কারণ এদের আগমনে লা মাসিয়া একাডেমির ফুটবলাররা গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। অন্যদিকে মাত্র এক বছরে এত অর্থ ব্যয় করে খেলোয়াড়দের থেকে বার্সেলোনা কী পেয়েছে তাও খতিয়ে দেখার সময় এসেছে। গত এক বছরে বার্সেলোনায় যোগ দেয়া ৫ জন ফুটবলার এবং তাদের দলে নেয়ায় বার্সা কতটুকু উপকৃত হয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১. ফিলিপে কৌতিনহো
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ১৪২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে লিভারপুল থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেন ব্রাজিলিয়ান লেফট উইঙ্গার ফিলিপে কৌতিনহো। এর আগে কখনো বার্সেলোনা এত দাম দিয়ে কোনো খেলোয়াড়কে কেনেনি। সে হিসেবে কৌতিনহো এখন পর্যন্ত বার্সেলোনার হয়ে খেলা সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়। মূলত গত মৌসুমে নেইমার বার্সেলোনা ছাড়ায় কৌতিনহোকে দলে ভিড়িয়েছিলো বার্সেলোনা।
২০১৮ সালের জানুয়ারি তথা মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে বার্সেলোনায় যোগ দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে পারেননি কৌতিনহো। যদিও লা লিগা এবং কোপা দেলরেতে দারুণ পারফরম্যান্স করেছিলেন তিনি। লা লিগা এবং কোপা দেলরে মিলিয়ে ২২ ম্যাচে ১০ গোল এবং ৬টি অ্যাসিস্ট করেছিলেন কৌতিনহো। যার ফলে শিরোপা দুটি জিতেছিলো বার্সেলোনা।
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত সকল প্রতিযোগিতায় টিকে রয়েছে বার্সেলোনা। কৌতিনহোও রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। আর এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত ১৮ ম্যাচ খেলে ৫ গোল এবং ৪টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। তার পারফরম্যান্স এবং দলে তার গুরুত্ব বিবেচনায় তিনি বার্সেলোনার জন্য একজন আদর্শ খেলোয়াড় বলা যায়। তাকে দলে নিতে গিয়ে বার্সেলোনা যে বিশাল অর্থ ব্যয় করেছেন তা ইতোমধ্যেই পুষিয়ে নিয়েছে দলটি।
২. আর্থার মেলো
গত বছরের মার্চে আর্থারকে কেনার জন্য গ্রেমিওর সঙ্গে ৩৮ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি করেছিলো বার্সেলোনা। চুক্তি অনুযায়ী এ মৌসুমের শুরুতেই বার্সেলোনায় পাড়ি জমান এ ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। জাভি, ইনিয়েস্তার বিদায়ে বার্সেলোনার মাঝমাঠ যখন মৃতপ্রায় ঠিক তখনি তাকে দলে নিয়েছিলো কর্তৃপক্ষ।
চলতি মৌসুমে ৮ নম্বর জার্সি পরেই মাতাচ্ছেন ২২ বছর বয়সী আর্থার। তার মাঝে জাভি-ইনিয়েস্তার ছাঁপ পাওয়া যায়। বলতে গেলে দুজনের মিশ্র প্রতিভার অধিকারী তিনি। আর্থারের পাসের সঙ্গে জাভির সেই পুরোনো পাসগুলোর মিল পাওয়া যায়।
এই মৌসুমে এখন অবধি ১৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। প্রতি ম্যাচেই অসাধারণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে মন জয় করে নিচ্ছেন সমর্থকদের। বয়স কম হওয়ার তাকে ঘিরে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথা ভাবছে বার্সেলোনা। সে হিসেবে বলা যায় আর্থার বার্সার জন্য একজন সময়োপযোগী খেলোয়াড়।
৩. ক্লিমেন্ট লেংলেট
গত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ফরাসি ডিফেন্ডার ক্লিমেন্ট লেংলেটকে সেভিয়া থেকে দলে ভিড়িয়েছিলো বার্সেলোনা। ২৩ বছর বয়সী এ তারকাকে দলে নিতে বার্সেলোনা ব্যয় করেছিলো প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ইউরো। প্রথমদিকে তাকে দলে নেয়ায় বেশ সমালোচিত হন কোচ ভালভার্দে। যদিও পরবর্তীতে পারফরম্যান্স ও দলে তার গুরুত্ব ভালোভাবেই বুঝিয়ে দেন লেংলেট।
চলতি মৌসুমে স্বদেশী উমতিতি এবং তৃতীয় পছন্দের ডিফেন্ডার ভার্মালেন দীর্ঘদিন যাবত ইনজুরিতে ভুগছেন। এই দুইজনের অনুপস্থিতিতে, জেরার্ড পিকের পাশে থেকে দলের রক্ষণভাগকে আগলে রেখেছেন লেংলেট। উমতিতির অনুপস্থিতিতে, লেংলেটের পারফরম্যান্স নৈপুণ্যে বার্সেলোনা এখন পর্যন্ত ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় টিকে রয়েছে। সে হিসেবে বলা যায় তাকে দলে নেয়ায় বেশ উপকৃত হয়েছে বার্সেলোনা।
৪. আরতুরো ভিদাল
গত গ্রীষ্মকালীন দলবদলে বার্সেলোনায় যোগ দিয়েছিলেন ৩১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার আরতুরো ভিদাল। এর আগে জুভেন্টাস এবং বায়ার্ন মিউনিখে বেশ আলো ছড়িয়েছিলেন তিনি। জুভেন্টাসের হয়ে ভিদাল খেলেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। সে হিসেবে তার বয়সের কথা না ভেবে, দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতেই তাকে দলে নিয়েছিলেন কোচ ভালভার্দে।
যদিও বার্সেলোনার সমর্থকরা ভিদালের আগমন সহজভাবে নেয়নি। টিকিটাকার সঙ্গে তার খেলার ধরন না মিলায় অনেকে তখন সমালোচনা করেছিলো। ভিদাল একজন আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার। সে হিসেবে বার্সেলোনার পাসিং ফুটবলে তাকে মানানসই মনে না হওয়ারই কথা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পাসিং ফুটবল থেকেও আক্রমণাত্মক ফুটবল বেশি কাজে দেয়। অন্যদিকে ভিদালের রয়েছে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। সে জন্যেই হয়তো বার্সেলোনা তাকে দলে নিয়েছিলো। লিগের ম্যাচগুলোতে নিয়মিত না হলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে নিয়মিত খেলছেন ভিদাল।
৫. ম্যালকম
গত বছরের গ্রীষ্মকালীন দলবদলে রোমার সাথে পাল্লা দিয়ে ২১ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ম্যালকমকে দলে ভিড়িয়েছিলো বার্সেলোনা। যদিও তাকে দলে নেয়া নিয়ে কোচ এবং ম্যানেজমেন্টের মধ্যে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিলো। ম্যালকমের খেলার ধরণ যেমন বার্সেলোনার সঙ্গে মানানসই নয়, তেমনি তার জায়গায় ইতোমধ্যেই একাধিক খেলোয়াড় রয়েছে। যার কারণে তাকে কেনা একপ্রকার অর্থের অপচয় হিসেবেই মনে করছেন সমর্থকরা।
ডেম্বেলে, মেসি এবং কৌতিনহোর কারণে এই মৌসুমে এখন পর্যন্ত নিয়মিত খেলার সুযোগ পাচ্ছেন না ম্যালকম। কোপা দেলরেতে কয়েক ম্যাচ নিয়মিত খেললেও লা লিগায় অল্প কয়েকটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
যখনি সুযোগ পেয়েছেন তখনি নিজের জাত চিনিয়েছেন ম্যালকম। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বের ম্যাচে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের জন্য বেশ সুনাম কুড়িয়েছিলেন তিনি। তবে এই বয়সে নিয়মিত খেলার সুযোগ না পাওয়ায় তার ক্যারিয়ার হুমকির সম্মুখীন। সে কারণে কিছুদিন আগেও তিনি বার্সেলোনা ছাড়বেন বলে গুঞ্জন রটেছিলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।